ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ঢাকা-১৯

সাভারে মুখোমুখি দুই চিকিৎসক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮
সাভারে মুখোমুখি দুই চিকিৎসক নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. এনামুর রহমানের নির্বাচনী প্রচারণা

ঢাকা: আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে রাজধানীর অদূরে সাভার-আশুলিয়ায় মুখোমুখি হচ্ছেন দুই চিকিৎসক। এদের একজন বর্তমান এবং অপরজন সাবেক সংসদ সদস্য। একজন আওয়ামী লীগের, অপরজন বিএনপির প্রার্থী।

যদিও প্রচার প্রচারণায় অনেক এগিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান। সাভার পৌরসভা এলাকাসহ এ আসনের অন্তর্ভুক্ত সাভারের সব ইউনিয়ন চষে বেড়াচ্ছেন তিনি।

গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ করে ভোট প্রার্থনা করছেন।

অপরদিকে, ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবুর কিছু পোস্টার ও ব্যানার ছাড়া চোখে পড়ার মতো তেমন কোনো প্রচার-প্রচারণা চোখে পড়েনি। প্রচারণায় বাধা এবং পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ করছেন তিনি।

সাভার উপজেলা (সাভার মডেল থানা ও আশুলিয়া থানা) নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৯ আসন। তবে চারটি ইউনিয়ন- আমিনবাজার, তেঁতুলঝরা, ভাকুর্তা ও কাউন্দিয়া  এই আসনের বাইরে পড়েছে। তিনটি ইউনিয়ন পড়েছে ঢাকা-২ ও বাকি একটি ঢাকা-১৪ আসনের মধ্যে পড়েছে।

সাত লাখ ৪৭ হাজার ৩০১ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৪৭ জন ও নারী ভোটার ৩ লাখ ৬১ হাজার ২৫৪ জন। এই আসনে পোশাক শিল্পের সাথে জড়িত অনেক মানুষ থাকায় নিম্ন শ্রেণির ভোটার বেশি রয়েছেন।

১৯৯৬ সালে সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ডা. দেওয়ান মোহম্মদ লাউদ্দিন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০০১ সালেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তালুকদার মো. তোহিদ জং মুরাদ তাকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হন ডা. এনামুর রহমান। সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর এনাম মেডকেল কলেজ হাসপাতালে আহতদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে আলোচনায় আসের এই হাসপাতালের মালিক এনাম। ডা. এনামুর রহমান ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবুর নির্বাচনী প্রচারণাঅপরদিকে, ডা. সালাউদ্দিন বাবু ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে প্রার্থিতা পেয়েছেন এই আসনে।

স্থানীয় ভোটাররা বলছেন, এ আসনে নৌকার ফ্যাক্টর হচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মো. তোহিদ জং মুরাদ। অপরদিকে, দেওয়ান সালাউদ্দিনের অনেক জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবুও বর্তমান সংসদ সদস্য প্রচার-প্রচারণায় অনেক এগিয়ে রয়েছেন। নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করছেন।

উলাইল বাস স্ট্যান্ড এলাকার মুদি দোকারদার আবুল বাশার বলেন, দেশব্যাপী উন্নয়নের কথা বলে যে রকম ভোট চাচ্ছে, তেমনি আমাদের সাভারেও প্রচার-প্রচারণা চলছে। সব দিকে সবখানে নৌকার পোস্টার। তবে এ আসনে সাবেক এমপি মুরাদ জংয়ের অনেক প্রভাব রয়েছে। বিএনপির সালাউদ্দিন বাবুরও কম প্রভাব না। তিনি তেমন একটা প্রচারণায় নাই। কিছু পোস্টার লাগিয়েছেন। টানা দুই বারের এমপি ছিলেন সালাউদ্দিন বাবু।

প্রচারণার শেষ দিন ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বৃহস্পতিবার বাংলানিউজকে বলেন, মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী প্রতিপক্ষ প্রচার চালাতে দিচ্ছে না। তারা পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে, কোনো ক্যাম্প করতে দিচ্ছে না। নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর ভাঙচুর করছে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছেও সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না।

তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকবেন জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিশ্ববাসী দেখুক কীভাবে তাদের নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে। প্রশাসনের কাছে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার দাবি জানান।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ, রাস্তাঘাট কার্পেটিং, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ, গ্রামে গ্যাস সংযোগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সালাউদ্দিন।

নবীনগর এলাকার ভোটার ভবেশ চন্দ্র বলেন, চারদিকে অনেক প্রচার প্রচারণা, পোস্টার গান বাদ্য। ভালোই লাগছে। নেতার উন্নয়নের কথা বলছেন।  ভোট দেওয়ার ইচ্ছা আছে। ভোটকেন্দ্রে যামু। যদি গেঞ্জাম লাগে তাইলে যামু না।

গণসংযোগকালে ডা. এনামুর রহমান ভোটারদের উদ্দেশে বলেছেন, আপনারা নৌকায় ভোট দিবেন, নৌকা আপনাদেরকে সব কিছু দিবে। আপনাদের সাথে আমরা সবাই থাকবো। বাংলাদেশ সারা বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। দুর্ভিক্ষ নাই। মঙ্গা নাই। স্কুলের ছাত্ররা বছরের প্রথম দিন বই পায়। আমরা শান্তিতে আছি। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ সব শেখ হাসিনা সরকার মোকাবেলা করেছে। সেই আওয়ামী লীগের একটি মার্কা নৌকা। নৌকা বিজয়ী হলে আপনি, শেখ হাসিনা বিজয়ী হবে। নৌকা বিজয়ী হলে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে বাকি উন্নয়নও হবে।

যুবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর ভোটকেন্দ্র পাহারা দেবেন। কোন রকম জ্বালাও-পোড়াও করতে না পারে, পাহারা দিলে বিজয় নিশ্চিত হবে।

এই আসনে প্রার্থীর ছড়াছড়ি। হারিকেন প্রতীক নিয়ে মুসলীম লীগের ইদ্রিস আলী, গোলাপ ফুল নিয়ে জাকের পার্টির নূরুল ইসলাম, হাত পাখা প্রতীক নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. ফারুক খান, বাঘ প্রতীক নিয়ে পিডিপির সরোয়ার হোসেন, কুলা প্রতীখ নিয়ে বিকল্পধারা বাংলাদেশের আইনুল হক, গামছা প্রতীক নিয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আবু ইউসুফ খাঁন, লাঙল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির আবুল কালাম আজা এবং মই প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বাসদের সৌমিত্র কুমার দাস।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৮
এমআইএইচ/ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।