রোববার (৩০ ডিসেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। সকাল ৮টায় শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
ভোটকে সামনে রেখে মহানগরী ও জেলাজুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তত্পর রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে খুলনা মহানগরীর ব্যস্ততম সড়কগুলো অনেকটা ফাঁকা।
খুলনার সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার মাজহারুল ইসলাম জানান, শনিবার সকাল ৮টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে খুলনা-২ আসনের ভোট কেন্দ্রগুলোতে ইভিএম মেশিন এবং খুলনা সার্কিট হাউজ চত্বর থেকে সকাল ১০টায় খুলনা-৩ আসনের ব্যালট বাক্সসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম ভোট কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অন্য ৪টি আসনের ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম শনিবার সকাল ১০টা থেকে ৯টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ভোট কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হয়।
তিনি জানান, নির্বাচনের দিন ৭৮৬ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৩ হাজার ৭৮৯ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ৭ হাজার ৫৭৮ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন।
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবার খুলনার ছয়টি আসনে ১০টি রাজনৈতিক দলের মোট ৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৩৫ জন প্রার্থীর মধ্যে নারী প্রার্থী মাত্র ২ জন। এ নির্বাচনে ছয়টি আসনের ৭৮৬ ভোট কেন্দ্রের ৩ হাজার ৮৫৭টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ হবে।
এবার মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ লাখ ৯৮৯ জন ভোটার। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ২ হাজার ৯৫০ জন এবং মহিলা ভোটার ৮ লাখ ৯৮ হাজার ৩৯ জন। ছয়টি আসনের মধ্যে খুলনা-২ আসনের ১৫৭টি ভোট কেন্দ্রের ৭২০টি ভোট কক্ষে ইভিএম এর মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। এই কেন্দ্রগুলোতে সেনাবাহিনীর ৩ জন করে সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। বাকি ৫টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে।
খুলনা জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, খুলনার ৬টি আসনে এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে নির্বাচন সরঞ্জামাদি। ভোট কেন্দ্রসহ গোটা জেলাজুড়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে টহলে রয়েছে তারা।
ভোটাররা যাতে ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি যেতে পারে, সবার জন্য নিরাপদ অবস্থা সৃষ্টি করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। ভোটের দিন খুলনার ছয়টি আসনে নিরাপত্তায় থাকবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর প্রায় ১৬ হাজার সদস্য।
ছয়টি আসনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনীর ৯ প্লাটুন, বিজিবি ২০ প্লাটুন ও কোস্ট গার্ডের ১০ প্লাটুন সদস্য থাকবেন। এছাড়া র্যাবের ২১টি টহল গাড়ি ও ৬টি জিপ নির্বাচনী এলাকায় নিরাপত্তায় থাকবে। ভোটের মাঠে ৪৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
খুলনা মহানগর পুলিশ (কেএমপি) সূত্রে জানা গেছে, খুলনা-২ ও ৩ আসন এবং খুলনা-১ ও ৫ আসনে (আংশিক) মোট ভোট কেন্দ্র রয়েছে ৩০৯টি। এর মধ্যে ২৪২ টিকে গুরুত্বপূর্ণ এবং ৬৭টিকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি কেন্দ্রে ৫ জন পুলিশ ও ৯ জন আনসার দায়িত্ব পালন করবে। আর সাধারণ কেন্দ্রে ৩ জন পুলিশ ও ৯ জন আনসার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। এছাড়া মোবাইল টিম থাকবে ৫০টি ও স্ট্রাইকিং ফোর্স ১০টি।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, খুলনা-১, ৪, ৫ ও ৬ আসনে তাদের আওতাধীন ভোট কেন্দ্র রয়েছে মোট ৪৭৭টি। এর মধ্যে ২৮৩টিকে গুরুত্বপূর্ণ এবং ১৯৪টিকে সাধারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকবে ১ হাজার ৭০৪ জন পুলিশ ও ৫ হাজার ৭২৪ জন আনসার।
সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে সেনাবাহিনীর ২৪০ জন সদস্য, বিজিবির ২০০ জন সদস্য, কোস্ট গার্ডের ১৪০ জন সদস্য ও ব্যাটালিয়ন আনসারের ১৩০ জন সদস্য।
খুলনার ৬টি আসনে ১৯২ জন র্যাব সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। ২১টি টহল গাড়ি ও ৬টি অফিসার জিপ নির্বাচনী এলাকা গুলোতে নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৮
এমআরএম/এমএ