আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়েছে।
প্রত্যাক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, বেলা পৌনে ১১টার দিকে সাগরপাড়া বটতলা মোড়ে বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষে কেন্দ্রীয় নেতারা গণসংযোগ চালাচ্ছিলেন।
এ সময় তিনটি মোটরসাইকেল মুখোশধারীরা সেখানে গিয়ে পর পর তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে তারা দ্রুত টিকাপাড়ার রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর ওই এলাকায় বিএনপির গণসংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। লোকজন আতঙ্কিত হয়ে ছুটোছুটি শুরু করে। এতে বাংলাভিশন টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার পরিতোষ চৌধুরী আদিত্যসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন। এদের মধ্যে আদিত্যকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে তিনি আশঙ্কামুক্ত।
বোয়লিয়া থানার ওসি আমান উল্লাহ বলেন, গণসংযোগে ককটেল বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এছাড়া র্যাবও ঘটনাস্থলে গিয়েছে। কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বর্তমানে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এছাড়া আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, ধানের শীষের প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বাংলানিউজকে বলেন, সকালে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ দলীয় নেতাকর্মীরা সাগরপাড়া বটতলা এলাকায় বুলবুলের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।
এ সময় মোটরসাইকেলে করে এসে মুখোশধারীরা সেখানে পর পর তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে তাদের দলের কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান ও কর্মী স্বপন কুমার আহত হয়েছেন। তাদের রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মিজানুর রহমান মিনু অভিযোগ করেন, রাজশাহীতে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে এই ককটেল হামলা চালিয়েছে। আওয়ামী লীগের মোটরসাইকেল বাহিনী এতদিন পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলছিল, ফেস্টুন ভেঙে ফেলছিল। তারাই এবার বুলবুলের নির্বাচনী প্রচারণায় ককটেল হামলা করেছে।
মিজানুর রহমান মিনু এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, এ ব্যাপারে থানায় মামলা করা হবে। এছাড়া প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করা হবে।
তবে প্রতিপক্ষের এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে নৌকার মেয়র প্রার্থী এএইচএম খারুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, নিশ্চিত পরাজয় জেনে তারা রাজশাহীকে অসহিষ্ণু করার চেষ্টা করছে।
পাল্টা অভিযোগ করে লিটন বলেন, মাঠে জনসমর্থন আদায়ে ব্যর্থ হয়ে রাতের অন্ধকারে বিএনপির নেতাকর্মীরা তার পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলছে। ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতেই এই ককটেল বিস্ফোরণের নাটক সাজিয়েছে। ঘটনার গভীরে গিয়ে তদন্ত করলেই এর প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। তারা যতই চেষ্টা করুক শান্তির নগরী রাজশাহীকে কখনও অশান্ত করতে দেওয়া হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১১২১ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৮/আপডেট: ১১৫৩ ঘণ্টা/আপডেট: ১৩৫০ ঘণ্টা
এসএস/আরআর