তিনি বলেছেন, তারা (বিএনপি-জামায়াত ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) নিশ্চিত পরাজয় জেনেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। সামনে আরও ভয়াবহ ষড়যন্ত্র লিপ্ত হবে তারা।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আবদুর রহমান এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট অন্ধকারের শক্তি। তারা অন্ধকারের গলিপথ দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। তারা নির্বাচিত হলে দেশে রক্তগঙ্গা বয়ে যাবে। দেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে।
‘যারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারতে পারে। তাদের কাছে সব ধরনের নাশকতার আশঙ্কা করা যেতে পারে। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে তারা যে ভয়াবহ নাশকতা করেছে এটা সবাই জানে। তবে জনগণ অতীতে তাদের রুখে দিয়েছিলো। আগামীতেও তাদের রুখে দেবে,’ অপর প্রশ্নের উত্তরে বলেন আওয়ামী লীগ নেতা রহমান।
দেশবাসীর প্রতি উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আসুন- আমরা ঐকব্যবদ্ধভাবে এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি।
ঠাকুরগাঁওয়ের এক নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রশ্রয়ে হামলা-আক্রমণ হচ্ছে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে আবদুর রহমান বলেন, এটা তাদের নেহায়েত রাজনৈতিক বক্তব্য। কারণ সেটা প্রমাণ করার জন্যেই নির্বাচনে পোস্টারিং করেনি তারা। এমনকি প্রচারে নামছে না, মানুষের কাছেও যাচ্ছে না। তাদের মনে রাখা উচিৎ- নির্বাচন হচ্ছে একটা স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সকল ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের হাতে।
তিনি বলেন, তারেক রহমানের সঙ্গে সখ্যতা করা আর বিষধর সাপের সঙ্গে প্রণয়ে আবদ্ধ হওয়া একই কথা। ড. কামাল হোসেনের সামনে আজ বিষধর সেই সাপের নগ্ন ফনা। বিএনপি নেতাদের ফাঁস হওয়া ফোনালাপে একের পর এক ষড়যন্ত্রের চিত্র পরিস্ফুট হচ্ছে।
‘গতকাল (বুধবার) গণমাধ্যমে প্রকাশিত গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু ও বিএনএফ নেতা শওকতের ফাঁস হওয়া ফোনালাপে পলাতক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমান কর্তৃক কামাল হোসেনকে হত্যার ষড়যন্ত্রের বিষয়টি উন্মোচিত হয়েছে। এই তারেক রহমান আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ও মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠজন। ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যার মধ্য দিয়ে পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। ’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, সর্বত্রই আজ নির্বাচনের আমেজ বিরাজ করছে। কিন্তু দেশের মানুষের মধ্যে যখন উৎসব ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে তখন বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে চরম হতাশা ও নিরাশার পাশাপাশি এক ধরনের হিংস্রতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নিশ্চিত পরাজয়ের আশঙ্কায় দিকভ্রান্ত নাবিকের মতো পথ খুঁজে ফিরছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থকদের ওপর আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
তবে তিনি এও বলেন, বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্টের পুরনো গেম আর বাস্তবায়ন করা সহজ হচ্ছে না। জনগণ অনেক সচেতন। তারা বলেছে- মাঠে বিএনপির কর্মী নেই। আসলে শুধু কর্মী নয় ভোটের মাঠে বিএনপির কোনো অবস্থান-ই নেই, নিজেদের চরম দুরবস্থা ও নিশ্চিত পরাজয় আশঙ্কা থেকে বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোট দেশবিরোধী অপতৎপরতা ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
‘তারা প্রথম থেকেই নির্বাচনের মাঠে প্রচলিত রীতিনীতি অনুযায়ী প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণ না করে, পোস্টার ব্যানার নিয়ে মিথ্যাচার অপপ্রচার এবং নাশকতা ও সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে। একদিকে তারা লাগাতারভাবে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে, অন্যদিকে সন্ত্রাস ও সহিংসতা সৃষ্টি করছে। যার অংশ হিসেবে নেতারা নির্বাচন কমিশন, পুলিশ-সাংবাদিকসহ নির্বাচন পরিচালনায় নিয়োজিত সকল সরকারি ও বেসরকারি ব্যক্তিদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮/আপডেট: ১৪৫০ ঘণ্টা
এসকে/এমএ