এ আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য ও সাতক্ষীরা জেলা সভাপতি মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও সাতক্ষীরা জেলার সাবেক সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় ভোটের সমীকরণ আরো জটিল হয়ে উঠেছে।
তবে, এখন পর্যন্ত পোস্টার টানানো, নির্বাচনী সভা ও গণসংযোগে এগিয়ে আছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মুস্তফা লুৎফুল্লাহ।
যদিও ধানের শীষের প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম হাবিবের অভিযোগ, তার নেতা-কর্মীদের নির্বাচনী প্রচার চালাতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত দলীয় দেড় শতাধিক নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। মারধর করা হচ্ছে কর্মী সমর্থকদের। ছিড়ে ফেলা হচ্ছে পোস্টার।
অন্যদিকে, জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী সৈয়দ দিদার বখতও সাধ্য মতো প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ভোটের মাঠে ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখতের উপস্থিতির বিষয়টি দেখছেন দুইভাবে।
বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, লাঙ্গল প্রতীকের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হবে মহাজোটের প্রার্থী মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। সেক্ষেত্রে সুবিধা পাবেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম হাবিব।
অপর অংশের মতে, জাতীয় পার্টির সৈয়দ দিদার বখত বিএনপি-জামায়াতের একটি বড় অংশের ভোট লাঙ্গল প্রতীকে আনতে সক্ষম হবেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ধানের শীষের প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম হাবিব। সেক্ষেত্রে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এগিয়ে যাবেন।
সবমিলিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-১ আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাপার তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে ভোটের।
এ প্রসঙ্গে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, নৌকা প্রতীকের বিজয়ে তালা-কলারোয়ার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাসহ সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ। বিজয় নিশ্চিত।
ধানের শীষের প্রার্থী হাবিবুল ইসলাম হাবিব বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমাদের নির্বাচনে এনেছে। কিন্তু চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। প্রচারে বাধা, গণগ্রেফতার, কর্মী-সমর্থকদের মারপিট করা হচ্ছে। এভাবে ভালো নির্বাচন হতে পারে না। তারপরও ভোট নিরপেক্ষ হলে ধানের শীষের বিজয় ঠেকাতে পারবে না কেউ।
লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ দিদার বখত বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে এই এলাকার মানুষের জন্য সাধ্যমত কাজ করেছি। মানুষ আমাকে মনে রেখেছে। আশা করি ভোটের দিন ব্যালটেই তার প্রতিদান দেবে।
প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরা জেলার দুটি উপজেলা ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-১ আসনে ভোটার সংখ্যা চার লাখ ২২ হাজার ৮৯৮। এই আসনে উল্লেখিত তিন প্রার্থীসহ ছয়জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। বাকি তিন প্রার্থী হলেন- ইসলামী আন্দোলনের এফএম আছাদুল হক (হাত পাখা), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির আজিজুর রহমান (কাস্তে) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আব্দুর রশিদ (আম)।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৮
এনটি