প্রথমবার দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনের মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে দ্বিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে বলছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত তালুকদার আব্দুল খালেক (নৌকা), বিএনপি মনোনীত নজরুল ইসলাম মঞ্জু (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মনোনীত শফিকুর রহমান মুশফিক (লাঙল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক (হাত পাখা) ও সিপিবি মনোনীত মো. মিজানুর রহমান বাবু (কাস্তে)। এছাড়া মহানগরীর ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৪৮ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে খুলনা পরিনত হয়েছে উৎসবের নগরীতে। কে হচ্ছেন নগর পিতা- এনিয়ে গোটা শহরে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তবে সুষ্ঠু ভোট নিয়েও রয়েছে সাধারণ ভোটারদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে নিরাপত্তাসহ নগরজুড়ে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। রোববার দুপুর থেকে ১৬ প্লাটুন বিজিবি নেমেছে নগরীতে।
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারে কেসিসি নির্বাচনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৬ ও নারী ২ লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন। ভোটকক্ষ ১ হাজার ১৭৮টি। এ নির্বাচনে ২৮৯টি কেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) কেন্দ্র রয়েছে ২৩৪টি এবং ৫৫টি সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভোট কক্ষ রয়েছে ১ হাজার ৫৬১টি। অস্থায়ী ভোট কক্ষ ৫৫টি। প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার রয়েছে ৪ হাজার ৯৭২ জন। এবারের কেসিসি নির্বাচনের দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষক থাকছেন ২১৯জন।
নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে খুলনার এ নির্বাচন জাতীয় রাজনীতিতে নতুন বার্তা দেবে। আগামী দিনের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি কোন দিকে যাবে তার খানিকটা আভাসও মিলবে এ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ ও ফলাফলের ওপর। যে কারণে পুরো দেশের নজর এখন শিল্প ও বন্দর নগরী খুলনার দিকে।
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ ও স্পর্শকাতর বিবেচনায় সিটির তিনটি ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার সহায়তায় নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন, যার মধ্যে বিএল কলেজ কেন্দ্র, পিটিআই কেন্দ্র এবং পাইওনিয়র কলেজ কেন্দ্র। ভোটারদের গতিবিধি ও ভোটগ্রহণ কার্যক্রম ওই ক্যামেরার সাহায্যে অবলোকন করবেন কমিশন। এসব প্রযুক্তিকে সঠিকভাবে নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য আইটি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হয়েছে।
এছাড়া কেসিসি নির্বাচনে দু'টি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে। এ দু'টি কেন্দ্রের ১০টি বুথের দুই হাজার ৯৭৮ ভোটার ইভিএমে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
সোমবার (১৪ মে) দিবাগত রাত ১২টা থেকে বন্ধ হয়ে গেছে নয় ধরনের যানবাহন। যা বলবত থাকবে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত। এগুলো হচ্ছে, প্রাইভেটকার, বাস, বেবিট্যাক্সি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ট্রাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপভ্যান, ট্রাক ও টেম্পো। শুধুমাত্র নির্বাচন কাজে নিয়োজিত যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) মুখপাত্র সহকারি পুলিশ কমিশনার সোনালী সেন বাংলানিউজকে বলেন, সুষ্ঠ নির্বাচন উপলক্ষে মহানগরীর আইন-শৃংখলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেএমপির পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ভোটের দিন পুলিশ, র্যাব, আনসার ও বিজিবি, এপিপিএনের প্রায় ১০ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫৪ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৮/আপডেট: ০০১০ ঘণ্টা
এমআরএম/এএটি