ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে নেমেছি: সাজেদা আলী হেলেন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০২০
আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে নেমেছি: সাজেদা আলী হেলেন

ঢাকা: বিএনপি নেত্রী সাজেদা আলী হেলেন দীর্ঘদিন নারী কাউন্সিলর ছিলেন। এবার ঢাকা উত্তর সিটির ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে দলের সমর্থন পেয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর মীরবাগে তার নিজ বাড়িতে বাংলানিউজ প্রতিনিধির সঙ্গে নির্বাচন ও এলাকার উন্নয়ন নিয়ে তার ভাবনার কথা বলেন। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন বাংলানিউজেস্পেশাল করেসপন্ডেন্ট মহসিন হোসেন

পাঠকদের জন্য তার বক্তব্য তুলে ধরা হলো-
 
বাংলানিউজ: আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আপনি ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কেন নির্বাচন করছেন সে বিষয়ে কিছু বলেন।
 
সাজেদা আলী হেলেন: আমরা আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে নেমেছি। আপনারা জানেন আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন কারাগারে। গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করেই তাকে মুক্ত করতে হবে। আমাদের দলের প্রচুর জনসমর্থন রয়েছে। আশা করি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমাদের উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও আমাকে কাউন্সিলর পদে এলাকাবাসী বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবে।
 
বাংলানিউজ: অনেক পুরুষ প্রার্থীর মধ্যে ৩৬ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডে আপনি কিভাবে মনোনয়ন পেলেন?
সাজিদা আলী হেলেন: জন্মলগ্ন থেকে আমি বিএনপির সাথেই আছি। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় রাজপথে সবসময় সক্রিয় ছিলাম। ২০০২ সালে আমাকে প্রথম যখন সংরক্ষিত নারী আসনে বিএনপি মনোনয়ন দেয় তখন একটানা ৯ বছর কাউন্সিলর হিসেবে এই ওয়ার্ডে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করি। এই ওয়ার্ডের মানুষের সাথে আমার জন্মসূত্রে একটা সম্পর্ক। এই ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডেই আমার জন্ম। এই ওয়ার্ডের ধুলাবালিতে আমি বেড়ে উঠেছি। এই ওয়ার্ডের সাথে আমার একটা নাড়ীর সম্পর্ক। আমি আমার দলের কাছে আস্থা অর্জন করতে পেরেছি। আমাকে পুরুষ ভাইদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নারীর ক্ষমতায়নের একটা পথ সুগম করে দিয়েছে। আমাকে সাধারণ কাউন্সিলর আসন ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে মনোনীত করেছে। আমি এজন্য আমার দলের নেত্রী খালেদা জিয়া ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের সকল পর্যায়ের নেতাদের ধন্যবাদ জানাই।
 
বাংলানিউজ: আপনি বললেন, এই ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডই আপনার জন্মস্থান। তো আগামীতে নির্বাচিত হলে এই ওয়ার্ডের ভোটার ও জনগণের জন্য কী করার পরিকল্পনা আছে?
 
সাজেদা আলী হেলেন: ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের নির্ধারিত কাজগুলি করতে হয়। যেমন রাস্তাঘাট, জলাবদ্ধতা, পয়ঃনিষ্কাশন, স্যুয়ারেজ লাইনের কাজ, ময়লা আবর্জনা সুব্যবস্থা করা। তবে বিশেষ করে আমার যে কাজগুলি করার ইচ্ছা সেটা হলো- আমার এলাকার রাস্তাগুলি খুব সরু। সেগুলো প্রশস্ত করা। অলিগলিতে মাদকের যে রমরমা ব্যবসা সেগুলো মূল থেকে উৎখাত করা। মশার ভয়াবহতা বিস্তার করছে, সে ব্যাপারে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া। এসব নাগরিক যে জঞ্জাল বর্তমানে বিরাজ করছে সেখান থেকে তাদেরকে স্বস্তিতে আনা। বয়স্কদের জন্য হাঁটার জায়গা করে দেওয়া। সকাল সন্ধ্যায় তারা যেন মুক্ত পরিবেশে হাঁটতে পারে সে ব্যবস্থা করা। অল্প বৃষ্টি হলেই এখানে জলাবদ্ধতা হয়ে যায়, সেটার সুব্যবস্থা করা। এসব কাজই আমার পরিকল্পনায় আছে।
 
বাংলানিউজ: বর্তমানেতো আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে। আপনি জয়ী হলে এ কাজগুলি কি করতে পারবেন?

সাজেদা আলী হেলেন: এলাকাবাসীর প্রতি যদি ভালবাসা থাকে, আর করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে দিয়েও কাজ করা যায়। গত বারে সংরক্ষিত আসনে থেকে আমি যেহেতু তিন/চারটা নতুন রাস্তা করতে পেরেছি। পুরুষ কাউন্সিলর ভাইদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। যত প্রতিবন্ধকতাই থাক না কেন, আমি কাজ করতে পারবো বলে আশা করি।

বাংলানিউজ: আপনার ওয়ার্ডে কি আপনার দলের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী আছে? না থাকলে অন্য কোন কোন দলের প্রার্থী আছে? তাদের ব্যাপারে আপনার মূল্যায়ন কী?

সাজেদা আলী হেলেন: জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সমর্থিত আমি একমাত্র প্রার্থী হিসেবে আছি। আর আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আরও ৩ জন প্রার্থী আছেন। তারমধ্যে দুজন আওয়ামী লীগ করেন আর একজন জাতীয় পার্টির। আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে বলতে চাই, প্রার্থী কাউকে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। আমি কাউকে ছোট করে দেখছি না। সবাই যার যার জায়গা থেকে যোগ্য। আর যোগ্য বলেই তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সরকারি দলের যে প্রার্থী তার সম্পর্কে বলার আছে। তাদের যে অরাজকতা বিগত দিনে দেখেছি। লুটপাট, এলাকায় ভূমি দখল। চাঁদাবাজি, মাদকের ব্যবসা। ক্ষমতার দাপট। এগুলিতো এলাকার জনগণ দেখেছে। আশা করি জনগণ এসব মূল্যায়ন করেই যাকে পছন্দ হবে ভোট দেবেন।
 
বাংলানিউজ: আপনার নিজের ব্যাপারে বলেন।

সাজেদা আলী হেলেন: আমার বিশ্বাস আমার বিগত সময়ের কাজের মূল্যায়ন করে এলাকার মেয়ে হিসেবে তারা আমাকে বঞ্চিত করবেন না।
 
বাংলানিউজ: ভোটের মাঠে শেষ পর্যন্ত থাকবেন তো?

সাজেদা আলী হেলেন: যদি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন হয়, জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবদী। আর সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ভোট গণনা পর্যন্তই ভোটের মাঠে থাকার ইচ্ছা আছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২০
এমএইচ/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।