ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

খুলনায় ভোটের মাঠে নারীদের কৌশলী প্রচারণা

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৮
খুলনায় ভোটের মাঠে নারীদের কৌশলী প্রচারণা খুলনার ভোটের মাঠে প্রচারণায় নারী ভোটাররা/বাংলানিউজ

খুলনা: খুলনার ৬টি সংসদীয় আসনে নির্বাচনী প্রচারণায় পুরুষের পাশাপাশি পিছিয়ে নেই নারীরা। পৌষের হাঁড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে দিন-রাত চালিয়ে যাচ্ছেন যার যার দলের প্রচারণা।

এসব নারীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। তাদের মূল টার্গেট নারী ভোটার।

দল বেধে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারী ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত করার পাশাপাশি নিজের দলের প্রতীকের লিফলেট ধরিয়ে দিচ্ছেন। পাড়া-মহল্লার দোকানপাটগুলো জমজমাট বেচাকেনা চলছে। পথসভা, উঠান বৈঠকসহ নানা অনুষ্ঠানগুলোতে যোগদান করছেন তারা।

নারী ভোটারদের আকৃষ্ট করতে প্রচারণায় থাকা নারীরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছে। প্রার্থীর পক্ষ হয়ে এলাকার নানা উন্নয়নসহ মহিলাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির আশ্বাসও দিচ্ছেন। ইসলামী দলগুলোর পক্ষ থেকে বোরকা পরে গণসংযোগ করছেন নারীরা।

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনার ৬টি আসনে ৩৫ প্রার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন নারী প্রার্থী রয়েছেন। তিনি হলেন খুলনা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের বেগম মন্নুজান সুফিয়ান (নৌকা)। তার প্রাচরণায় বেশি নারীর উপস্থিতির কথা থাকলেও খুলনা-২ আসনে আওয়ামী লীগের শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল (নৌকা), বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু (ধানের শীষ), ইসলামী আনন্দোলন বাংলাদেশের অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল (হাতপাখা), খুলনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের আব্দুস সালাম মুর্শেদী (নৌকা) ও খুলনা-৬ আসনে আওয়ামী লীগের আখতারুজ্জামান বাবুর (নৌকা) প্রচারণায় বেশি নারীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, খুলনার ছয়টি আসনে এবার সব মিলে ১৮ লাখ ৬৫৬ জন ভোটার রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯ লাখ ২ হাজার ৬৩১ জন পুরুষ ও ৮ লাখ ৯৮ হাজার ২৫ জন নারী ভোটার।

এসব নারী ভোটারদের কাছে টানতে অনেক প্রার্থী নিজ উদ্যোগেও পারিশ্রমিকের বিনিময়ে দলের নারী কর্মীদের মাঠে নামিয়েছেন। আবার কেউ কেউ নেমেছেন দলকে ভালোবেসে।

খুলনা মহানগরীর ২৩ নং ওয়ার্ডে গণসংযোগকালে কথা হয় ওই ওয়ার্ডের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শেখ লুতফুন্নাহার পলাশী বাংলানিউজকে বলেন, দলীয় কোনো নির্দেশে নয় নিজ উদ্যোগে নৌকা প্রতীকের জুয়েল ভাইয়ের গণসংযোগ করছি। বৃহস্পতিবার ২৮ নং ওয়ার্ডে ও শুক্রবার ২৩ নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ করছি।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশাল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ প্রচারণার সময় নারী ভোটারদের কাছে তুলে ধরছি। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নৌকার বিজয়ের জন্য কাজ করছি।

পাইকগাছা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, একজন বিনয়ী, সৎ, জনদরদী, ধার্মীক, তরুণ প্রার্থী হিসেবে বাবু ভাইয়ের গণজোয়ার তৈরি হয়। তিনি যেখানে যান সেখানে হাজারও নারী ছুটে আসেন। তার গণসংযোগেরও থাকে নারীর উপস্থিতি।

তিনি দাবি করেন, খুলনার যে কোনো জায়গার চেয়ে ৬ আসনে বাবু ভাইয়ের জনসংযোগ, উঠান বৈঠক, কর্মীসভাসহ বিভিন্ন নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে নারী বেশি সরব।

খুলনা জেলা মহিলা দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট তসলিমা খাতুন ছন্দা বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের নেত্রী অবরুদ্ধ থাকায় তার মুক্তি আন্দোলন হিসেবে আমরা শত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে ধানের শীষের গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। শুধু নির্বাচন না মহিলা দল আন্দোলন-সংগ্রাম ছাড়াও দলের যেকোনো দুঃসময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

তিনি জানান, শহরে আমাদের দলের নারী কর্মীরা প্রতিপক্ষের হুমকি ধুমকির মধ্যেও কাজ করতে পারছে। কিন্তু গ্রামে কোথাও নারী কর্মীদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

ছন্দা অভিযোগ করে বলেন, আ’লীগ টাকা দিয়ে মহিলাদের প্রচারণায় নামিয়েছে। বিএনপিকে নামতে দিলে টাকা নয় এমনিতেই ওদের চেয়ে বেশি লোক হতো।

খুলনা জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক পূর্নিমা হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে প্রচারণায় নিজে পুরোপুরি সক্রিয় না থাকতে পারলেও নারী নেত্রীদের দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৮
এমআরএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।