খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন।
দলীয় কার্যালয়ে নির্বাচনের একদিন আগে সোমবার (১৪ মে) দুপুরে এ প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
এ সময় তিনি বলেন, দলের একজন অসুস্থ নেতাকে হাতকড়া পরিয়ে আবার ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে। এমনকি আমার পরিবারও পুলিশের হিংস্রতা থেকে রেহাই পায়নি। এসআই অচিন্ত ও বিপ্লবের নেতৃত্বে তিন গাড়ি পুলিশ আমার বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী, ভাই-বোন ও স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও ভয়ভীতি দেখিয়েছে। আমার ভাই কারণ জানতে চাইলে হুংকার দিয়ে পুলিশ বলেছে, ‘কথা বললেই কল্লা ছিড়ে ফেলবো’।
তিনি এ ধরনের আচরণের তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করে প্রশ্ন রাখেন- আওয়ামী লীগ একটি সিটি নির্বাচন করায়ত্ব করতে কোথায় যাচ্ছে? যেকোন মূল্যে সরকারকে বিজয়ী হতেই হবে? আওয়ামী লীগের হিংস্র চেহারা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতেই বিএনপি নির্বাচনের মাঠে থাকবে।
মঞ্জু বলেন, সরকার কেসিসিতে ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ করছে। পুলিশের নেতৃত্বে রাতেই ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভরার ষড়যন্ত্র চলছে। একইসঙ্গে পুলিশ বিএনপির ভোট ব্যাংক এলাকায় ব্লক রেইড’র নামে হানা দেওয়ারও পরিকল্পনা করেছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ বহিরাগতদের এনে শহরের হোটেল, রেস্ট হাউজ ও আবাসিক কোয়ার্টারসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাগ ভাগ করে রেখেছে। এমনকি পুলিশের নামেও বিভিন্ন হোটেল বুকিং দেওয়া হয়েছে। ভোটের দিন এসব বহিরাগতরা বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ঢুকে নিজেরা সংঘর্ষে লিপ্ত হবে। এরপর ভয়ে ভোটাররা কেন্দ্র ত্যাগ করলে তারা ব্যালট কেটে বাক্সে ঢুকাবে।
নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, সরকার এবং নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারে কি-না- এটি দেখতেই বিএনপি কেসিসি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার কারামুক্তি এবং জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলনের অংশ হিসেবেই বিএনপি মাঠে রয়েছে। কিন্তু বিগত সাড়ে নয় বছরে প্রমাণিত হয়েছে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। যার সর্বশেষ আঘাত সরকার এবং পুলিশের হিংস্রতায় প্রতিফলিত হয়েছে।
নজরুল ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ শহরে বিপুল অঙ্কের কালো টাকা ছড়িয়েছে। বিশেষ করে বস্তি ও চর এলাকায় তারা ভোট কেনার চেষ্টা করছে। এভাবে নির্বাচনকে পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করছে তারা। রোববার (১৩ মে) আমাকে খালিশপুরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারীরা মিছিল করেছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট অ্যাডভাকেট এস এম শফিকুল আলম মনা, পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, সদস্য সচিব আমীর এজাজ খান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মুজিবর রহমান, সাবেক এমপি কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, সাবেক এমপি সৈয়দা নার্গিস আলী, বিজেপির মহানগর সভাপতি অ্যাডভাকেট লতিফুর রহমান লাবু, সাধারণ সম্পাদক সিরাজউদ্দিন সেন্টু, জেপি (জাফর) মহানগর সভাপতি মোস্তফা কামাল, খেলাফত মজলিসের মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নাসিরউদ্দিন, মুসলিম লীগের মহানগর সাধারণ সম্পাদক আক্তার জাহান রুকু, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি খান গোলাম রসুল, বিএনপি নেতা শেখ মোশারফ হোসেন, জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, মোল্লা আবুল কাশেম, ফখরুল আলম, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান মন্টু, শফিকুল আলম তুহিন, মনিরুজ্জামান মন্টু, মুজিবর রহমান, আজিজুল হাসান দুলু ও এহতেশামুল হক শাওন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৮
এমআরএম/আরআর