ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

জয়-পরাজয়ে ‘ফ্যাক্টর’ দু’কূল হারানো ২ চেয়ারম্যান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৮
জয়-পরাজয়ে ‘ফ্যাক্টর’ দু’কূল হারানো ২ চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন ও আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ

ময়মনসিংহ: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য  উপজেলা পরিষদের দুই চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছিলেন। কাগজপত্র ঠিকঠাক না থাকায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিয়েছিলেন। নির্বাচন কমিশনে আবেদন করে তারা প্রার্থীতা ফিরে পান। 

এরপর দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের মনোনীত একক প্রার্থী হিসেবে ময়মনসিংহ-৩ ও ময়মনসিংহ-৭ আসনে তাদের নাম ঘোষণা করেন। উচ্ছ্বাস-উল্লাস বইতে শুরু করে নিজেদের অনুসারী নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মাঝে।

কিন্তু সেই উচ্ছ্বাসের রেশ টেকেনি বেশিক্ষণ।  

একদিনের ব্যবধানেই মনোনয়ন হারান গৌরীপুর উপজেলা পরিষদের পদত্যাগী চেয়ারম্যান আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ ও ত্রিশাল উপজেলা পরিষদের পদত্যাগী চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন।  

দুই কূল হারানো এই উপজেলা চেয়ারম্যানরাই আবার দলীয় প্রার্থীর জয়-পরাজয় নির্ধারণে ‘ফ্যাক্টর’ হয়ে উঠতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।  

জানা যায়, ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে একক প্রার্থী হিসেবে প্রথমে দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণের নাম ঘোষণা করেন।  

পরের দিনই সেই সিদ্ধান্ত বদল করে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আসনটিতে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রকৌশলী ইকবাল হোসাইনকে মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়। সোমবার (১০ ডিসেম্বর) তার নামের পাশেই ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।  

মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) থেকেই প্রকৌশলী ইকবাল নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করলেও ভোটের মাঠে নীরব রয়েছেন আহাম্মদ তায়েবুর রহমান। দলীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, আসনটিতে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে আদাজল খেয়ে মাঠে নামতে হবে হিরণকেও। এক্ষেত্রে প্রকৌশলী ইকবালের প্রধান কাজ হবে হিরণের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছা।  

তবে এসব বিষয়ে কথা বলতে গৌরীপুর উপজেলা পরিষদের পদত্যাগী চেয়ারম্যান আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি।  
 
গৌরীপুরের মতো একই রকম ঘটনার অবতারণা হয় ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনেও। দলটির হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে পরিচিত কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মাহাবুবুর রহমান লিটন প্রথম মনোনয়ন বঞ্চিত হন।  

তার জায়গায় দলীয় একক মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয় উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিনকে।  

ডা. লিটনের হাত ধরেই ত্রিশাল উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন জয়নাল আবেদিন। শুরু থেকে দু’জনের মধ্যে গভীর সখ্যতা থাকলেও জয়নাল উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর তাদের মাঝে দূরত্ব তৈরি হয়। ওই সময় থেকেই জয়নাল আওয়াজ দিচ্ছিলেন তিনি দলীয় মনোনয়ন নেবেন।  

সূত্র মতে, উপজেলা বিএনপি’র বেশিরভাগ নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশা ছিলো ডা. লিটনের হাতেই থাকবে ধানের শীষ। কারণ ত্রিশালে বিএনপিকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করানোর কারিশ্মা দেখিয়েছেন লিটনই।  

কিন্তু অবাক করা ঘটনায় রাতারাতি দৃশ্যপট বদলে যায়। আবার ডা. লিটন পুনরায় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বহাল হলে ‘বিদ্রোহ’ দেখানোর ইঙ্গিত দেন জয়নাল সমর্থকরা।  

কিন্তু দলের বেশিরভাগ নেতা-কর্মীদের ডা. লিটনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থানের কারণে ক্ষোভ-হতাশার সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে।  

তবে দলটির তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ভাষ্য হচ্ছে- আসনটিতে নৌকাকে পরাজিত করতে হলে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি’র কোনো বিকল্প নেই।  

খানিকটা ভুল করলেই ২০০৮ সালের মতোই ভোটের রায় যাবে নৌকার অনুকূলে। এসব ক্ষেত্রে দলীয় মনোনীত প্রার্থী ডা. লিটনকেই উদ্যোগী ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।  

এ বিষয়ে মনোনয়ন হারানো উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাগ গোস্বা যাই থাক দল যেহেতু করি দলের প্রার্থীর জন্যই কাজ করবো। দু’একদিনের মধ্যেই আমি ধানের শীষকে বিজয়ী করতে মাঠে নামবো। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৮ 
এমএএএম/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।