ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

খুলনায় প্রচারণায় এগিয়ে মঞ্জু-জুয়েল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৮
খুলনায় প্রচারণায় এগিয়ে মঞ্জু-জুয়েল গণসংযোগ করছেন আ'লীগ মনোনীত প্রার্থী শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ও বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: খুলনার ৬টি সংসদীয় আসনে প্রচারণায় এগিয়ে ২ আসনের আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী। খুলনা-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু প্রতিদিনই চালাচ্ছেন তাদের গণসংযোগ।

খুলনার অন্য ৫টি আসনে প্রতিনিয়ত সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও দুই আসনে তুলনামূলক এ ধরনের ঘটনা নেই বললেই চলে। সবদলের প্রার্থীই অনেকটা স্বাধীনভাবে প্রচারণা চালাতে পারছেন।

বিভাগের সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ আসন খুলনা-২। মহানগর খুলনার সোনাডাঙ্গা ও সদর থানা নিয়ে এ আসনটি গঠিত। যে কারণেই সবনির্বাচনে সবার নজর থাকে এ আসনের দিকে। এ আসনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অধ্যক্ষ আব্দুল আউয়াল (হাতপাখা), গণফ্রন্ট’র মনিরা বেগম (মাছ), জাকের পার্টির কে এম ইদ্রিস আলী বিল্টু (গোলাপ ফুল), কমিউনিস্ট পার্টির এইচ এম শাহাদত (কাস্তে) এবং বিএনএফ’র এস এম সোহাগ (টেলিভিশন) প্রার্থী রয়েছেন।   

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনটি ‘নৌকা’ ও ‘ধানের শীষ’র জন্য খুবই মর্যাদার। বিএনপির প্রার্থী  কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর সভাপতি এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু এবং আওয়ামী লীগের মনোনীত বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুস্পুত্র শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের মধ্যেই হবে চূড়ান্ত লড়াই। নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের প্রচার-প্রচারণায় মুখরিত খুলনা-২ আসন। এ আসনটিতে এবার ইভিএমে ভোট হওয়ায় ভোটারদের মধ্যে ভোট দেওয়া নিয়ে যেমন রয়েছে আগ্রহ, তেমনি রয়েছে শঙ্কাও।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৬টি ওয়ার্ডের পরিধি নিয়ে খুলনা-২ আসন। এ আসনে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯০ হাজার ৪০৫ জন। তার মধ্যে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৭০৯ জন পুরুষ এবং ৯৮ হাজার ৫৩৬ জন নারী ভোটার।

জানা যায়, স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জয়ী হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী এম এ বারী। বিগত দিনে এ আসনে বিএনপিরই প্রাধান্য দেখা গেছে। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে শেখ রাজ্জাক আলী বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বিজয়ী হন এ আসনটিতে। পরে তার ছেড়ে দেওয়া আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আসগর লবী। তারপর নগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান মিজানকে পরাজিত করেছিলেন এক হাজার ৬৭০ ভোটের ব্যবধানে। ওই নির্বাচনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জু পেয়েছিলেন ৯০ হাজার ৯৫০ ভোট আর মুহাম্মদ মিজানুর রহমান মিজান পান ৮৯ হাজার ২৮০ ভোট। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। ফলে বিজেপির তৎকালীন মহানগর সভাপতি রাশিদা করিমকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান মিজান।

এদিকে, শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) ছুটির দিন সবশ্রেণীর ভোটারদের কাছে যেতে প্রচারণা চালাচ্ছেন জুয়েল ও মঞ্জু। দিচ্ছেন তারা নানান প্রতিশ্রুতি।

খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল বলেন, আমি নির্বাচিত হলে খুলনা হবে শান্তির শহর। এই শান্তিকে যে অশান্তিতে পরিণত করতে চাইবে, তার খুলনায় জায়গা হবে না। খুলনার জনগণ আমার পরিবারের মতো, আর আমার এই পরিবারের যেকোনো সমস্যা আমি যতো দ্রুত সম্ভব সমাধানের চেষ্টা করবো।

শুক্রবার সকাল খেকে মহানগরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের পিটিআই মোড়, ফরিদ মোল্লার মোড়, পুরনো পাইপের মোড়, পুলিশ ফাঁড়ি, মওলা বাড়ির মোড় এলাকায় নৌকার পক্ষে গণসংযোগ, প্রচারপত্র বিলি ও পথসভায় বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মিজানুর রহমান মিজান এমপি, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা কাউন্সিলর আজমল আজমেদ তপন, জামাল উদ্দিন বাচ্চু, হাফেজ মো. শামীম, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

এরপর তিনি নগরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব বানিয়া খামার জামে মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করেন। পরে বিকেল ৩টা থেকে ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় গণসংযোগ করবেন।

অপরদিকে, শুক্রবার ভোর থেকেই মহানগরে নির্বাচনী গণসংযোগে নেমে পড়েন খুলনা-২ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তিনি ভোটারদের হাতে ধানের শীষের লিফলেট তুলে দেন।

গণসংযোগকালে মঞ্জু বলেন, নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ধানের শীষ প্রতীকের বিজয় মানেই গণতন্ত্রের মুক্তি, জনগণের ভোটের অধিকার ফিরে আসা, খালেদা জিয়ার কারামুক্তি।

জনসমর্থনহারা সরকার যেনতেন উপায়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় অভিযোগ করে তিনি বলেন, ব্যালট ছাপানো এবং পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করা সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর দুই বক্তব্যই প্রমাণ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ এ নির্বাচন নিয়ে বড় ধরনের চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। এর বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে সবচক্রান্তের মোকাবেলা করতে হবে।

এসময় তার সঙ্গে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৮
এমআরএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।