এরইমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাখতে বলা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ইসির যুগ্ম-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান চিঠিটি পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে- আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি নির্বাচনী এলাকার সার্বিক শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ প্রতিরোধের জন্য ভোটগ্রহণের দুইদিন আগে থেকে অর্থাৎ ২৮ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে ২৪-২৬ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত মোতায়েনকৃত সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, ব্যাটেলিয়ন আনসারের মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা প্রয়োজন হবে। এলাকাভিত্তিক এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে পরবর্তীতে জানানো হবে।
চিঠিতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন সচিবকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এদিকে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ নির্বাচনে কত সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবেন, তা ঠিক করতে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসবে কমিশন।
নির্বাচন ভবনে সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শক, র্যাব, বিজিবি, আনসার, কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক, সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মহাপরিচালক বা তাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
নির্বাচন কমিশন প্রথমে ১০ দিনের জন্য সশস্ত্র বাহিনী মাঠে নামানোর পরিকল্পনা করেছিল। বর্তমানে ৭ থেকে ৯ দিনের জন্য মাঠে নামানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। এক্ষেত্রে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনাও রয়েছে। উপজেলা সদরে স্ট্রাইকিং ফোর্স সেনা সদস্যদের রাখার কথা রয়েছে। তবে কোনো সমস্যা হলে তারা নিজেরাই নির্বাচনী এলাকায় মুভ করবেন, এমন নির্দেশনাও থাকবে।
এরইমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা গণমাধ্যমকে বলেছেন, ১৫ তারিখের পর সেনাবাহিনীর ছোট ছোট টিম মাঠে গিয়ে রেকি করবে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে দেশের আসনে ৪০ হাজার ১৮৩টি ভোটকেন্দ্রের ধরণ অনুযায়ী, কেন্দ্র প্রতি ১৪ থেকে ১৬ জনের ফোর্স ভোটের দিন মোতায়েন রাখার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। প্রথমবারের মতো নিয়োজিত করা হবে গ্রাম পুলিশও।
নির্বাচনী অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও শাস্তি দেওয়ার জন্য থাকবেন সহস্রাধিক ম্যাজিস্ট্রেট।
সব মিলিয়ে ছয় লাখের বেশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এবারের নির্বাচনে বাজেট রাখা হয়েছে ৭শ’ কোটি টাকা। যার দুই-তৃতীয়াংশই ব্যয় হবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পেছনে।
সশস্ত্র বাহিনীসহ অন্যান্য ফোর্স মোতায়েনের বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের সব পরিকল্পনা রয়েছে। কোন বাহিনীর কতো লোকবল, কতোদিনের জন্য, কবে থেকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে, তা নির্ধারণ হবে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮/আপডেট: ২১০৫ ঘণ্টা
ইইউডি/জেডএস