ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

শুনানিতে নির্ধারণ হচ্ছে পিডিপি’র ভবিষ্যৎ

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২০
শুনানিতে নির্ধারণ হচ্ছে পিডিপি’র ভবিষ্যৎ

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক তথ্য সরবরাহ না করায় নিবন্ধন হারাতে বসেছে ড. ফেরদৌস আহমদ কোরেশীর দল ‘প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি’ (পিডিপি)। এক্ষেত্রে ৩ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) অনুষ্ঠেয় শুনানিতে নির্ধারণ হবে দলটির ভবিষ্যৎ।
 
 

ইসি সূত্র জানিয়েছে, ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পর দলগুলোকে কেন্দ্রীয় কমিটিসহ কেন্দ্রীয় দফতর ও সব দফতরের তথ্য চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সে অনুযায়ী সময়মতো তথ্য দিতে ব্যর্থ হয় পিডিপি।

এরপর দফায় দফায় সময় বাড়ানো হলে যে তথ্য দেয় দলটি, তারও কোনো ভিত্তি খুঁজে পায়নি নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। তাই দলটির নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন।
 
জানা গেছে, ইসির চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে দলটির দাখিলকৃত তথ্য অসম্পূর্ণ বিধায় পূর্ণাঙ্গ তথ্য জমা দেওয়ার জন্য ১০ দিন সময় দিয়ে ২০১৯ সালের ২০ আগস্ট চিঠি দেওয়া হয়। ২৯ আগস্ট আরও দুই মাস সময় চেয়ে আবেদন করে পিডিপি। সে আবেদন আমলে নিয়ে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ও বাড়ায় কমিশন।
 
প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি ২৯ অক্টোবর পূর্ণাঙ্গ তথ্য জমা দেয়। কিন্তু জমা দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কমিটিসহ কেন্দ্রীয় দফতর এবং জেলা ও উপজেলা দফতরের অস্তিত্ব ও কার্যকারিতা যাচাই করে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালার শর্তানুযায়ী কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সক্রিয় কেন্দ্রীয় দফতর এবং জেলা ও উপজেলা দফতরের কার্যকারিতা ও অস্তিত্ব পায়নি কমিশন।
 
যে কারণে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা-২০০৮ এর বিধি ৯ অনুযায়ী এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ এর ৯০বি(১)(৩) এর শর্ত প্রতিপালনে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি ব্যর্থ হওয়ায় রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা বিধি-১০ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

তবে শেষ সুযোগ হিসেবে শুনানিতে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে চায় নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। সে অনুযায়ী কমিশন দলটিকে চিঠি দিলে গত ৫ জানুয়ারি শুনানিতে অংশ নেওয়ার জন্য আবেদন করে পিডিপি। আর সেই আবেদন আমলে নিয়ে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি শুনানির জন্য সময় দেয় কমিশন।

আরও পড়ুনইসির ফাঁদে কোরেশীর ‘বাঘ’ 

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন পাওয়ার অন্যতম শর্ত হলো- দলটির সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকতে হবে, তিনের এক ভাগ জেলায় এবং ন্যূনতম ১০০টি উপজেলা, থানা বা মেট্রোপলিটনে কার্যালয় থাকতে হবে। প্রতিটি অফিসে ২০০ ভোটার সদস্য থাকতে হবে।
 
এসব দাখিল করে কোনো দল নিবন্ধন পেলে কমিটি সময় সময় পরিবর্তিত তথ্য চাইলে তা দলগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে জমা দিতে হয়। তা না দিলে কিংবা অসত্য তথ্য দিলেও নিবন্ধন বাতিলের ক্ষমতা রাখে নির্বাচন কমিশন। পিডিপি’র ক্ষেত্রে এই ক্ষমতাই প্রয়োগ করছে সংস্থাটি।
 
শুনানিতে অংশ নেওয়ার জন্য দলটির কো-চেয়ারম্যান নিলুফার পান্না কোরেশী এবং মহাসচিব এম এ হোসেনকে রোববার (১৯ জানুয়ারি) চিঠি পাঠিয়েছেন ইসির উপ-সচিব মো. আব্দুল হালিম খান।
 
এতে বলা হয়েছে- ‘আপনার প্রেরিত ৫ জানুয়ারি ২০২০ তারিখের পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল-পিডিপি নামীয় দলের নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখ বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন ভবন, আগাঁরগাও, ঢাকায় শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। ’
 
প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল-পিডিপি নামীয় দলের নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে শুনানিতে যথা সময়ে উপস্থিত থাকার জন্য বলেছে নির্বাচন কমিশন।
 
দলটির প্রতীক ‘বাঘ’। এক-এগার’র সরকারের সময় যা পরিচিত ছিল ‘কিংস পার্টি’ নামে। ২০০৭-২০০৮ সালে মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নে জন্য ‘কিংস পার্টি’ নামের দলটিই দেশব্যাপী আলোচিত হয়েছিল।
 
২০০৮ সালের ১৩ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনে ২৬ নম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পায় প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি। পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলোতেও অংশগ্রহণ করে। তবে কোনো নির্বাচনেই তেমন সুবিধা করতে পারেনি।
 
বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে ৪১টি রাজনৈতিক দল আছে। পিডিপি’র নিবন্ধন বাতিল হলে সে সংখ্যা কমে ৪০টি হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২০
ইইউডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।