দেশে যন্ত্রে ভোটগ্রহণ করার ব্যবস্থাটি ২০১০ সালে চালু করেন এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন নির্বাচন কমিশন। ওই কমিশন সিটি করপোরেশন, পৌরসভাসহ বেশ কিছু নির্বাচন খুবই সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করেন।
পরবর্তীতে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর ইভিএমগুলো আর সচল রাখতে পারেনি। ২০১৩ সালে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একটি মেশিন বিকল হলে সেই কেন্দ্রে আবার ব্যালটে ভোট নিতে হয়। তারপর থেকে রকিব কমিশন তাদের মেয়াদে আর ইভিএমগুলো ব্যবহার করেনি। এমনকি বিকল হওয়ার কারণও উদ্ধার করতে পারেনি। পরবর্তীতে মেশিগুলো নষ্ট করে নতুন করে ইভিএম তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেন তারা।
সেই পরিকল্পনার ধারাবাহিকতায় বর্তমান একেএম নূরুল হুদা কমিশন নতুন করে ইভিএম তৈরি করে নিচ্ছে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে। যে মেশিনগুলো আগেরগুলোর চেয়ে অনেক বেশি দামি। একই সঙ্গে হ্যাক করার কোনো উপায় নেই বলে দাবি করেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা।
তিনি ইতিমধ্যে গণমাধ্যমকে বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে এই যন্ত্র আমরা ব্যবহার করব যদি এর মধ্যে স্থানীয় নির্বাচনে ব্যবহার করে সফলতা পাওয়া যায়। কেননা, নতুন ইভিএমে জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভারের মাধ্যমে ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত করে ভোট নেওয়া হয়। এই যন্ত্রটি কোনোভাবেই হ্যাক করা যায় না।
সিইসির বক্তব্যের পর এ নিয়ে কথা বললেন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদও, যখন সংসদ নির্বাচনের তফসিলে ঘোষণার বাকি আছে আর মাত্র তিন মাস।
ইসি সচিব সোমবার (১৬ জুলাই) সাংবাদিকদের বলেন, আগামীতে সকল স্থানীয় নির্বাচনে আমরা ইভিএম ব্যবহার করব। যদি কার্যকরী ফল পাই, জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও কিছু কিছু কেন্দ্রে আমাদের ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা থাকবে। তবে সিদ্ধান্ত এখনো গ্রহণ করেনি নির্বাচন কমিশন। এজন্য দলগুলোর মতামত নেওয়া ছাড়াও গণপ্রতিনিধিত্বও সংশোধন করতে হবে।
ইভিএম’র ব্যাপক পরিচিতির জন্য নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে ১০টি অঞ্চলে মেলা করার প্রস্তুতি নিয়েছে। বরিশালে একটি মেলা হয়েও গেছে। ইসি সচিব বলেন, সেখানে প্রচুর মানুষ অংশ নিয়েছিলেন, প্রশংসাও করেছেন। ঢাকাতে কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা একটি মেলার ব্যবস্থা করব। সেটি জুলাই মাসে না করতে পারলে অক্টোবরে করব। এছাড়া প্রতিটি জেলায় দুইটি করে ইভিএম পাঠিয়ে দেব। এতে মানুষজন ইভিএম নিয়ে বুঝতে পারে।
বিএনপি বরাবরাই ইভিএমে ভোটগ্রহণ নিয়ে বিরোধিতা করে আসছে। এ ক্ষেত্রে তারা সংসদ নির্বাচনে এই যন্ত্রের ব্যবহার মেনে নেবে না বলেও জানিয়েছে। বিএনপির অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ইসির অবস্থান কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব জানিয়েছেন, বিএনপি তার প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ইভিএম ব্যবহার করা যায় কিনা, তা দেখে নিতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৮
ইইউডি/এমজেএফ