ভোটাররাও প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনায় মেতে ওঠেন অবসরে। এবার সিলেটে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে বদর উদ্দিন আহমদ কামরান মেয়র পদে নির্বাচন করছেন; আর আরিফুল হক চৌধুরী লড়ছেন বিএনপির ধানের শীষ নিয়ে।
তবে নগরীর সাধারণ ভোটাররা বলছেন, লড়াই নৌকা কিংবা ধানের শীষে নয়। লড়াই মূলত জমে উঠবে প্রধান দুই দলের প্রার্থীর ব্যক্তিত্ব আর উন্নয়ন চিন্তা নিয়ে।
ভোট নিয়ে কথা হয় নগরীর জিন্দা বাজার এলাকার বাসিন্দা আব নাসেরের সঙ্গে। সিলেটের রাজনীতি আর ভোট নিয়ে বেশ সমজদার ব্যক্তি। বললেন, অন্যান্য সিটির সঙ্গে সিলেটের তুলনা করলে হবে না। সিলেট সম্প্রীতির শহর, এখানে রাজনৈতিক কলহ নেই বললেই চলে। সব দলের মানুষের মধ্যেই একটা সম্প্রীতি রয়েছে, আর ভোটের ক্ষেত্রে কোনো দল নয়, মূলত ব্যক্তি ইমেজটাই প্রাধান্য পাবে।
সাবেক কামরানের কথা বলতেই যেনো ভেসে আসে ‘কেউ ফেরে না খালি হাতে, গেলে খাজার দরবারে...’ কথাটি। ব্যক্তি হিসেবে সিলেটের মানুষের কাছে একজন দরদি মানুষ। প্রার্থী হিসেবেও একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, যে কোনো প্রয়োজনে দল-মত নির্বিশেষে কামরানের অন্দরমহলে প্রবেশ করা যায়। সব সময় তাকে পাশে পান নগরবাসী। এই পাশে থাকার প্রতিদান এবার হয়তো দেবেন নগরের মানুষ।
জানা যায়, বদরউদ্দিন আহমদ কামরান জনপ্রতিনিধির খাতায় নাম লেখান সিলেট পৌরসভার সর্বকনিষ্ঠ কমিশনার (তৎকালীন) হিসেবে। এরপর নির্বাচিত হন পৌর চেয়ারম্যান।
২০০২ সালে সিলেট পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান (তৎকালীন) হন তিনি। ২০০৮ সালে সিসিক নির্বাচনেও জেল থেকে অংশ নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন কামরান।
দীর্ঘ পথচলায় তিনি সিলেটের গণমানুষের নেতায় পরিণত হয়েছেন। সিটি করপোরেশন এলাকায় ফুটপাতের অধিকাংশ দোকানি-ই রংপুর, বগুড়া, গাইবান্ধা ও মৌলভীবাজার জেলার মানুষ। তাদেরও পুনর্বাসন করেছেন কামরান।
সিলেট শহরের বাসিন্দা প্রবীণ সাংবাদিক তাপস দাশ পুরকায়স্থ বলেন, একজন ব্যক্তি কামরান মাঠ থেকে উঠে এসেছে। উনার কাছে গেলে কোনো মানুষ খালি হাতে ফেরে না। সকল মানুষকে সম্মান করে চলেন তিনি। ভোটের ক্ষেত্রে তার এই ইমেজটা বেশ কাজে দেবে।
আরো পড়ুন>>
** সিলেটে বিএনপির গলার কাঁটা জামায়াত
এদিকে গত নির্বাচনে সিসিকের মেয়র হওয়ার পর পাঁচ বছরের মধ্যে ২৬ মাস জেলে ছিলেন আরিফুল। এরমধ্যেই শহরের অনেক উন্নয়ন করেছেন তিনি।
বিশেষ করে শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা, সড়ক প্রশ্বস্তকরণ ও ফুটপাতের উন্নয়ন কাজ চোখে পড়ার মতো। জলাবদ্ধতায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম ডুবলেও ভিন্ন চিত্র সিলেটে।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকেও সিলেটকে সাজিয়েছেন সদ্য সাবেক মেয়র আরিফুল। এছাড়া অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড হাতে নিয়েছেন তিনি। এসব অসম্পন্ন কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন আরিফুল হক।
ভোটাররা বলছেন, অল্প সময়ে সিলেটের যে উন্নয়ন তিনি করেছেন, আগামীতে উন্নয়নের জন্য হলেও নগরবাসী তাকে আবারও মেয়র নির্বাচিত করবেন।
বাংলানিউজ জিন্দা বাজারের বাসিন্দা শহীদ উদ্দিন বলেন, আরিফুল হক চৌধুরী রাস্তাগাটোর (রাস্তাঘাট) বালা (ভালো) উন্নয়ন করছুইন। আগের থাকি একন আমরার (আমাদের) শহর বালাও (ভালো) ফয়-ফরিষ্কার (পয়-পরিষ্কার)। আগের মতোন অতোতা ( এতে বেশি) মেগোর পানি (বৃষ্টির পানি) রাস্তা-ঘাটো জমে থাখে (থাকে) না। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৮
এমআইএস/এমএ