ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

‘ইসির অভ্যন্তরেই কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২০
‘ইসির অভ্যন্তরেই কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই’

ঢাকা: জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের অভ্যন্তরেই কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। আমার বক্তব্য প্রদানের স্থান সংকুচিত হয়ে পড়েছে।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের যেভাবে দায়িত্ব পালন করা প্রয়োজন, তা হচ্ছে না।

উক্ত নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণার পর থেকে আজ পর্যন্ত যে ৩টি কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হয়, তার কোনোটিতে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আচরণবিধি, অনিয়ম বা প্রার্থীদের অভিযোগ সম্পর্কে কোনো আলোচনা হয়নি এবং কোনো কমিশন সভায় এসব বিষয় এজেন্ডাভুক্ত হয়নি।

মাহবুব তালুকদার বলেন, আগামী ২৮ জানুয়ারি যে নির্বাচন কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তাতেও ঢাকা সিটি করপোরেশন সম্পর্কে কোনো বিষয় এজেন্ডাভুক্ত নয়। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পর্কে আমি বিগত ৯, ১৩, ১৬ ও ২০ জানুয়ারি যে ৪টি ইউ ও নোট প্রদান করেছি, তা রীতিমত উপেক্ষা করা হয়েছে এবং আমলে নেওয়া হয়নি। এসবের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কোনো আলোচনা হয়নি বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গৃহীত হয়নি। যদি আমার বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য হয়, তাহলেও আমাকে তা জানানো উচিত ছিল।

‘১৬ জানুয়ারি প্রদত্ত ইউ, ও নোটের মাধ্যমে কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব ও ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দুই রিটার্নিং অফিসারের কাছে আমি প্রার্থীদের বিভিন্ন অভিযোগ সম্পর্কে তথ্যাদি জানাতে বলেছিলাম। এসব অভিযোগের বিষয়ে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ২০ জানুয়ারির মধ্যে আমার কাছে পেশ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার সেই নির্দেশ উপেক্ষিত হয়েছে। কোনো তথ্যই আমাকে সরবরাহ করা হয়নি। ’

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর পক্ষ থেকে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পর্কে যে সব অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে বা অভিযোগেপত্র প্রেরিত হয়েছে, তা নিয়ে কমিশনে কোনো প্রকার আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এসব অভিযোগের পেছনে যে অসন্তোষ আছে, তা বিস্ফোরিত হলে সিটি করপোরেশন নির্বাচন যথোপযুক্তভাবে অনুষ্ঠিত হবে না, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এর দায়ভার নির্বাচন কমিশনকে বহন করতে হবে।

‘নির্বাচন কমিশন সভায় আমার প্রস্তাব বা সুপারিশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে অগৃহীত হয়। আমাকে সংখ্যালগিষ্ঠ হিসেবে না দেখে আমার বক্তব্যের বিষয়বস্তুর মেরিটকে বিবেচনায় নেওয়া সমীচীন বলে মনে করি। আমার ধারণা কমিশন সভায় আমার বক্তব্য প্রদানের স্থান সংকুচিত হয়ে পড়েছে। নির্বাচন কমিশনের অভ্যন্তরেই কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। আমরা নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করতে চাই। আমাদের কর্মকান্ডে তা দৃশ্যমান হওয়া বাঞ্ছনীয়। ’

বক্তব্য প্রদানের স্থান সংকুচিত হওয়ায়, কোনো সিদ্ধান্তের (পদত্যাগ) দিকে যাচ্ছেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সময়ই বলে দেবে কী করবো।

একটি দলের পারপাস সার্ভ করার জন্য বসেছেন এবং আপনার পদত্যাগ করা উচিত বলে দাবি করেছে সরকারের ভেতর থেকে-এ বিষয়ে আপনি কী বলবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে কেউ যেকোনো কিছু বলতেই পারেন। যেকোনো তকমা আমার পেছনে লাগানো হতে পারে। কিন্তু যারা আমার অতীত ইতিহাস জানেন, তারা কখনোই বলবেন না-আমি কোনো নির্দিষ্ট দলের। আর আমি যে মুহূর্ত থেকে এই চেয়ারে বসেছি, সে সময় থেকে আমি কোনো দলের নই। আমার সঙ্গে কোনো মতবাদের সম্পর্ক নেই। আমি আমার বিবেক দ্বারা পরিচালিত। যারা আমাকে নিয়ে রঙ ধরাতে চান, এটা তাদের রাজনৈতিক একটা বিষয় হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২০
ইইউডি/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।