এক-এগার সময়কার এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ভোট ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেয়। সে মোতাবেক তখনকার বড়বড় নির্বাচনগুলোতে সিসি টিভি ব্যবহারের পাশপাশি অনলাইনেও ভোটগ্রহণ মনিটরিং করা হয়।
অনলাইনে ভোটকেন্দ্র মনিটরিংয়ের জন্য সে সময় ব্যবহার করা হয় জনপ্রিয় প্লাটফরম ‘স্কাইপি’। এতে সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্রে ল্যাপটপের মাধ্যমে ভিডিও ক্যামেরা সংযোগ করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পুরো ভোটকক্ষ ক্যাপচার করা হতো। আর তা পর্যবেক্ষণ করার জন্য নির্বাচন কমিশনের একটি টিম তৎপর থাকতো সার্বক্ষণিক। পুরো বিষয়টি দেখভাল করা হতো ইসি তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাধ্যমে।
সময় পরবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সেই বিষয়টিকে পাশ কাটিয়ে চলছে বর্তমান কেএম নূরুল হুদার নির্বাচন কমিশন। ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার কর্মকর্তারা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, বর্তমান কমিশন আসার পর অনলাইনে ভোটকেন্দ্র মনিটরিংয়ের বিষয়ে আর কোনো আলোচনাই হচ্ছে না। অথচ এ ব্যবস্থার মাধ্যমে ভোটকেন্দ্র’র প্রকৃত চিত্র ইসি ভবনে বসেই জানা সম্ভব। এছাড়া দুষ্কৃতিকারী কী করছে তা খতিয়ে দেখতে আলাদা তদন্ত কমিটিরও মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজন নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে দুষ্কৃতিকারীকে চিহ্নিত করা একটি ব্যাপক কষ্টসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ বিষয়। এক্ষেত্রে অনলাইনে মনিটরিং করা গেলে তা একটি মোক্ষম অস্ত্র হয়। কেননা, অনলাইনে মনিটরিং মানে সব কিছু সহজেই রেকর্ড হয়ে যায়। তাই ভোটকেন্দ্রের চিত্র দেখার জন্য টেলিভিশনের ফুটেজ সংগ্রহ করা কিংবা মাঠ পর্যায়ে বিস্তর তদন্তেরও প্রয়োজন পড়ে না। এজন্য এ ব্যবস্থাটি থাকা উচিত।
কর্মকর্তারা জানান, এটি একটি ব্যয় সাপেক্ষ বিষয়। কিন্তু সব ভোটকেন্দ্রে এটির ব্যবহার না করা সম্ভব হলেও অন্তত ঝুঁকিপূর্ণ বা গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অনলাইন মনিটরিং করা উচিত। যেখানে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট অধিক গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে ব্যয়টা বাধা হতে পারে না।
সোমবার (৩০ জুলাই) রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনেও সিসিটিভি’র ব্যবহার হচ্ছে কয়েকটি কেন্দ্রে। কিন্তু অনলাইন মনিটরিংয়ের কোনো উদ্যোগ নেই।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, অনলাইনে মনিটরিংয়ের কোনো পরিকল্পনা নেই। নির্বাচনে সিসি টিভির ব্যবহার করা হবে। তিন সিটি নির্বাচনেও সিসি টিভির ব্যবহারই হবে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় আমার সেই প্রতিবেদন নেব। অনলাইন মনিটরিংয়ের প্রয়োজন পড়বে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৮
ইউডি/এসএইচ