তিনি বলেন, শহরের অনেক জায়গায় প্রার্থীদের অসঙ্গতিপূর্ণ পোস্টার-ফেস্টুন আছে। এগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে।
বুধবার (১৮ জুলাই) দুপুরে রাজশাহী কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড মিলনায়তনে মেয়র এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এ নির্দেশনা দেন।
ইসি শাহাদাত হোসেন বলেন, রাজশাহীর নির্বাচনী পরিবেশ এখনও স্বাভাবিক রয়েছে। তবে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অবশ্যই তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তাহলে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। ৩০ জুলাই রাজশাহীসহ তিন সিটির নির্বাচন। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের জন্য মতবিনিময় সভা করা হচ্ছে।
একজন ভোটার যেন পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নিজ বাড়িতে যেতে পারেন, সব প্রার্থী সমভাবে যেন প্রচারণার সুযোগ পান সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এ সময় সব প্রার্থীকে নির্বাচন চলাকালীন ও নির্বাচন পরবর্তীও এমন সৌর্হাদ্যপূর্ণ ও সম্প্রীতির সম্পর্ক রাখারও আহ্বান জানান নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন।
নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজশাহীর নির্বাচনী অবস্থা ভালো। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন সে জন্য কমিশন সজাগ রয়েছে। সচিবের আশা, তারা সফল ভোটের রেকর্ড গড়তে প্রস্তুতি শেষ করেছেন।
এদিকে মতবিনিময় সভায় রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কালো টাকা ছড়ানোর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তোলেন হেভিওয়েট দুই মেয়র প্রার্থী। সভায় বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেছেন, তিন দিন আগে পোলিং এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হলে তিনি ভোটে থাকবেন না।
আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের অভিযোগ, নৌকার গণজোয়ার আঁচ করে বোমাবাজি শুরু করেছে বিএনপি। তাদের এমন অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে মতবিনিময় সভা একরকম বিতর্ক প্রতিযোগিতায় রূপ নেয়।
ভোটের মাঠে কালো টাকা ও পোস্টার সন্ত্রাস চলছে- এমন অভিযোগ করে বিএনপির মেয়র প্রার্থী বুলবুল বলেন, সরকার দলীয়দের দাপটে ভোটউৎসব নয়, যুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন তোলেন, নিজের নিরাপত্তা নিয়েও।
সভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল প্রায় ১০ মিনিট বক্তব্য দেন। তিনি লিটনের প্রচার-প্রচারণা নিয়ে বলেন, রাজশাহীতে পোস্টার সন্ত্রাস সৃষ্টি করা হয়েছে। আমার পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে পাশের ডাস্টবিনে ফেলে রাখা হচ্ছে। এটি কোন নির্বাচনের পরিস্থিতি নয়, এটি যুদ্ধের পরিস্থিতি। কালো টাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী পুরো নগরীকে পোস্টারে পোস্টারে ভরে ফেলেছেন।
বক্তব্য দিতে গিয়ে পাল্টা অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, কালো টাকা কাদের কাছে আছে, কারা কালো টাকা দিয়ে জ্বালাও-পোড়াও করেছিল, মানুষ পুড়িয়েছিল এবং কারা হাজার হাজার কোটি কালো টাকার ব্যবহার করে দেশের রাজনীতিকে ভিন্নদিকে প্রবাহিত করতে চেয়েছিল, অবৈধপন্থায় সরকারের পতন ঘটাতে চেয়েছিল তা মানুষ জানে। এখানে মিথ্যাচার করে লাভ হবে না।
সভায় বাকযুদ্ধ শেষে মঞ্চ থেকে নেমে কোলাকুলি করেন মেয়র প্রার্থী লিটন ও বুলবুল। সোফায় বসেনও পাশাপাশি। অনুষ্ঠানে নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থী এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরাও আলোচনায় অংশ নেন।
সভায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের, রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক নিশারুল আরিফ, র্যাব-৫ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহাবুব আলম ও রাজশাহী পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৮
এসএস/এমজেএফ