ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৮
ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা চলছে ভোট গণনা, ছবি: উজ্জ্বল ধর

ঢাকা: প্রার্থীদের ভোট বর্জন ছাড়াও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এখন চলছে ভোট গণনার প্রক্রিয়া। কোনো কোনো কেন্দ্রে ইতোমধ্যে গণনা শুরু হয়ে গেছে। এরপর শুরু হবে ফল ঘোষণা। 

এবার জাতীয় সংসদের ২৯৯ আসনে একযোগে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ কার্যক্রম বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে।

ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেয়েছেন ১০ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার ৫৭৩ জন ভোটার।  

ভোটকেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতিও ছিলো লক্ষ্যণীয়। তবে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতার ঘটনায় কমপক্ষে ১০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া ভোটগ্রহণ চলাকালে দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অনেকে।  

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতায় গত রাত থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের ১০ জন কর্মী নিহত ও ৫০ জন আহত হয়েছেন। বিশৃঙ্খলা করতে তারা (বিএনপি-জামায়াত) অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে তা হয়নি।  

এদিকে ভোটে কারচুপি, এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেছেন বিএনপির বেশ কয়েকজন প্রার্থী। বিবৃতি দিয়ে ভোট থেকে সরে গেছে ধানের শীষে নির্বাচন করা জামায়াতও।  

নয়াপল্টনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘গত রাত থেকে নির্বাচন পরিস্থিতি দেখে পরিষ্কার বলা যায় সরকার একতরফা নির্বাচন করছে। এটা একটা সহিংস নির্বাচন। মানুষ যাচ্ছে কিন্তু ভোট দিতে পারছে না। ’

এদিকে ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে গাইবান্ধা-৩ আসনের একজন প্রার্থী মৃত্যুবরণ করায় সেখানে নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরে ২৭ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করেছে ইসি।  

এজন্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এক সঙ্গে ২৯৯ আসনের ভোটের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার গঠিত হবে। যে দল বা জোট ১৫১ আসন পাবে, সেই দল বা জোটই পরবর্তী সরকার গঠন করবে।

এবার নির্বাচনে ৩৯টি নিবন্ধিত দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে মোট এক হাজার ৮৬১ জন প্রার্থী নির্বাচনে লড়ছেন। এর মধ্যে দলীয় প্রার্থী এক হাজার ৭৩৩ জন। আর ১২৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী।

নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব (নির্বাচন পরিচালনা শাখা) ফরহাদ আহাম্মদ খান জানান, আওয়ামী লীগ ও শরিকদের মিলিয়ে নৌকা মার্কায় ২৭২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বিএনপি ও তাদের শরিক দলের ২৮২ প্রার্থী।  

আর সবচেয়ে বেশি প্রার্থী রয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের। হাতপাখা প্রতীকে দেশজুড়ে ২৯৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে এই দলটি।

এবারই প্রথমবারের মতো ছয়টি আসনে ইভিএমে ভোট হচ্ছে। ইভিএমে ভোট হবে ঢাকা-৬, ঢাকা-১৩, চট্টগ্রাম-৯, রংপুর-৩, খুলনা-২ ও সাতক্ষীরা-২ আসনে। এসব আসনে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল পাওয়ার কথা জানিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা।

তবে ব্যালটে ভোট হওয়া আসনগুলোর ফল পেতে কিছুটা সময় লাগবে। অবশ্য নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আশা করছেন, রাত ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে পরবর্তী সরকার কারা গঠন করছে, সে সম্পর্কে জানতে পারবে সাধারণ মানুষ।

আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বলেছেন, নৌকার জয় হবেই।

আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন ভিকারুননিসা নূন কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদেরই জয় হবে।

আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া এবার ভোট ভালোই হয়েছে।

ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে ৬ লাখ ৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, কোস্টগার্ড, বিজিবির সদস্যরা রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৮
ইইউডি/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।