অনায়েসেই তারা কাছে টানতে পারছেন নারী ভোটারদের। ভোট কেন্দ্রে যেতে তাদের উৎসাহিতও করছেন।
কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদি-পাকুন্দিয়া) আসনে নৌকার মাঝি হয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি), সচিব ও রাষ্ট্রদূত নূর মোহাম্মদ। ভোটে তাকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে রয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
বাবার জন্য প্রচারণার শুরু থেকেই উপজেলা সদর, হাট-বাজারসহ বাড়ি বাড়ি ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন নূর মোহাম্মদের জ্যেষ্ঠ সন্তান ব্যারিস্টার ওমর মোহাম্মদ নূর অমিত।
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে নূর অমিত বলেন, ‘নৌকার পক্ষে কটিয়াদী ও পাকুন্দিয়া উপজেলাতে জনজোয়ার তৈরি হয়েছে। উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনাকে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী করতে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছে এখানকার ভোটাররা। আমরা আশাবাদী, পরিচ্ছন্ন ও উজ্জ্বল ভাবমূর্তির নূর মোহাম্মদকে তারা ৩০ ডিসেম্বর নৌকা মার্কায় বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন। ’
আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসন। এই আসনে দ্বিতীয়বারের মতো নৌকার কাণ্ডারী হিসেবে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা ‘আস্থা’ রেখেছেন প্রয়াত আলতাফ হোসেন গোলন্দাজের উত্তরাধিকার বর্তমান সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ বাবেলের ওপর।
এই প্রার্থীর প্রতিনিধি হিসেবে নারী ভোটারদের সঙ্গে নিয়মিতই উঠান বৈঠক ও মতবিনিময় সভা করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন তাঁর স্ত্রী শারমিন গোলন্দাজ তুষ্টি। উদ্দীপ্ত নারী ভোটাররা তুষ্টির কাছে বলতে পারছেন নিজেদের অভাব-অভিযোগ এবং চাওয়া-পাওয়ার কথা। এ ভোটারদের কাছে তিনি বর্তমান ‘নারীবান্ধব’ সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ তুলে ধরছেন। তিনি বলছেন, ‘আমার শ্বশুর যেভাবে গফরগাঁওয়ের কল্যাণের জন্য চিন্তা করেছেন কাজ করেছেন, আমার স্বামীও ঠিক তেমনি আপনাদের সুখ ও সমৃদ্ধির কথা চিন্তা করে কাজ করেছেন। আপনাদের সন্তান ফাহমি গোলন্দাজ বাবেলকে ভোট দিলে সেই ভোট পাবেন শেখ হাসিনা। বজায় থাকবে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা। ’
ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে ধানের শীষ মনোনীত প্রার্থী প্রকৌশলী এম. ইকবাল হোসাইনের জন্য শীত উপেক্ষা করে প্রচারণার মাঠে রয়েছেন তার ৮৮ বছর বয়সী বৃদ্ধ মা সৈয়দা ফাতেমা খাতুন।
বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি উপজেলার কলতাপাড়া বাজার এলাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করে ছেলের জন্য ভোট প্রার্থনা করেন।
প্রকৌশলী ইকবাল বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার প্রয়াত বাবা ইসমাইল হোসেন তালুকদারও ছিলেন সংসদ সদস্য। ফলে পারিবারিকভাবেই মায়ের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমাকে আশীর্বাদ করতেই এই বয়সেও তিনি ভোটারদের কাছে ছুটে যাচ্ছেন। ’
ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে ভোটের লড়াই মূলত নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যে। জীবনের শেষ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন।
ফলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রচারণায় অংশ নিয়ে বাবার জন্য ভোট চাইছেন ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইমদাদুল হক সেলিম ও মেয়ে সেলিমা বেগম। নির্বাচনের জন্য সম্প্রতি বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন সেলিমা। তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন উঠান বৈঠকে।
ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনে বিএনপির প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ.কে.এম.মোশাররফ হোসেনের। তিনি দলীয় মনোনয়নপত্রও কিনেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার বদলে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক তুলে দেওয়া হয় ছোট ভাই জাকির হোসেন ওরফে ক্লাসিক বাবলুকে।
সময় নষ্ট না করে স্বামীর জন্য নিবিষ্ট প্রতিটি ইউনিয়নে ইউনিয়নে উঠান বৈঠক করে যাচ্ছেন তার স্ত্রী আফরোজা হোসেন। ভোটের মাঠে আফরোজাকে পেয়ে খুশি দলটির নেতা-কর্মীরা।
ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ডা. মাহাবুবুর রহমান লিটনের পক্ষে তার স্ত্রী মোছতেকা রহমান লাবণী নারী ভোটারদের কাছে টানতে ভূমিকা রাখছেন। সাধারণ ভোটারদের বাড়ি বাড়িও ছুটছেন তিনি।
একই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাফেজ রুহুল আমিন মাদানীর পক্ষে তৎপর রয়েছেন তার ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাসান মাহমুদ।
ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কাজিম উদ্দিন ধনুর পক্ষে মাঠে নেমেছেন স্ত্রী মালিয়া সিদ্দিকা শিফা।
একইভাবে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী স্বামী লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে ভোটের মাঠে জনমত সৃষ্টি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন স্ত্রী লায়লা সিদ্দিকী। শুরু থেকেই প্রচারণায় সক্রিয় তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৮
এমএএএম/এইচএ/