ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

বিএনপিও সেনা মোতায়েন করেনি, নিহত হয়েছিল ১১৭ জন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৮
বিএনপিও সেনা মোতায়েন করেনি, নিহত হয়েছিল ১১৭ জন গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা: ২০০৩ সালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ছিলেন আবু সাঈদ। সে সময় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের এক মাস আগে থেকে তিনি সরকারকে বলে আসছিলেন-আমার প্রয়োজন আছে, সেনাবাহিনী দেবেন। কিন্তু সরকার সেনাবাহিনী দেয়নি। ওই নির্বাচনে সহিংসতায় ১১৭ জন নিহত হয়েছিল। সে সময় ক্ষমতায় ছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।

১/১১ সময়কার নির্বাচন কমিশনার ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন সোমবার (২৩ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব তথ্য জানান।  

গোলটেবিল বৈঠকটি আয়োজন করে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন।

তিনি বলেন, যে পার্টি বিরোধী দলে থাকে, সে পার্টি নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন নিয়ে বিরাট ভূমিকার মধ্যে চলে যায়। ২০০৩ সালের ইউপি নির্বাচনে সেনা চেয়ে সিইসি পাননি। আবার ১১৭ জন মানুষ মারা গেলে তাকে ইমপিচমেন্টের (অভিশংসন) জন্য জাতীয় সংসদে আলোচনা হয়। সেই নির্বাচন হয়েছিল রক্তাক্ত নির্বাচন। আমি বলছি না পত্র-পত্রিকাতেও লেখা হয়। এমনকি সিইসি আবু সাঈদ আগেই বলেছিলেন-এই নির্বাচনে রক্তপাত হবে। এর জন্য দায়ী থাকবে সরকার।
 
তিনি বলেন, আমি জানি না সেনাবাহিনী নিয়ে বিরোধী দল, সরকারি দলের কি সমস্যা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী না দিলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে আমি মনে করি না। কেননা, ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্রে একদিনেই ভোটগ্রহণ করা হয়। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে এত বড় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা ও নিরাপত্তা দেওয়া দুরূহ। নির্বাচনী বাজেটের ৭৫ শতাংশ ব্যয় করা হয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পেছনে। তাই নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা উচিৎ।
 
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ভোট ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনার সুপারিশও করেন সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স আগের রাতে কেন্দ্রে না পাঠিয়ে, ভোটের দিন সকালে পাঠাতে হবে। আর ভোটের সময় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টার পরিবর্তে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত করা উচিৎ। কেননা, আমাদের দেশে ভোটের আগের রাতে ব্যালট পেপারে সিল মারা একটা ট্রেন্ড হয়ে গেছে। এটা বন্ধ করতে হলে দিনের বেলায় ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স বিতরণ করতে হবে।
 
সংগঠনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, নির্বাহী সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ, বিলুপ্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ’র সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
 
এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, সিটি নির্বাচনে মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের প্রচার কাজে সুযোগ দেওয়া ঠিক হবে না। সেনা মোতয়েনের জন্য বিএনপি দাবি জানালেও নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা নেই। যদিও সংবিধানে সেনা মোতায়েনের ক্ষমতা ইসির রয়েছে।
 
ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, তৃণমূলে সংসদীয় পদ্ধতির স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন। এছাড়া স্থানীয় সরকারগুলোর মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক সৃষ্টির জন্য একটি অভিন্ন আইনি কাঠামো প্রণয়ন করা দরকার। এছাড়া স্থানীয় সরকারের জনবল সমস্যা সমাধানে ‘স্থানীয় সরকার ক্যাডার’ নামে আলাদা সার্ভিস করতে হবে।
 
খালেকুজ্জামান বলেন, আমাদের সংবিধানে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন গঠন হবে আইনি কাঠামোর ভিত্তিতে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠন করা হচ্ছে সার্চ কমিটির মাধ্যমে। কাজেই এর কোনো আইনি ভিত্তিই নেই। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের আইনি ভিত্তি দরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৮
ইইউডি/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।