ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

সিরাজগঞ্জ-২ নৌকার প্রচারণায় সরগরম, মাঠে নেই বিএনপি

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৮
সিরাজগঞ্জ-২ নৌকার প্রচারণায় সরগরম, মাঠে নেই বিএনপি প্রচারণা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না। ছবি: বাংলানিউজ

সিরাজগঞ্জ: ‘শেখ হাসিনার সালাম নিন, নৌকা মার্কায় ভোট দিন’, উন্নয়নের মার্কা- নৌকা মার্কা’ কাকডাকা ভোরে এসব স্লোগান সম্বলিত মাইকের শব্দে ঘুম ভাঙে সিরাজগঞ্জ শহরবাসীর। শুধু স্লোগান নয়, গানে গানে উন্নয়নের ফিরিস্তি জানান দিয়েও চাওয়া হচ্ছে নৌকার ভোট। গভীর রাত পর্যন্ত চলছে একের পর এক মাইকে প্রচারণা।

মর্যাদাপূর্ণ সিরাজগঞ্জ-২ (সদরের একাংশ ও কামারখন্দ) আসনটিতে সরকার দলীয় প্রার্থী ও তার কর্মী সমর্থকদের প্রচারণায় নির্বাচনী মাঠ সরগরম থাকলেও এখনও মাঠে নামেনি বিএনপি।

প্রতীক বরাদ্দের পরদিন সোমবার (১১ ডিসেম্বর) থেকেই এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না প্রচারণায় নেমেছেন।

প্রতিদিন সকাল থেকে প্রার্থী নিজে ও তার কর্মী সমর্থকরা পৃথকভাবে নির্বাচনী এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। এদিকে নৌকার পোস্টারে পোস্টারে জেলা শহরসহ সমগ্র নির্বাচনী এলাকা ছেয়ে গেলেও প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থীর পোস্টার এখনও লাগানো হয়নি।

আসনটিতে আওয়ামী লীগ ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি মুহিব্বুল্লাহ ও বাসদের নব কুমার কর্মকার প্রচারণা শুরু করেছেন। তবে প্রার্থী নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকায় এখনও মাঠে নামেনি বিএনপি। ধানের শীষের প্রকৃত মালিক কে হবেন তা নিয়ে চলছে সব মহলেই আলোচনা।

এখানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় প্রথম দিনেই তার মনোনয়ন বাতিল করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরবর্তীতে বিকল্প হিসেবে তার স্ত্রী সাবেক এমপি রুমানা মাহমুদকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয়। তবে প্রার্থীতা ফিরে পেতে দলের প্রভাবশালী নেতা টুকু আইনি
লড়াইয়ে রয়েছেন।

প্রার্থী যেই হোক ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে খুব শিগগিরই প্রচারণা শুরু করলে ভোটে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। তবে এলাকাটি ধানের শীষের ঘাঁটি উল্লেখ করে বিএনপির নেতারা দাবি করছেন, ৭ দিন গণসংযোগ করতে পারলেই বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করবেন টুকু কিংবা তার স্ত্রী রুমানা।

জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ খান হাসান এ বিষয়ে বলেন, আমরা গত তিনদিন ধরে দোদুল্যমান অবস্থায় ছিলাম। তবে আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি রয়েছে। আমাদের আশা ছিল প্রিয় নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উচ্চ আদালতে
প্রার্থীতা ফিরে পাবেন। বুধবার আদালতে চূড়ান্তভাবে তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়। এখন আমাদের বিকল্প প্রার্থী রুমানা মাহমুদকে নিয়ে দু-একদিনের মধ্যেই প্রচারণা শুরু করবো।  

আসনটি বিএনপির ভোট ব্যাংক উল্লেখ করে তিনি বলেন,
এখানে ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য জনগণ মুখিয়ে রয়েছে। বিকল্প যাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তিনিও অত্যন্ত জনপ্রিয় স্বল্প সময় প্রচারণার সুযোগ পেলেই এখানে আমাদের প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।

সিরাজগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণা সেলের প্রধান সমন্বয়ক, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন বলেন, আমরা ১১ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছি। ১০ বছরে
আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন ও প্রার্থীর যোগ্যতার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করছি। পাড়ায় মহল্লায় ভোটারদের ডেকে উঠোন বৈঠকের মাধ্যমে চলছে এসব প্রচারণা কার্যক্রম।

বিএনপি কেন প্রচারণায় নেই এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা মাঠে না থাকলেও নির্বাচন বানচালে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। গভীর রাতে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জগদীসের বাড়িতে ককটেল হামলাসহ নানা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্টের পাঁয়তারা করছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৮
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।