শুধু জামায়াত-বিএনপির বিরোধ নয়, বিএনপির এক বিদ্রোহী প্রার্থীও বিএনপির অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। যদিও বিএনপির ওই বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী এলাকা ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। সিলেট শহরে এখনও সাঁটানো বিএনপির বিদ্রোহ প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিমের বাস প্রতীকের পোস্টার-ফেস্টুন। বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেও অনেকে বিশ্বাস করতে পারছে না, সেলিম ধানের শীষের পক্ষে কাজ করবেন। ফলে কালো মেঘ দেখা দিয়েছে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর শিবিরে।
অন্যদিকে টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক জামায়াত সমর্থিত মেয়রপ্রার্থীর অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের পোস্টারও রয়েছে শহরজুড়ে। সিলেটের অলিগলিতে তার পোস্টারে সাঁটানো। মনে হচ্ছে সিলেটে সাংগঠনিক শক্তির প্রদর্শনী করতে মাঠে প্রস্তুত জামায়াত। বিগত ১০ বছরে এ শহরে মাথাচাড়া দিতে পারেনি যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত দলটি।
রোববার (২২ জুলাই) সিলেট শহরের কোর্ট পয়েন্ট থেকে জিন্দাবাজার পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়কজুড়ে শো ডাউন করেছে জামায়াত। বিএনপির অনেক সমর্থকদেরই ধারণা ধানের শীষের বিজয় ঠেকাতেই জামায়াতকে নিয়ে খেলছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদকৃত তালিকায় নগরীতে বর্তমানে মোট ভোটার ৩ লাখ ১৫ হাজার ৬৪ জন। কমিশনের দেওয়া তথ্যমতে, বর্তমানে নগরীতে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ২৯১ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৪৫ হাজার ৭৭৩ জন। ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি সর্বশেষ তালিকা হালনাগাদ করা হয়।
২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক ৩৫ হাজার ১০০ ভোটে হারিয়ে দেন প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে। এবার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জামায়াতের দাবি তাদের নিজস্ব ২০ হাজার ভোট রয়েছে। এসব ভোট জামায়াতের ঘরে গেলে আওয়ামী লীগের পোয়াবারো বলে মনে করছে অনেকে। গত নির্বাচনে হেফাজত ইস্যু ব্যাপকভাবে কাজে লাগিয়েছিলো বিএনপি। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন।
কথা হয় তিন নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার কাপড় ব্যবসায়ী মুসলিম উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের বিভক্তিতে এবার নৌকার অবস্থান ভালো। জামায়াতের প্রার্থী জুবায়ের ভালো ভোট টানবে। এটা বিএনপি প্রার্থী আরিফুলের জন্য অশনি সংকেত।
সিলেট নগরের অলিগলিতে বইছে ভোটের হাওয়া। ব্যানার-পোস্টার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। চলছে মাইকিং, দফায় দফায় পথসভা, প্রচারণার মিছিল। পাড়ায় পাড়ায় চায়ের কাপে ভোটের আড্ডা চলছে আগামী ৩০ জুলাই কে হবেন নতুন নগরপিতা তাই নিয়ে।
পাঠানতলার রিকশাচালক রুহুল আমিন বলেন, “আরিফুল হক চৌধুরী রাস্তাঘাট ভালা খরছে। তবে ইফিরা (এবার) জামাতোর লাগি, ভুট বাগ ওই যাইবো। তবে আরিফ আর কামরান দুনো জনই ভালা মানুষ। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৮
এমআইএস/এমজেএফ