তবে সাধারণ মানুষ এসব ভালো চোখে দেখছে না। তাদের দাবি, মানুষ নেতাদের কাছ থেকে ভবিষ্যতের পরিকল্পনার কথা জানতে চায়।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে খুলনার রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের উত্তাপ বিরাজ করছে। নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছেন। সময় যত এগিয়ে আসছে নির্বাচনী ময়দানে উত্তাপ ততই বাড়ছে। সবমিলিয়ে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে নির্বাচনী আমেজ।
প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচন হওয়ায় চায়ের টেবিল থেকে শুরু করে রাস্তা-ঘাট, অফিস-আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান; এমনকি ঘরে ঘরেও চলছে ভিন্নতর নির্বাচন বিশ্লেষণ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগ এনে মেয়র পদে উভয় প্রার্থীর সমর্থকরা ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একে অপরের বিরুদ্ধে সমালোচনা করছেন। তবে হলফনামার তথ্য গোপনের বিভ্রান্তি দূর করতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উভয় প্রার্থী। দিয়েছেন বিবৃতিও। এমনকি স্থানীয় নির্বাচন কমিশনারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রধান এই দুই দলের প্রার্থী ও সমর্থকরা।
এদিকে খুসিক নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা। মেয়র প্রার্থীরা নিজ নিজ দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করে প্রচারণার কাজে নামানোর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছেন। সকাল-সন্ধ্যা চলছে দলীয় কর্মীদের নিয়ে সাংগঠনিক সভা, ওয়ার্ড পর্যায়ের বর্ধিত সভা ও শুভেচ্ছা বিনিময়।
আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বাংলানিউজকে বলেন, মিথ্যাচার, অসত্য বানোয়াট ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালিয়ে আওয়ামী লীগের বিজয় ঠেকাতে চেষ্টা করছে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ও তার সমর্থকরা। তবে আমাদের বিশ্বাস খুলনার মানুষ নগরীর উন্নয়নে নৌকায় ভোট দেবেন।
তবে এ বিষয় অস্বীকার করে উল্টো আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও তার সমর্থকরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
তিনি বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন সফল করতে নির্বাচনে বিজয়ের কোনো বিকল্প নেই। খুলনার মানুষ সবসময়ই বিএনপি ও ধানের শীষ প্রতীকে আস্থা রেখেছেন। এবারও রাখবেন বলে আশা করেন তিনি।
আগামী ১৫ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে খুসিক নির্বাচন। এ নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ১৮২ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৫৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৬ জন পুরুষ এবং ২ হাজার ৪৪ হাজার ১০৭ জন নারী।
৫ মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দলের মহানগর শাখার সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী দলের মহানগর সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু, জাতীয় পার্টি মনোনীত শফিকুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত অধ্যক্ষ মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি মনোনীত দলের মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু।
নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, মেয়র প্রার্থী ৫ জন হলেও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে। যে কারণে এরই মধ্যে নির্বাচনে শরিকদের নিয়ে মাঠে নেমেছে বড় দুই দল। ১৪ দলকে নিয়ে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ ও সাংগঠনিক কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। অনুরূপভাবে বিএনপির সাথে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২ , ২০১৮
এমআরএম/এমএ