শনিবার (২৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরের রায় রোডের খেয়ালী গ্রুপ থিয়েটারে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনের নেতারা।
নির্বাচন নিরপেক্ষ, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে সম্মেলনে বেশকিছু পরামর্শ উপস্থাপন করে সুজন।
আসন্ন নিবার্চনে সব দল ও প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুজনের বরিশাল মহানগর কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা।
তিনি বলেন, নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক পন্থা। যার মধ্য দিয়ে ভোটাররা তাদের স্বার্থে কাজ করার জন্য পছন্দের প্রার্থী বেছে নেয়ার সুযোগ পান। কুমিল্লা ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সফলতার সঙ্গে শেষ করে নির্বাচন কমিশন ভোটারদের মধ্যে যে আস্থার সৃষ্টি করতে পেরেছিল, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তা ধরে রাখতে পারেনি।
তিনি বলেন, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যে সব অনিয়ম ও ত্রুটি-বিচ্যুতি চিহ্নিত হয়েছে নির্বাচন কমিশন তা আমলে নিয়ে সুচারুভাবে তদন্ত করতে হবে। পাশাপাশি প্রতিটি ঘটনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
একইসঙ্গে চিহ্নিত সীমাবদ্ধতাগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য পূর্বপ্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যাতে গাজীপুর, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন ত্রুটিমুক্তভাবে তথা অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজন করা যায়।
আর এসবের লক্ষ্যে সুজন নেতারা পরামর্শও দিয়েছেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, প্রার্থীদের খরচ নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী ভূমিকা পালন, ব্যানার-ফেস্টুন ব্যবহারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও তা বাস্তবায়নে কার্যকরী ভূমিকা রাখা, কেন্দ্রগুলো সিসিটিভির আওতায় আনা, কালো টাকা ও পেশীশক্তি ব্যবহারে কঠোর অবস্থান নেয়া, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত, প্রার্থীদের হলফনামা প্রচার, ওয়ার্ডে অনিয়ম হলে নির্বাচন স্থগিত, নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে অবিলম্বে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার এবং অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়া দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, যুদ্ধাপরাধী, নারী নির্যাতনকারী মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি, ঋণখেলাপি, বিলখেলাপি, ধর্ম ব্যবসায়ী, ভূমিদস্যু, কালো টাকার মালিক অর্থাৎ অযোগ্য ও গণবিরোধী ব্যক্তিকে ভোট না দেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুজন জেলা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আক্কাস হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রনজিৎ দত্ত, মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ, মেহের আফরোজ মিতা, সুজনবন্ধু সোহানুর রহমান প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক শাহ সাজেদা আরো বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া যদি নিয়মতান্ত্রিকভাবে না হয়, তবে সে নির্বাচন শুধু প্রশ্নবিদ্ধ হবে না, বরং তা জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য হবে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের কাছে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন বড় ধরনের পরীক্ষা। এর মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষ নির্বাচন কমিশনের আন্তরিকতা, সক্ষমতা, নৈতিকতা, সাহসিকতা ইত্যাদি দিক পরখ করে দেখার সুযোগ পাবেন। ২০১৩ সালের ১৫ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন যদি সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত না হয়, তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতিগতভাবে আমরা নতুন সংকটের মুখোমুখি হতে পারি; যা আমাদের একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত করতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৩ জুলাই মেয়র প্রার্থীদের সঙ্গে জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। জনতার মুখোমুখি অনুষ্ঠানে বরিশালের উন্নয়নের দাবি ও নাগরিক সংকট মেয়র প্রার্থীরা কিভাবে মোকাবেলা করবেন সেটা জানা যাবে। পাশাপাশি যে কোনো অনিয়মের প্রতিবাদে সুজন মানববন্ধন করতে প্রস্তুত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৮
এমএস/এসএইচ