সম্পদের আয়তনে পিছিয়ে নেই তার পরিবারের সদস্যরাও। একইভাবে মেয়র থাকার সময় গতবারের চেয়ে সাতগুণ সম্পদ বেড়েছে বিএনপি প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলেরও।
নির্বাচন কমিশনের হলফনামা থেকে পাওয়া এসব তথ্যে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী লিটনের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ পাস। পেশায় আইনজীবী হলেও এ খাত থেকে কোনো আয় নেই। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামেই জমা আছে ১ কোটি ৩৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ৪০৮ টাকা।
যা ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনের সময় ছিল মাত্র ৫৮ হাজার টাকা। এছাড়া স্ত্রীর নামে ৫৭ লাখ ৩৩ হাজার ও নির্ভরশীলদের নামে ২৩ লাখ ২৯ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা রাখা আছে। স্ত্রীর নামে ৩৪ লাখ ৫০ হাজার ও মেয়েদের নামে ২০ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ আছে খায়রুজ্জামান লিটনের।
২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনে নিজের নামে মাত্র ২ লাখ টাকা দামের একটি গাড়ি ছিল। তবে এখন তার আছে ৩৬ লাখ টাকার গাড়ি। ওই সময় স্ত্রীর কোনো স্বর্ণালঙ্কার না থাকলেও এখন হয়েছে ৫০ ভরি। এছাড়া মেয়েদের নামেও আছে ২১ ভরি স্বর্ণালঙ্কার। ২০০৮ সালের সিটি নির্বাচনেও অংশ নিয়েছিলেন লিটন। ওই সময় লিটনের দাখিল করা হলফনামায় বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছিল ২ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।
তবে সম্পদ যে হারে বেড়েছে তা স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকার বাড়ি ভাড়া, এছাড়া ব্যবসার আয় বেড়েছে। আর স্ত্রী ও মেয়েদের জন্য যেসব স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে, সেগুলো বিভিন্ন সময়ে তারা উপহারে পেয়েছেন।
এদিকে, পুলিশ সদস্য সিদ্ধার্থ হত্যা ও নাশকতাসহ ১২ মামলার আসামি এমএসএস পাস বুলবুলের পেশা ব্যবসা। তবে তারও আয়ের উৎস দেখানো হয়েছে মৎস্য চাষ। ২০১৩ সালে নির্বাচনের সময় তার নগদ ৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ছিল। তবে গেল পাঁচ বছরে তা বেড়ে হয়েছে ৪২ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
স্ত্রীর নামে আছে ছয় লাখ ৭৯ হাজার ৮শ’ টাকা। বুলবুলের নিজেরই আছে ২৫ ভরি স্বর্ণ। যা স্ত্রীর চেয়েও বেশি। কারণ স্ত্রীর নামে রয়েছে ২০ ভরি স্বর্ণ। তবে তার নিজের কোনো বাড়ি নেই।
যদিও মাছ চাষ করে বছরে তার আয় মাত্র ছয় লাখ টাকা। তবে হিসাব করে দেখা গেছে, ২০১৩ সালের চেয়ে এবার বার্ষিক আয় প্রায় সাতগুণ বেড়েছে সদ্যবিদায়ী মেয়র বুলবুলের। বেড়েছে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণও। ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা।
এবারের হলফনামায় বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ২৪ লাখ ৫৭ হাজার ২৬০ টাকা। যদিও এই বার্ষিক আয় মেয়রের দায়িত্বে থাকা সম্মানী থেকে আসতো বলে বুলবুল তার হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
আয় বাড়ার প্রশ্নে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, আমার এ বাৎসরিক আয় মেয়রের দায়িত্ব পালনের সম্মানী থেকে এসেছে। আগের বছর তো মেয়র ছিলাম না। তাই স্বাভাবিকভাবেই মেয়রের সম্মানী ভাতায় আয় কিছুটা বেড়েছে। এই আয় সম্পূর্ণ বৈধ উপায়ে অর্জিত। যথাযথভাবে যার আয়করও পরিশোধ করেছি। আর আমার নামে যেসব মামলা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক।
রাসিক নির্বাচনে বড় দলের এই দুই হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থীর বাইরে রয়েছেন আরও তিন প্রার্থী। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী রয়েছেন ওয়াশিউর রহমান দোলন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক। পেশা ঠিকাদার হলেও তার আয়ের উৎস হচ্ছে কৃষিখাত ও বাড়ি ভাড়া।
ইসলামী আন্দোলনে প্রার্থী শফিকুল ইসলামের মনোহারীর দোকান রয়েছে। তার বছরে আয় ২ লাখ টাকা। স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হাবিবুর রহমান স্নাতক পাস। পেশা অ্যাডভাইজর উল্লেখ করা হলেও তার ব্যবসা ও বাড়ি ভাড়া থেকে বাৎসরিক আয় দেখানো হয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৮
এসএস/আরআর