অথচ বিধি অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রচারণা নিষিদ্ধ। নির্বাচন কমিশন প্রণীত আচরণবিধি মেনে চলতে প্রার্থীদের নির্দেশনাও দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
সিসিক নির্বাচনে আচরণবিধিতে বলা হয়েছে, প্রতীক বরাদ্দের আগ পর্যন্ত প্রার্থীরা কোনো প্রতিষ্ঠানে চাঁদা দিতে পারবেন না। অথচ এ নিয়ম প্রার্থীরা কতখানি মানছেন, এ প্রশ্ন থেকেই যায়।
কেবল দুই মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী পরস্পরের বিরুদ্ধে রিটানিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। সংবাদমাধ্যমে প্রচারণার ছবি দেখে শোকজ করা হয় জামায়াত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী জোবায়েরকে। অবশ্য শোকজের জবাবও দিয়েছেন জোবায়ের। রিটানিং কর্মকর্তারা তাদের সতর্কও করেছেন।
আচরণবিধিতে আছে, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করে বক্তব্য দেওয়া বা কোনো ধরনের উস্কানিমূলক, মানহানিকর বা ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে এমন বক্তব্যও দিতে পারবেন না প্রার্থীরা।
কিন্তু শনিবার (৮ জুলাই) হলফনামার বিষয়টি সামনে এনে দুই মেয়রের স্ত্রীকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন বিএনপির বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম। এছাড়া মেয়র প্রার্থী আরিফ দুর্নীতিবাজ বলেও কর্মী সমাবেশে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষের নেতারা।
বিধিমালায় আছে, ধর্মীয় উপাসনালয়ে কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন না। কিন্তু সিসিক নির্বাচনে এই নিয়ম মানছেন না প্রার্থীরা। মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা-সবখানে সমানতালে চলছে প্রচারণা।
এ ব্যাপারে সিসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান বলেন, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কেউ সুনির্দিষ্টভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করলেই কেবল ব্যবস্থা নেবে কমিশন।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আচরণবিধিতে আরও বলা হয়েছে, প্রার্থীর ক্ষেত্রে পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল সাদা ও কালো রঙের করতে হবে। এর আয়তন ৬০ থেকে ৪৫ সেন্টিমিটারের বেশি হবে না। প্রতীকের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা তিন মিটারের মধ্যেই হতে হবে। নির্বাচনী প্রচারণায় প্রার্থীরা নিজ ছবি ও প্রতীক ছাড়া অন্য কারও নাম, ছবি বা প্রতীক ছাপাতে পারবে না। পোস্টারে থাকতে হবে মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা ও তারিখ।
পোস্টার, লিফলেট ও হ্যাণ্ডবিল ঝুলিয়ে লাগাতে হবে। দেয়ালে-যানবাহনে লাগাতে পারবেন না। তবে প্রতীক পাওয়ার আগে এসব প্রচারণা নিষিদ্ধ।
প্রচারণায় একাধিক মাইক্রোফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও বেলা ২টার পর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকে প্রচারণার সময় বেধে দেওয়া হয়েছে।
মেয়র পদে প্রতি থানায় একটি এবং কাউন্সিলর প্রার্থীরা ৩০ হাজার ভোটারের বিপরীতে তিনটির বেশি নির্বাচনী ক্যাম্প করতে পারবেন না। নির্বাচনী কার্যালয়ে টেলিভিশন, ডিভিডি ইত্যাদি ব্যবহারেও রয়েছে বিধিনিষেধ। কোনো শোডাউন করা যাবে না।
কোনো রংয়ের কালি বা কেমিক্যাল দিয়ে দেয়ালে, যানবাহনে লেখা, মুদ্রন বা চিত্রাঙ্কন করে প্রচারণা চালানো যাবে না।
প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় এমন স্থানে গেট বা তোরণ নির্মাণ না করা ও কার্যালয়ে আলোকসজ্জায় রয়েছে বাধানিষেধ। ৩৬ বর্গমিটারের বেশি স্থান জুড়ে কোনো প্যান্ডেল বা ক্যাম্প তৈরি করতে পারবেন না।
নির্বাচনী কাজে সরকারি বাহন, প্রচারযন্ত্র বা অন্য কোনো সুবিধা নেওয়া ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রচারণায় বিলবোর্ড ভূমি, কোনো কাঠামো বা বৃক্ষ ইত্যাদিতে স্থাপন করা যাবে না।
এসব বিধিমালা লঙ্ঘন করলে অনধিক ৬ মাস কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কোনো রাজনৈতিক দল অথবা কোনো প্রার্থীর পক্ষে কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান এই বিধিমালার কোনো একটি লঙ্ঘন করলে অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এমনকি প্রার্থী নির্বাচনে অযোগ্য হতে পারেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ০৯ জুলাই, ২০১৮
এনইউ/আরআর