এসবের পাশাপাশি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের হুমকি দেওয়া এবং কর্মী-সমর্থকদের বায়োডাটা সংগ্রহ করাসহ নানা অভিযোগ তুলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়েছেন প্রার্থীরা। এ পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতরে মেয়র প্রার্থীরা পরস্পরের বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ করেছেন।
বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের পৃথক তিনটি লিখিত অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। আর নৌকা প্রতীকের কামরানের বিরুদ্ধে দু’টি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আরিফুল। আর আরিফুল ও কামরানের বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতরে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
শুক্রবার (১৩ জুলাই) আরিফুলের পক্ষে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ ওই তিনটি অভিযোগ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে।
অভিযোগে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বিশাল আকারের একটি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। এমনকি সেই তোরণের ওপর নির্বাচনী প্রতীক নৌকার বিশাল প্রতিকৃতি দাঁড় করিয়েছেন, যা আচরণবিধির পরিপন্থী। এছাড়া একই প্রার্থীর সমর্থকরা বুধবার (১১ জুলাই) রাত আনুমানিক পৌনে ১১টার দিকে নগরীর হাসান মার্কেট এলাকায় ধানের শীষের পোস্টার সাঁটাতে বাধা দেন। পোস্টার ছেঁড়া ও ধানের শীষের কর্মীকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। অবশ্য পরে বিএনপির বাধা ও আন্দোলনের মুখে সেই কর্মীকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ।
অন্যদিকে, আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের পক্ষে শুক্রবার (১৩ জুলাই) রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আচরণবিধির লঙ্ঘনের লিখিত অভিযোগ করেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক দিবাকর ধর রাম।
অভিযোগে বলা হয়, বিধি অনুযায়ী একজন মেয়র প্রার্থী তার মাইকিং করার জন্য শুধুমাত্র একটি চোঙ্গার মাইক ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু বিএনপির প্রার্থী একটি মাইকের পরিবর্তে তার নির্বাচনী প্রচারণায় নিয়োজিত সিএনজি অটোরিকশায় দু’টি মাইক ব্যবহার করেছেন। অভিযোগের প্রমাণ স্বরূপ একটি স্থিরচিত্র সংযুক্ত করে দিয়েছেন দিবাকর ধর রাম। একই দিনে কামরানের ব্যক্তিগত সহকারী বদরুল ইসলাম পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ এনে পৃথক আরও একটি অভিযোগ করেন।
তার আগের দিন বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে কামরান ও আরিফুলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের লিখিত অভিযোগ করেন এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের পক্ষে তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট হাফিজ আব্দুল হাই।
অভিযোগে বলা হয়, ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন কামরান ও বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর লোকজন জুবায়েরের টেবিল ঘড়ি মার্কার প্রচারণায় নিয়োজিত কর্মীদের হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছেন। নীতিমালা লঙ্ঘন করে নৌকার প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয় নির্ভানা ইন-এ এবং ধানের শীষের প্রার্থীর প্রধান কার্যালয় কাজীটুলাস্থ মিতা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে বৃহদাকার ব্যানার ঝুলানো হয়েছে।
এছাড়া জুবায়ের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে তার প্রচারণায় নিয়োজিত কর্মীদের তালিকা করা এবং গ্রেফতারের হুমকি দেওয়ার লিখিত অভিযোগ করলেও বিষয়টি মৌখিকভাবে জানানা আরিফুল হক চৌধুরী।
এ ব্যাপারে সিসিক নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার পক্ষে তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা প্রলয় কুমার সাহা বাংলানিউজকে বলেন, অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনের তোরণ আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এছাড়া কাউন্সিলর প্রার্থীদের পক্ষে কোনো অভিযোগ পড়েনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৮
এনইউ/এইচএ/