তিনি বলেছেন, বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট শুরু থেকেই নির্বাচন ভণ্ডুল করার জন্য কৌশল নিয়েছে। ভোটের মাত্র তিনদিন আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) পদত্যাগ দাবি নির্বাচন ভণ্ডুল করার অপকৌশল মাত্র।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নানক এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তেরে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, তারা (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) আসলে কী করতে চায় আমরা এবং দেশবাসী তা বুঝতে পারছি না। তারা একবার নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। বলছে তাদের প্রার্থী মাঠে নামছে না, কখনও বলছে নির্বাচনে থাকবে- আমরা মনে করি এগুলো তাদের অপকৌশল। এসব নির্বাচন ভণ্ডুল করার ষড়যন্ত্র।
এসব ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের এই নেতা।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে নানক বলেন, নির্বাচনে থাকা না থাকা যার যার ব্যাপার। কেউ নির্বাচনে না থাকলে তাতেও কোনো সমস্যার সম্ভাবনা নেই। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে বিএনপি-জামাত ও ঐক্যফ্রন্টের কালো টাকার প্রভাব ও সহিংস রূপ ততই উন্মোচিত হচ্ছে। নীতি ও সততার মুখোশ ছেড়ে বেরিয়ে আসছে তাদের বীভৎস চেহারা।
‘গতকাল (মঙ্গলবার) রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে র্যাব বিএনপি প্রার্থীর পোস্টার, ঢাকার একটি আসনের সব ভোটারের নাম ঠিকানাসহ একটি তালিকা নিয়ে হাওয়া ভবনের কর্মকর্তা ও এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে এর আগেও দেশের বিভিন্নস্থানে বিএনপি জামায়াত ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের পক্ষে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা পাঠানো হয়েছে যেসব অর্থ দুর্নীতিবাজ দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমানের মাধ্যমে দুবাই থেকে বাংলাদেশে এসেছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। ’
আওয়ামী লীগ নেতা নানক বলেন, ‘এর পেছনে দেশবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্র নির্বাচন বিরোধী চক্রান্ত ও পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের অপতৎপরতা রয়েছে। এটা নির্বাচনকে প্রভাবিত, প্রশ্নবিদ্ধ ও সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতেই এই টাকা পাঠানো হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। '
‘ড. কামাল হোসেন নির্বাচন কমিশনে গিয়ে কিভাবে একটি স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে রীতিমতো এক ধরনের মাস্তানি করেছে। এমনকি আমাদের দেশের পেশাদার পুলিশ বাহিনীকে নিয়ে অত্যন্ত অসম্মানজনক মন্তব্য করেছেন, যা আমরা মুখেও আনতে চাই না। ’
তিনি বলেন, কামাল হোসেন নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে নানারকম উসকানি দিয়েছেন। যা কমিশন অত্যন্ত ধৈর্য্যের সঙ্গে মোকাবেলা করছেন এবং কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। কামাল হোসেনরা লাল কার্ড পাওয়ার মতো একাধিক ফাউল করলেও নির্বাচন কমিশন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের অত্যন্ত নমনীয় ভূমিকা পালন করছে।
‘তাই আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, একটি অবাধ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সব দলকে গণতান্ত্রিক আইনসিদ্ধ আচরণ করতে হবে। বিএনপি-জামায়াত তাদের কর্মীদের ফোন করে নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে উসকানিমূলক বক্তব্য ও নাশকতার নির্দেশ দিচ্ছে, যা গণমাধ্যমে প্রকাশও হয়েছে। ’
বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নানক বলেন. আমরা বিএনপি নেতাদের আহ্বান জানাই- আপনারা সুস্থ স্বাভাবিক রাজনীতির ধারায় ফিরে আসুন। আসুন আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও কল্যাণকর বাংলাদেশ বিনির্মাণে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মূল্যবোধের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হই।
এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুর সবুর, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৮/আপডেট: ১৬৪০ ঘণ্টা
এসকে/এমএ