এবার বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী লীগ, বিএনপির বাইরেও জাতীয় পার্টি, বাসদ, কমিউনিস্ট পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়রপ্রার্থী রয়েছে। প্রত্যেকেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে ৩০ ওয়ার্ডে মোট ভোট ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬। এই ভোটারদের সুচিন্তিত মতামতের ভিত্তিতেই আগামীর নগরপিতা নির্বাচিত হবেন। তবে বিএনপি ও অন্যান্য দলের প্রার্থীরা সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে রয়েছেন শঙ্কায়।
এখন পর্যন্ত বিএনপির কোন নেতা-কর্মী আটকের ঘটনা না ঘটলেও ভোটের আগে গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছেন তারা। এমন দাবি করেছেন খোদ বিএনপির মেয়রপ্রার্থী মজিবর রহমান সারোয়ার।
বাংলানিউজকে এক প্রতিক্রিয়া তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে এখনো বাধার সম্মুখীন হইনি, তবে আমার কর্মীদের বিভিন্ন জায়গায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। সরকারি দলের প্রার্থী নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মানছে না। তারা রাত ৮টার পরেও মাইক দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। অথচ আমাদের কোনো মাইক ৮টার এক মিনিট অতিক্রম হলেই মাইক খুলে নিচ্ছে।
গতরাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর ভাটিখানা এলাকায় গণসংযোগকালে ১০টি মোটরসাইকেল আটক করা হয়। এতে মেয়র প্রার্থীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এসব ঘটনায় আতঙ্কিত বিএনপির নেতাকর্মীরা।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম শাহিন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কর্মীরা মাঠে নামবে কিভাবে? সবার মনেই ভয় ভোটের আগে যদি গ্রেফতার করা হয়! এ কারণে কেউ নামতে চায় না।
তবে এ অভিযোগকে আমলেই নিচ্ছেন না তরুণ মেয়রপ্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি বরাবরই মিথ্যা অভিযোগ করে আসছে, যার কোন সত্যতা নেই। তাদের মিথ্যা অভিযোগের জুড়ি নেই।
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। আমাদের প্রার্থীর পরিচ্ছন্ন ইমেজ আমাদের এগিয়ে রাখছে।
বিএনপির আতঙ্ক ও অন্য প্রার্থীদের দুর্বলতায় সাদিক আব্দুল্লাহ অনেকটাই নির্ভার। তার নির্বাচনী প্রচরণায় শেষ মুহূর্তে সেটাই ফুটে উঠছে। গতকাল সোমবার সকাল থেকে সংবাদকর্মীরা তার বাসায় দফায় দফায় বসে থেকেও দুপুর অবদি দেখা পাননি। এরপর বিকেল ৩টার দিকে নির্বাচনী প্রচারণায় বাসা থেকে বের হন তিনি। মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) একই চিত্র। বিকেলে ৩টার দিকে তিনি নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন।
এ নিয়ে নগরীর ভোটাররা অনেকেই বলছেন- দৌড়াইয়া লাভ কি এমনিতেই তো হয়ে যাবে! সবুজ হাওলাদার নামে এক ভোটার বলেন, সাদিক আব্দুল্লাহ এমনিতেই হয়ে যাবে। তাই তার ভেতর একটু অলসতা চলে আসছে। আবার অনেকেই ধারণা করছেন অজানা আতঙ্কে রয়েছে বিএনপি, ফুরফুরে মেজাজে আওয়ামী লীগ।
মেয়রপ্রার্থী হিসেবে আলোচনায় তৃতীয় স্থানেই রয়েছেন চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাওলানা ওবাইদুর রহমান মাহবুব। তিনি অভিযোগ না করলেও তার দলের নেতাকর্মীরা সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে শঙ্কিত।
সিটির ৫, ৬, ১১, ১২, ২৬, ২৭, ২৮ নং ওয়ার্ড ঘুরে টং দোকান ও বিভিন্ন টি-স্টল ঘুরেফিরে একটা কথাই আসছে খুলনা, গাজীপুরের পুনরাবৃত্তি হবে না তো! মোস্তফা কামাল নামে এক ভোটার বলেন, ভোট সুষ্ঠু হলে ফলাফল ঘুরে যেতে পারে। এই সিটি বিএনপির ঘাঁটি হলেও গত ৫ বছরে সাদিক আব্দুল্লাহ মাঠ গুছিয়ে নিয়েছেন। তিনি সাংগঠনিকভাবে অনেক সফল। তাই তাকেও ফেলে দেওয়া যাবে না। তবে যাই হোক আমরা চাই ভোট সুষ্ঠু হোক।
ভোট সুষ্ঠু না হওয়ার একটি আলামত তুলে ধরে আরেক ভোটার আলতাফ হোসেন খান বাংলানিউজকে বলেন, “আমাদের ২৭ নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রাথী মো. রশিদ হাওলাদার সরাসরি বলছেন ভোট যাকেই দাও আমি কাউন্সিলর হব। এখনই এ কথা বললে ভোটের দিন কী হবে?”
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৮
এসএম/এমজেএফ