নতুন প্রার্থী হিসেবে পুরাতনদের সঙ্গে নতুন ভোটারদেরও মনজয় করার চেষ্টা করবেন তিনি। নতুনরাই প্রার্থী হিসেবে নতুনকে স্বাগত জানাবে-এমনটিই আশা করছেন তিনি।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এই অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত থাকায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। আর এলাকার মানুষ শিক্ষামন্ত্রীকে যে আশা নিয়ে ভোট দিয়েছিল, তাদের আশার প্রতিফলন ঘটেনি। দীর্ঘদিন এলাকায় কোনো উন্নয়ন হয়নি। এসব কারণে দলের মধ্যেই ক্ষোভ রয়েছে। যে কারণে মানুষ প্রার্থী হিসেবে আমাকেই বেছে নেবেন।
দীর্ঘ একযুগ ধরে নিজেকে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখার বিষয়টি উল্লেখ করে ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থেকেছি। দারিদ্র্যতা বিমোচনে কাজ করেছি। এলাকায় আমার সংগঠন বিএনপিও অনেক শক্তিশালী। ৩০ ডিসেম্বর ধানের শীষের বিজয় হবে।
বিএনপির একাধিক প্রার্থীকে টপকে মনোনয়ন লাভে দলের ক্ষোভ-অসন্তোষ কাটিয়ে ওঠার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আছে, প্রতিহিংসা নেই। যে কারণে জেলা বিএনপির সভাপতিও আমার নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধনে গেছেন।
তিনি একসঙ্গে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। জোটের প্রার্থীরাও একসঙ্গে নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়বেন বলে আশাবাদী তিনি।
বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জকে একটি মডেল-আদর্শ এলাকা হিসেবে গঠন করার স্বপ্ন দেখেন ফয়সল আহমদ চৌধুরী। নির্বাচিত হলে গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের বিস্তীর্ণ এলাকার নদী ভাঙনরোধ, চার লেনের রাস্তা নির্মাণ, মাদক-সন্ত্রাস নির্মূল, দারিদ্র্য বিমোচনে যুবসমাজের বেকারত্ব দূরীকরণ, নারীদের অগ্রসর করা, প্রবাসীদের বিনিয়োগের নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সংযোগ, পর্যটনে এ দুই উপজেলাকে এগিয়ে নেওয়া এবং তুণমূল পর্যায়ে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর প্রত্যয় রয়েছে তার।
প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের মানুষ উন্নয়ন বঞ্চিত ছিল। নদীভাঙনে বিলীন হচ্ছে বিস্তীর্ণ জনপদ। তাই নদী ভাঙন রোধ করা তার প্রথম পদক্ষেপ। পাশাপাশি রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থার উন্নয়ন প্রয়োজন রয়েছে। এ অঞ্চলের চারলেনের বাজেট অনেক আগেই পাস হয়েছিল, কিন্তু আলোর মুখ দেখেনি।
প্রবাসী উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করে শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান গড়ে দেওয়া এবং অনগ্রসর নারীদের কারিগরি শিক্ষায় এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নেবেন তিনি। পাশাপাশি দেশে ফেরা প্রবাসীদের সার্বিক সমস্যা লাঘবে প্রবাসী সেল গঠন করার আশ্বাস দেন তিনি।
তিনি বলেন, বিদ্যু্’ ও গ্যাস গোলাপগঞ্জ থেকে উ’পাদন হয়। এই গ্যাস দিয়ে বিদ্যু’ উ’পাদন হচ্ছে। গ্রীড লাইনের মাধ্যমে এখানকার গ্যাস পাচ্ছে সারা দেশের মানুষ। অথচ এ দুই উপজেলার মানুষ গ্যাস থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। অনেক এলাকায় গ্যাসের সংযোগও নেই। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উ’পাদিত খনিজ সম্পদের একটি অংশ এলাকার উন্নয়নে ব্যয় করার নিয়ম সারা বিশ্বেও রয়েছে। সেই জায়গাটিতে কাজ করবেন তিনি।
ব্যক্তিজীবনে ব্যবসায় নিজেকে সফল মনে করেন এই প্রার্থী। তার মতে, আমার আর চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আল্লাহ অনেক দিয়েছেন। বাকিটা জীবন মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত রাখতে চাই। বিশেষ করে যুবসমাজের জন্য ভালো কিছু করতে চাই।
শিক্ষার দিক থেকে অনগ্রসর গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের পরবর্তী প্রজন্মকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, যেহেতু আমার আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সে সুবাদে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রত্যন্ত এলাকায় নিয়ে যাওয়া পরিকল্পনার অন্যতম একটি। শিক্ষা ব্যবস্থায় গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারকে বিশ্বমানের পর্যায়ে নিতে পারবো কি না-জানি না, তবে আমার চেষ্টা থাকবে বিশ্বমানের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিযোগিতায় এই এলাকা যাতে পিছিয়ে না থাকে।
নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, পুরো প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে আমরা নির্বাচন করছি। নির্বাচিত চেয়ারম্যানসহ নেতাকর্মীর অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ বাসা-বাড়িতে যাচ্ছে। কোনো মামলা ছাড়া গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, জনগণ আমাদের পক্ষে রয়েছেন। আর প্রশাসনও সরকারের অবৈধ আদেশ অবজ্ঞা করে জনগণের মতের বিপক্ষে যাবে না। জনগণের বিজয় হবেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৮
এনইউ/আরআর