এখনও কোথাও দেখা মিলছে না এই প্রার্থীর পোস্টার-ব্যানারের। এমনকি নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগেরও তেমন কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
তবে প্রার্থীর দাবি নানা বাধা-বিপত্তির মুখে তিনি কৌশলী হয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর পোস্টার-ব্যানার লাগানোর সঙ্গে তা ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। যদিও এ সবই অপপ্রচার বলে দাবি করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
এই আসনের ভোটররা জানান, প্রতীক পাওয়ার পর থেকে বরিশাল-৪ আসনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য পংকজ নাথ। তার সঙ্গে মাঠে কিছুটা সক্রিয় অবস্থানে রয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী সৈয়দ মো. নুরুল কারীম। তবে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী জে এম নুরুর রহমানের দেখা মিলছে না ভোটের মাঠে। নেই কোন ব্যানার-পোস্টারও।
এ বিষয়ে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী জে এম নুরুর রহমান বলেন, মূলত বরিশাল-৪ আসনে আমার অর্থাৎ ধানের শীষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দু’টো ভাগ ছিলো। এছাড়া বিএনপির জেলা কমিটিও তেমনভাবে সহায়তা করেনি। এগুলো গুছিয়ে মাঠে নামতে কিছুটা দেরি হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রচার-প্রচারণার মাঠে নেই এটা বলা ঠিক না। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নানা ধরনের বাধার কারণে গোপনে ও কৌশলে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হচ্ছে। আর ব্যানার-পোস্টার থাকবেও বা কিভাবে। লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে।
এ বিষয়ে মেহেন্দিগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি জিয়াউদ্দিনব সুজন বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের মাঠে নামতে দিচ্ছে না। আমাদের অফিস দখল করে তারা প্রচারণা চালাচ্ছে। এসব কারণে আমাদের নেতাকর্মীরা কিছুটা ঝিমিয়ে আছে। তবে আমরা প্রার্থীর পক্ষে সবসময় কাজ করছি।
বিভক্তি ও সহায়তার বিষয়ে বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি মেজবা উদ্দীন ফরহাদ বলেন, এ আসনে নাগরিক ঐক্য থেকে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। জাতীয় স্বার্থে ও জোটের স্বার্থে জে এম নুরুল রহমান প্রতীক পাওয়ার পরই বরিশালে বসে হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার সব ইউনিটের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর জেলা কমিটির নেতারাও তার পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন।
তিনি বলেন, তবে প্রার্থী নিজেই যদি প্রচার-প্রচারণায় না নামেন এবং হোটেলে বসে শুধু প্ল্যান করেন তবে আমাদের কি করার আছে।
এদিকে এ বিষয়ে মেহেন্দিগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন বলেন, ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী তো প্রচারণার মাঠেই নামেননি। তিনি পৌর সদরে এ পর্যন্ত আসেননি। এমনকি ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির কোনো নেতাকর্মীও তার পক্ষে ভোট চাইতে মাঠে নামেননি, লাগায়নি কোন পোস্টার-ব্যানার। নেতা-কর্মীরা সবাই ঢাকা-বরিশাল গিয়ে উঠেছেন।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে এবং নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোট চাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রচারণার মাঠে না নেমে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও বিএনপি।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ হাওলাদারের বাবা আব্দুল লতিফ হাওলাদারের নামাজে জানাজা স্থানীয় হাজিরহাটে আজাদের বাড়ির সামনে অনুষ্ঠিত হয়। শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানাতে ওই বাড়িতে যান স্থানীয় এমপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী পংকজ নাথ। এ সময় উপস্থিত হন একই আসনের বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের ধানের শীষের প্রার্থী জেএম নুরুর রহমান।
এরপর দুই-একদিনের মাথায় তিনি নির্বাচনী এলাকা ত্যাগ করলেও সেখানে আর দেখা যায়নি বলে জানান মহাজোটের নেতারা। তাদের মতে, হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের সব কমিটি মেজবা উদ্দীন ফরহাদের করা। তিনি মনোনয়ন না পাওয়ায় নেতা-কর্মীরা ধানের শীষের বর্তমান প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামছেন না।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৮
এমএস/আরআর