জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে ৭১টি ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং ২৭০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স পরিচালনার জন্য দেওয়া হয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। বিচার বিভাগের অধীনে ১৪টি নির্বাচন তদন্ত কমিটি কাজ করছে মাঠে।
আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, রংপুর বিভাগে মোট ভোটার ১ কোটি ১৫ লাখ ৮৫ হাজার ২৬৪ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৫৭ লাখ ৬২ হাজার ২৩৯ এবং নারী ৫৮ লাখ ২৩২ হাজার ২৫ জন। এরমধ্যে রংপুরের ৬টি সংসদীয় আসনে ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৫ জন, পঞ্চগড়ের ২টি আসনে ৭ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৮ জন, ঠাকুরগাঁওয়ের ৩টি আসনে ৯ লাখ ৯৫ হাজার ১৭৬ জন, দিনাজপুরের ৬টি আসনে ২২ লাখ ৬ হাজার ৪৪০ জন, নীলফামারীর ৪টি আসনে ১২ লাখ ৮৮ হাজার ৬১৮ জন, লালমনিরহাটের ৩টি আসনে ৯ লাখ ১৫ হাজার ৭৮৮ জন, কুড়িগ্রামের ৪টি আসনে ১৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৪ জন এবং গাইবান্ধার ৫টি আসনে ১৭ লাখ ৮৪ হাজার ৫৪৫ জন।
সূত্র জানায়, রংপুর বিভাগের ৪ হাজার ৪৯২টি ভোটকেন্দ্রে ২২ হাজার ৯৩৩টি কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য ইতোমধ্যেই ৮ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ১১৬ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৪ হাজার ৪৯২ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ২২ হাজার ৯৩৩ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং ৪৫ হাজার ৮৬৬ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করার পর তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিভাগের ৩৩টি আসনের মধ্যে রংপুর-৩ (সদর-আংশিক সিটি করপোরেশন) আসনে ভোটগ্রহণের জন্য ইলেক্ট্রনিক্স ভোটিং মেশিন-ইভিএম এবং বাকি ৩২টি আসনের জন্য স্বচ্ছ ব্যালটবক্স, ব্যালট পেপার, সিলসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে।
শনিবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলের আগেই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে যাবেন। এছাড়াও এসব ভোটকেন্দ্রের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।
রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী রংপুর বিভাগের আটটি জেলার ৩৩টি আসনের ৫৪টি উপজেলায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে ৪ হাজার ৪৯২টি কেন্দ্রের প্রতিটিতে ১ জন করে ছাড়াও প্রায় ১ হাজার ৫শ’ ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে আরও অতিরিক্ত ১ জন করে সর্বমোট ৫ হাজার ৯৯২ জন অস্ত্রধারী পুলিশ, প্রতিটি কেন্দ্রে অস্ত্রসহ একজন আনসার এবং অস্ত্র-লাঠিসহ ৬ জন পুরুষ এবং ৪ জন মহিলা আনসারসহ সর্বমোট ৪৯ হাজার ৪১২ জন এবং প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে মোট ৪ হাজার ৪৯২ জন গ্রাম পুলিশ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও এ বিভাগের রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ড, ২৭টি পৌরসভার ২৪৩টি ওয়ার্ড এবং ৫৮টি উপজেলার ৫৩৬টি ইউনিয়নে মোট ৮১২টি ওয়ার্ড/ইউনিয়নে প্রায় ২ হাজার ৩০ জন সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ২টি ওয়ার্ড/ইউনিয়ন মিলে একটি করে গাড়িতে ৫ জন সেনা সদস্য সশস্ত্র অবস্থায় মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও প্রতিটি সিটি/পৌরসভা/ উপজেলায় বিজিবির ৩ প্লাটুন করে মোট ৮৬ প্লাটুন বিজিবির মোট ৮ হাজার ৮৬০ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যারা প্রতিটি সিটি/পৌরসভা/উপজেলায় ৫ ভাগে বিভক্ত হয়ে মাঠে থাকবেন। এছাড়াও এ বিভাগে প্রায় ১ হাজার ২০৪ জন র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যারা প্রতিটি সিটি, পৌরসভা ও উপজেলায় ১৪ জন করে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে রয়েছে। আইন-শৃঙ্খখলা বাহিনীর এসব স্ট্রাইকিং ফোর্সকে পরিচালনা এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনার জন্য ৩টি করে ইউনিয়ন/ওয়ার্ড মিলে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে ২৭০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যেই এ বিভাগে ৭১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৭১টি ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা শনিবার থেকে ১ জানুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত মাঠে কাজ করবে। এ সময়ে তারা নির্বাচনী অপরাধসমূহ ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৮৮৯ এর সেকশন ১৯০ এর সাব সেকশন ১ এর অধীনে আমলে নিয়ে সংক্ষিপ্ত বিচার পরিচালনা করবেন। এছাড়াও এ বিভাগে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে নির্বাচন পূর্ব ও পরের অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে ১৪টি নির্বাচনী তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যাদের দায়িত্বে আছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার যুগ্ম ও জেলা দায়রা জজ এবং সহকারী জজ মর্যাদার বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা।
রংপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহাতাব উদ্দিন বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সজাগ রয়েছে। আশা করছি ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
রংপুর বিভাগের ৩৩টি সংসদীয় আসনে এবার ভোটের মাঠে রয়েছেন ২১৫ জন প্রার্থী। এরমধ্যে সবগুলোতেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকা, ধানের শীষ ও লাঙ্গলের মধ্যে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৮
এসএইচ