ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই, ভোট ডাকাতির ফিল্ড তৈরি হচ্ছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২০
‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই, ভোট ডাকাতির ফিল্ড তৈরি হচ্ছে’

ঢাকা: আসন্ন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘিরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই, ভোট ডাকাতির ফিল্ড তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেন।  

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁও ত্রিমোহনী বাজার এলাকায় গণসংযোগ শুরুর প্রাক্কালে এসব কথা বলেন ইশরাক হোসেন।  

বিএনপির এ মেয়রপ্রার্থী বলেন, আমি বার বার বলছি এটা কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না।

একটা ভোট ডাকাতির ফিল্ড তৈরি হচ্ছে। একতরফা ফিল্ড তৈরি হচ্ছে।

‘আমাদের পোস্টার ছিড়ে ফেলা হচ্ছে। যারা পোস্টার লাগাতে যাচ্ছে, তাদের মারধর করা হচ্ছে। এমনও হুমকি দেওয়া হচ্ছে, আবার পোস্টার লাগাতে আসলে পুলিশে দেবে। পোস্টার লাগানো কি অপরাধ? এটা অপরাধ নয়। তাহলে কেন পুলিশে দেবে? আপনারা জানেন, দেশে কী চলছে। নতুন করে ব্যাখ্যা দেওয়ার কিছু নেই। দেশে স্বৈরশাসন, অপশাসন চলছে। একটা ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। ’

ক্ষমতাসীন সরকারের সমালোচনা করে ইশরাক বলেন, আমরা এসব কথা বললে সরকারি দলের নেতারা বলেন, আমরা অভিযোগের দল, নালিশ পার্টি। সুতরাং আমরা আর অভিযোগ করতে চাই না, আমরা বলতে চাই, জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। আমরা জনগণের শক্তি নিয়ে দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে যাব। কারও কোনো বাধা আমরা মানবো না, কোনো নালিশ কাউকে দেবো না। আল্লাহ উপরে আছেন, উনি দেখছেন। আর নীচে জনগণ আছে। জনগণই আমাদের শক্তি।

ইশরাক আরও বলেন, আপনারা জানেন গত ১৩ বছর ধরে দেশকে তিলে তিলে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। দেশে গণতন্ত্র নাই, কারও কথা বলার অধিকার নাই। উন্নয়নের নামে ধুয়া তোলা হচ্ছে। অথচ কোনো উন্নয়ন নাই। ঢাকা আজকে সবচেয়ে দূষিত শহর, বসবাসের সবচেয়ে অযোগ্য শহরের তালিকায় এক নম্বরে। আমি এখানে যে রাস্তা দিয়ে এসেছি এই রাস্তার যে অবস্থা, দুই পাশের যে জলাশয়গুলো রয়েছে সেগুলোর করুণদশা দেখলাম। অথচ সরকার বলছে, তারা অনেক উন্নয়ন করেছে, তারা স্যালেটাইট পাঠাচ্ছে। অমুক সেতু, তমুক সেতু। এগুলো সব দুর্নীতির মেগা প্রজেক্ট। প্রতিটি মেগা প্রজেক্ট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। আর দেশের সাধারণ জনগণের দুর্দশা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হলে এ পরিস্থিতি নিরসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইশরাক হোসেন বলেন, আমি আপনাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করতে চাই, যদি ৩০ তারিখে আপনারা ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেন, তাহলে আপনাদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো। আমি আমার রক্ত দিয়ে হলেও এই এলাকার উন্নয়ন করবো। সব সময় আপনাদের পাশে থাকবো।

‘এটা শুধু ধানের শীষের লড়াই নয়, এটা জনগণের অধিকার আদায়ের লড়াই। সেই লড়াইয়ে আপনারা সবাই শরিক হবেন। আপনারা ৩০ জানুয়ারি সবাই ভোটকেন্দ্রে যাবেন, যার যার ভোট নিজে দেবেন এবং আপনাদের বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে আনবেন। ’  

ঢাকা দক্ষিণে নতুন ওয়ার্ডের বিষয়ে এ মেয়রপ্রার্থী বলেন, এসব এলাকার উন্নয়নের জন্য আমার ব্যাপক পরিকল্পনা আছে। আমি আমার ইশতেহারে তা উল্লেখ করবো। আপনারা জানেন, সরকার শহরের ভেতরের ওয়ার্ডগুলোর দিকেই নজর দেয় না। এগুলোতো আরও দূরের কথা। যেহেতু তাদের জনগণের দরকার নেই, জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতাও নেই। তারা পুলিশি শক্তি ব্যবহার করে ক্ষমতায় আছে। এসবে তারা কোনো কর্ণপাত করে না। শেষ কথা হলো, সব অপশক্তিকে জনগণকে সঙ্গে নিয়েই আমরা প্রতিহত করবো। জনগণের বিজয় যুগে যুগে হয়ে এসেছে। আমাদেরও বিজয় আসবেই।  

এসময় তিনি ত্রিমোহনী এলাকার কাউন্সিলর প্রার্থী আকবর হোসেনের জন্য ঘুড়ি মার্কায়ও ভোট প্রার্থনা করেন।  

একই সঙ্গে কারাবন্দি দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ারও মুক্তি দাবি করেন বিএনপির এ মেয়র প্রার্থী।  

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ তার সঙ্গে ছিলেন।

ত্রিমোহনী বাজার এলাকার পর ইশরাক হোসেন একে একে খিলগাঁও, সবুজবাগ, মুগদা থানার ৩, ৪, ৫, ৭, ৭১, ৭১, ৭৩, ৭৪ ও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করবেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২০
এমএইচ/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।