বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।
পরে রুহুল কুদ্দুস সাংবাদিকদের বলেন, আদালত শুধু রুল জারি করেছেন। ফলে ২৫ প্রার্থীর নির্বাচনে থাকতে বাধা নেই।
তানিয়া আমীর বলেন, ওরা আজকে সেক্রেটারি জেনারেলসহ দুই নেতার পক্ষে ওকালতনামা দিয়ে আদালতে ছিলো। তারা কিন্তু আদালতকে বলতে পারেন নাই যে, তারা ২৫ জন জামায়াত থেকে পদত্যাগ করেছেন। তারা কেবল মাত্র বললেন, অন্য একটি প্রতীকে নির্বাচন করছেন। এটাই হচ্ছে একটা প্রতারণা। অন্য প্রতীকে করলেও তারা সেক্রেটারি জেনারেলসহ বিভিন্ন দায়িত্বে আছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, দলটির সমাজকল্যাণ সচিব মো. আলী হোসেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান-এর সভাপতি হুমায়ুন কবির ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. এমদাদুল হক।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে ভোটে অংশ নেওয়া জামায়াতের ২৫ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল পূর্বক যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে ওই আবেদন তিনদিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে গত ১৮ ডিসেম্বর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এরপর ২৪ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব (আইন) মো. সেলিম মিয়া আবেদনকারীদের একটি চিঠি দেন। ওই চিঠিতে বলা হয়, আবেদনটি কমিশন সভায় আলোচনা হয়। কিন্তু ২৫ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের আইনগত কোনো সুযোগ না থাকায় তা নামঞ্জুর করেছেন কমিশন।
পরে এই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ফের আবেদন করেন ওই চার আবেদনকারী। আবেদনে ইসির ২৪ ডিসেম্বরের চিঠি কেন অবৈধ ও বেআইনি হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।
এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় ২৫ জনকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে হাইকোর্টে গত ১৭ ডিসেম্বরের শুনানিতে তানিয়া আমীর বলেন, জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ২০০৯ সালে রিট করা হয়। ওই রিটের ওপর জারিকৃত রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০১৩ সালে হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও অবৈধ ঘোষণা করেন।
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, রাজনৈতিক দল হিসেবে ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০বি (১)(বি)(২) ও ৯০সি অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও সংবিধান পরিপন্থি। এই রায় এখনও বহাল রয়েছে।
‘যেহেতু জামায়াতের নিবন্ধন নেই, তাই ওই দলের কোনো নেতা নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে পারছেন না। যেহেতু নিজস্ব প্রতীকে পারছেন না তাই অন্য কোনো দলের প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণেরও তাদের সুযোগ নেই। এরপরও জামায়াত নেতাদের ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে ইসি হাইকোর্টের রায় ও গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের বিভিন্ন বিধির সঙ্গে প্রতারণা করেছে,’ বলেন ব্যারিস্টার তানিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮/আপডেট: ১৪৫৮ ঘণ্টা
ইএস/এমএ