ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

আড়াই হাজার টন ভোটবর্জ্য, নীতিমালার তাগিদ মুক্তিফোরামের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২০
আড়াই হাজার টন ভোটবর্জ্য, নীতিমালার তাগিদ মুক্তিফোরামের

ঢাকা: সদ্য সমাপ্ত ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে ভোটবর্জ্য সৃষ্টি হয়েছে আড়াই হাজার টন। যার মধ্যে সরাসরি প্লাস্টিক বর্জ্য ২ হাজার ৪৭০ টন। তাই ভবিষ্যতে যাতে এমন অবস্থার সৃষ্টি না হয়, সেজন্য নির্বাচন কমিশনকে নীতিমালা প্রণয়নের তাগিদ দিয়েছে মুক্তিফোরাম নামের একটি সংগঠন।

সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সংগঠনটির নেতারা নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিখিত দাবি জানান। বৈঠক থেকে বেরিয়ে মুক্তিফোরামের সংগঠক আসিফ আদনান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা প্লাস্টিকহীন নির্বাচনী প্রচারণা নিশ্চিতে নীতিমালা চেয়েছি।

কমিশন বৈঠকে বিষয়টি আলোচনা করবেন বলে রফিকুল ইসলাম আশ্বাস দিয়েছেন।

তিনি বলেন, এই নগরে এমনিতেই জঞ্জালে ভরা। আর যেভাবে পোস্টারগুলো প্লাস্টিকে মোড়ানো হয়েছে, এতে পরিবেশের আরও ক্ষতি হবে। এটা থেকে রক্ষা পেতে একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন।

লিখিত আবেদনে মুক্তিফোরাম উল্লেখ করেছে- ‘স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে যেকোনো দেশেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই নির্বাচনকে আরো অর্থবহ করে তোলে বহুজনের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ। অনেকের অংশগ্রহণে সবাই চায় নিজেকে তুলে ধরতে। প্রয়োজন হয় প্রচারের। আর তার প্রধান নিয়ামক পোস্টার। যার আলোকে ২০২০ সালের ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্লাস্টিকে মোড়ানো পোস্টারের বহুল ব্যবহার হয়। যা নির্বাচন পরবর্তী ২ হাজার ৫০০ টন বর্জ্যের কারণ। যার মধ্যে ২ হাজার ৪৭২ টন সরাসরি প্লাস্টিক বর্জ্য। ’

‘যেকোনো পরিবেশ সচেতন মানুষের চিন্তার উদ্রেক ঘটাতে যথেষ্ট। উদ্বেগের কারণ হিসেবে গত ২২ জানুয়ারি পলিথিনে মোড়ানো পোস্টার লাগানো কেন বেআইনি নয়, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন আদালত। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের পলিথিনে মোড়ানো পোস্টার লাগানোর বিষয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি এম এনায়েতুল রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বিত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। ’

‘অথচ শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশনকে এ ব্যাপারে একদমই নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। নির্বাচন শেষে পোস্টার সরিয়ে ফেলাই যে সমাধান নয় বরং যেখানে প্রতিটি দেশ, রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদনে নিরুৎসাহিত করছে সেখানে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কার্যকর সময়ে এমন নীরব ভূমিকা পরোক্ষভাবে প্লাস্টিক দূষণের জন্য দায়ী। এ দায় নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে। ’

‘শুধু তাই নয়, ২ ফেব্রুয়ারি রোববার নির্বাচন কমিশন ইসি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুনসহ অন্যান্য প্রচার সামগ্রী সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ক্যাম্প সরানোর নির্দেশ রয়েছে স্বয়ং প্রার্থীদের উপর। কিন্তু প্লাস্টিক পোস্টারের নিরসনে শুরু থেকে শেষ সেরকম আক্ষরিক কোনো পদক্ষেপ নেয়নি এ নির্বাচন কমিশন। ’

‘যেহেতু নির্বাচন কমিশনের এ বিষয়ক কোনো সুস্পষ্ট নীতিমালা নেই। সেইসঙ্গে হাইকোর্টের রুল জারি হওয়ার এতোদিন পরও যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাছাড়া হাইকোর্ট সেখানে ওয়ান টাইম প্লাস্টিক ব্যবহারকেও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ফেলেছেন। সেখানে নির্বাচনের মতো ব্যয়বহুল ও স্পর্শকাতর একটি আয়োজনকে ঘিরে নির্বাচন কমিশনের কোনো নীতিমালা তৈরি না করাটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ। প্রাণ প্রকৃতির প্রতি দায়বদ্ধ নাগরিক সমাজ রাষ্ট্রের এমন গুরুদায়িত্বে থাকা সংস্থার প্রতি ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ। তাই ২ হাজার ৪৭২ টন প্লাস্টিক ধ্বংসে এই প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগ আমরা জানতে চাই। ’

নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলামের সঙ্গে ফোরামের সংগঠক অনুপম দেবাশীষ রায়, আসিফ আদনান, আসিফ ইমরান, আরিফ সোহেল, নাহিদ, আরাফ আনিম ও মারুফ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) নামের একটি সংগঠন সম্প্রতি ঢাকা দুই সিটি ভোটের পোস্টার থেকে আড়াই হাজার টন বর্জ্য পাওয়া যাবে বলে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২০
ইইউডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।