বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) দুপুরে মহানগরের মালোপাড়ার কাবিল ম্যানশনে বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি বুলবুল তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর ‘আওয়ামী লীগের নির্যাতন, হামলা ও মারধরের’ অভিযোগ করেন।
মেয়র প্রার্থী বুলবুল রাসিক এলাকার কাশিয়াডাঙ্গা ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দুই ওসির প্রত্যাহার দাবি তোলেন। বিএনপির পক্ষ থেকে যে অভিযোগগুলো করা হয়েছে তা একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে তদন্তেরও দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বুলবুল বলেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী (আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান) লিটন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার দুই দিনেই অবৈধভাবে চার কোটি টাকার পোস্টার, ব্যনার ছাপিয়েছেন। কে দিলো এতো টাকা? নির্বাচন কমিশনের উচিত তা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া। কিন্তু তল্পিবাহক নির্বাচন কমিশন কখনোই তা করবে না। তারা কেবল লিটনকে মেয়র ঘোষণা দেওয়ার অপেক্ষা করছেন। ’
তিনি দাবি করেন, ‘বুধবার (১১ জুলাই) রাতে বিএনপির এক কর্মীকে মারধর করা হয়েছে। তাকে পিটিয়ে যুবলীগের এক কর্মী পুলিশে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে পুলিশও ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে’ জড়াচ্ছেন। এজন্য আজ্ঞাবহ একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে রাজশাহী আনা হয়েছে। তার ইশারায় থানা পুলিশ বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। বিএনপি নেতাকর্মীদের আটক করছেন। গত তিন মাসে কোনো বোমাবাজির ঘটনা না ঘটলেও নেতাকর্মীদের আটকের পর বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলা গ্রেফতার দেখাচ্ছেন। ’
এছাড়া মিডিয়াকেও ভালোভাবে সংবাদ প্রচার করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন বুলবুল।
এসময় তাদের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের ভয়-ভীতি দেখানোর যে অভিযোগ আওয়ামী লীগের তরফ থেকে করা হয়েছে তা উড়িয়ে দেন বুলবুল। বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘জমি দখল, সংখ্যালঘুদের নির্যাতন ও দেশ ছাড়া করার ইতিহাস আওয়ামী লীগের। ’৭৫ এর আগে রাজশাহীতে লালগাড়ি সন্ত্রাসের কথা রাজশাহীবাসী আজও ভোলেনি। ’
সংবাদে সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন সরকারের দালাল। তারা নির্বাচন পরিচালনা করতে শতভাগ ব্যর্থ। এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোথাও কোনো সুষ্ঠ নির্বাচন হয়নি। আর হবেও না। তবে রাজশাহীতে যদি এভাবে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হয়, তবে তার দায়ভার নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে। যতই অনিয়ম আর নির্যাতন চলুক, বিএনপি ভোটের মাঠ ছাড়বে না। তারা বীরের বেশে নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবে। কর্মীদের প্রতি তেমনই নির্দেশ রয়েছে। ’
মিনু বলেন, ‘আপনারা লক্ষ্য করেছেন, গত ১০ জুলাই প্রতীক বরাদ্দের আগে ৯ জুলাই রাত থেকেই সমস্ত রাজশাহী শহরে নৌকা প্রতীকের ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার এমনভাবে টানানো হয়েছে যা নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থি। এতে তাদের নির্বাচনী ব্যয় প্রশ্নবিদ্ধ। এমন পোস্টার সন্ত্রাস, একদলীয় শাসন ও শোষণের বহিঃপ্রকাশ। যার মাধ্যমে অন্য যে কোনো প্রার্থীর প্রচারণার পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যানার লাগানোর সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হওয়ার আগ থেকেই আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করা হচ্ছে। ’
বিএনপির এ কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘এ অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আজ্ঞাবহ প্রধান নির্বাচন কমিশনের (সিইসি) পদত্যাগসহ অবিলম্বে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পোস্টার সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানাই। এছাড়া পুলিশ বিভাগকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই। ’
এ সময় রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন তপু, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন, শাহ মখদুম থানা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান শরীফসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৬ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৮
এসএস/আরআর/এইচএ/