ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

উন্নত ঢাকা গড়তে তাপসের পাঁচ পরিকল্পনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২০
উন্নত ঢাকা গড়তে তাপসের পাঁচ পরিকল্পনা

ঢাকা: উন্নত ঢাকা গড়তে পরিকল্পনা করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। দীর্ঘদিন ঢাকার একটি সংসদীয় এলাকা জনগণের জন্য কাজ করলেও এবার বৃহত্তর পরিসরে কাজ করতে চান বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে যুবলীগ আয়োজিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভায় এসব কথা বলেন তাপস।

শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আমার মনোনয়ন চাওয়ার কারণ দীর্ঘদিন আমি ঢাকা-১০ এলাকার জনগণের জন্য কাজ করেছি।

এবার বৃহত্তর পরিসরে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে। শেখ হাসিনার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনায় ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হবে। সেই জন্য উন্নত রাজধানীও দরকার। সেই উন্নত রাজধানী হলো আমাদের গর্বের, আমাদের প্রাণের শহর ঢাকা। সেই ঢাকাকে উন্নত করার লক্ষ্যেই আমি ডিএসসিসির নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছি। এখন সময়ে হয়েছে আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর, সময় হয়েছে নব সূচনার, নতুন পথে যাত্রা শুরু করার। আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী যেভাবে সারাদেশের জন্য কাজ করে চলেছেন, এখন দরকার ঢাকার উন্নয়নে যোগ্য, সঠিক নেতৃত্ব নিয়ে ও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করা। সেইলক্ষ্যে আসন্ন নির্বাচনে আমাদের এ সুযোগটা কাজে লাগাতে হবে। কারণ অনেক সময় পেরিয়ে গেছে। অনেক অবহেলা ও গাফিলতিতে ঢাকা একটি অপরিকল্পিত নগরী হয়ে গেছে। ঢাকা একটি দুষণে আক্রান্ত নগরী হয়ে গেছে। যেই ঢাকাকে নিয়ে গর্ববোধ করি, যে ঢাকার আকাশ-বাতাস আমাদের প্রাণ দেয়, আমাদের চলার সঙ্গে। যে ঢাকাতে আমরা পরিবার নিয়ে থাকি, সন্তানরা বড় হচ্ছে, আমাদের রুটি-রুজি সবকিছু করি। সেই ঢাকাকে আমরা মরতে দিতে পারি না। এ ঢাকাকে আমাদের বাঁচিয়ে তুলতে হবে, পুনরুজ্জীবিত করতে হবে এবং সেই ঢাকাকে উন্নত ঢাকা বিনির্মাণ করতে হবে।

এজন্য আমাদের পরিকল্পনাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছি।

প্রথম: আমাদের ঐতিহ্যের ঢাকা
দু’টি নদীর অববাহিকতা অবস্থিত ঢাকার ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করে পুনরুজ্জীবিত করবো। শুধু ঢাকাবাসীর কাছে নয়, সারাবিশ্বের কাছে ঢাকার ঐতিহ্যকে প্রস্ফুটিত করে তুলে ধরবো।

দ্বিতীয়: আমাদের সুন্দর ঢাকা
ঢাকাকে আমরা বায়ুদূষণমুক্ত করবো, সবুজায়ন করবো, প্রতিটি ওয়ার্ডে ছেলে-মেয়েদের জন্য পর্যাপ্ত খেলার মাঠ, পার্কের ব্যবস্থা করবো। মা-বোন ও মুরুব্বিদের জন্য হাটার ব্যবস্থা করবো।

তৃতীয়: আমাদের সচল ঢাকা
রাজধানীর এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় যেতে নাভিশ্বাস উঠে যায়। আমরা জানি না কোনদিন কোন সময় গন্তব্যে পৌছাবো। সকাল থেকে রাত অবধি বাড়ি ফেরার জন্য একটি সংগ্রামে লিপ্ত হতে হয়। সেই ঢাকাকে আমরা সচল ঢাকা হিসেবে রূপান্তরিত করবো। এজন্য আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী মেট্রোরেলের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন।

মেট্রোরেলের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হবে না। যাতায়াত ব্যবস্থার গণপরিবহনকে পুনঃবিন্যাস করে সচল ঢাকায় রূপান্তরিত করতে যেখানে বাস, ট্যাক্সি, রিকশার ব্যবস্থা থাকবে। হেঁটে হেঁটে পাড়ি দিবো আবার হয়তো ঘোড়ার গাড়িতে চড়বো। সব নাগরিকের জন্য যানবাহন থাকবে। তারা সিদ্ধান্ত নেবে তারা ব্যবহার করবে। দ্রুত গতির যানবাহন ব্যবহার করে গন্তব্যে যাবে নাকি রিকশায় চড়ে ঢাকা ঘুরে বেড়াবে। এসব নাগরিক সুবিধা দিয়ে আমরা ঢাকাকে সচল রাখবো।

চতুর্থ: আমাদের সুশাসিত ঢাকা 
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে ঢাকার অভিভাবকত্ব নিয়ে আমরা দুর্নীতিমুক্ত হয়ে একমাত্র শায়ত্বশাসিত সংস্থা হিসেবে সুবিন্যাসিত ঢাকা গড়ে তুলবো। সুশাসিত ঢাকার আওতায় রাজধানীবাসীর সব মৌলিক নাগরিক সুবিধা তাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবো। আগামী ৫ বছরের ৩৬৫ দিন, সপ্তাহের ৭দিন, দিনের ২৪ ঘণ্টা যাতে ডেঙ্গু আক্রান্ত না হয় সেভাবে সুশাসিত ঢাকা গড়ে তুলবো। সুশাসিত ঢাকায় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা কায়েম করে সামাজিকব্যাধি মাদক নির্মূল করবো। এলাকার মুরুব্বি, বিশিষ্ট, বিখ্যাত, খ্যাতনামা শিক্ষিত ও গুণি ব্যক্তিরা পঞ্চায়েত কমিটির মাধ্যমে এলাকার সমস্যাগুলো সমাধান করবে।

আজকে যখন দেখি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের বোন ধর্ষিত হয়েছে। তখন আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। এমন নিরাপদ ব্যবস্থা তৈরি করবো যাতে আমাদের বোনেরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে।

পঞ্চম: উন্নত ঢাকা
উন্নত ঢাকার জন্য থাকবে ৩০ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা। প্রত্যেকটি রাস্তা উন্নয়ন, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাসহ আধুনিক ব্যবস্থাগুলো আমরা গড়ে তুলবো। প্রত্যেকটি নির্মাণের স্থায়ীত্ব হবে কমপক্ষে ১০ বছর। এসব কাজের জন্য ঠিকাদার আমাদের কাছে দায়বদ্ধ থাকতে হবে। আইন ও নিয়মনীতি মেনে কাজ করতে হবে। সিটি করপোরেশন রাস্তা নির্মাণ করার অন্তত তিনবছর রাস্তা নষ্ট করতে পারবে না। আমরা দেখি, তিনমাসের মাথায় রাস্তা নষ্ট হয়ে যায়। এভাবে রাস্তা নষ্ট করতে দিতে পারি না।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু। আরও বক্তব্য দেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২০
এসই/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।