কড়া রোদে এভাবে ঘণ্টার ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে ভোটারদের। বয়স্ক ও নারী ভোটারদের জন্য কষ্টের ও ভোগান্তিরও বটে।
মঙ্গলবার (২৬ জুন) টঙ্গী সরকারি কলেজ কেন্দ্রে ঘুরে এমন চিত্র-ই দেখা যায়।
জানা যায়, এ কেন্দ্রে পাঁচটি নারী ও পাঁচটি পুরুষ বুথ রয়েছে। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ হাজার ৭১ জন। এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা জানান, সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৫শরও কম।
ভোটগ্রহণের শ্লথগতি নিয়ে ভোটার ও কর্মকর্তাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। লাইনে দাঁড়ানো সাবিহা খানম নামে এক ভোটার বাংলানিউজকে বলেন, আমি সকাল সাড়ে ৮টায় কেন্দ্রে এসেছি। দুই ঘণ্টা লাইনে অপেক্ষা করছি। কিন্তু এখনও ভোট দিতে পারছি না। বুথের ভেতরে কেনো দেরি হচ্ছে তাও আমার বোধগম্য নয়।
আরও পড়ুন>>
** গাজীপুরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে চলছে ভোটগ্রহণ
শহিদুল ইসলাম নামে ষাটোর্ধ্ব ভোটারও প্রায় আড়াই, ঘণ্টা ধরে লাইনে। তার ভাষ্য, সকালে এসে এখন প্রায় দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে এরপরও কেন্দ্রে ঢুকতে পারিনি। কী জন্য দেরি তাও বুঝছি না। কেন্দ্রে ঢুকে অনেক দেরি করে ভোটাররা বের হচ্ছেন। এভাবে কষ্ট করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার মানে হয় না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মখর্তা ননী গোপাল বাংলানিউজকে বলেন, আমরা যাচাই-বাছাই করে ভোটারকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দিচ্ছি এ জন্য দেরি হচ্ছে। তাছাড়া সকালের দিকে ভোটারদের উপস্থিতিও বেশি আছে। আমরা ভোটারদের সহযোগিতা করছি।
তিনি বলেন, আমাদের কেন্দ্রে এখনও কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। এমনকি কেউ কোনো অভিযোগও করেনি।
গাজীপুর সিটিতে ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন; ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন নারী।
জিসিসির ৫৭টি ওয়ার্ডে ৪২৫টি ভোটকেন্দ্রে ২ হাজার ৭৬১টি ভোট কক্ষে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। ছয়টি ভোট কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। ছয়টি কেন্দ্র হচ্ছে- চাপুলিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চাপুলিয়া মফিজ উদ্দিন খান উচ্চ বিদ্যালয়, মারিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র-১, মারিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র-২, রানি বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র-১ ও রানি বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র-২।
এবার আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকার ছাড়াও স্বতন্ত্র এবং বিভিন্ন দলের আরো পাঁচজন মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে লড়ছেন। তারা হলেন- সিপিবির কাজী রুহুল আমিন (কাস্তে), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. জালাল উদ্দিন (মোমবাতি), ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমান (মিনার), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নাসির উদ্দিন (হাত পাখা) এবং স্বতন্ত্র ফরিদ আহমদ (টেবিল ঘড়ি)।
সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে একটিতে ইতোমধ্যে একজন কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাই ভোটগ্রহণ হচ্ছে ৫৬টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে। এরমধ্যে সাধারণ কাউন্সিলর ২৫৪জন এবং সংরক্ষিত ১৯টি ওয়ার্ডে ৮৪জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে।
গাজীপুরের রিটার্নিং অফিসার রকিব উদ্দিন মণ্ডল জানান, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের জন্য ২৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ১২ হাজার (র্যাব, পুলিশ ও আনসার) সদস্য মাঠে রয়েছেন।
এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১৯ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫২ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৮
ইএআর/এমএ