ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

এক বছরে ইসির আয় ৩২ কোটি টাকা, জমা পড়েছে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৮ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২০
এক বছরে ইসির আয় ৩২ কোটি টাকা, জমা পড়েছে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে

ঢাকা: সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) যাচাইসহ বিভিন্ন সেবা দিয়ে গত এক বছরে ৩২ কোটি টাকার বেশি আয় করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ আয়ের পুরোটাই রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মোবাইল অপারেটর, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নানা ধরনের প্রতিষ্ঠানকে এনআইডি যাচাই সংক্রান্ত সেবা দিয়ে থাকে নির্বাচন কমিশন। জাতীয় পরিচয়পত্র ও সংরক্ষিত তথ্য উপাত্ত প্রবিধানমালা অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠান এনআইডি সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করতে চাইলে প্রথমে এককালীন ৫ লাখ টাকা ফি দিয়ে নিবন্ধিত হতে হয়।

এরপর প্রতিটি তথ্য প্রতিবার যাচাইয়ের জন্য পরিশোধ করতে হয় ২ টাকা। বিল প্রাপ্তির ১০ দিনের মধ্যে নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ না করলে মোট বিলের অতিরিক্ত ০.৫ শতাংশ বিলম্ব ফি দেওয়ার বিধান রয়েছে। তবে সরকারি বা সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের জন্য নিবন্ধন ফি ৫ লাখ টাকা হলেও বার্ষিক চার্জ বা নবায়ন চার্জ ১ লাখ টাকা। অন্যদিকে প্রতি তথ্য প্রতিবার যাচাইয়ের ক্ষেত্রে তাদের জন্য ফি ধরা হয়েছে ১ টাকা।

এছাড়া কারো এনআইডি হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হলে পুনর্ত্তোলন, সংশোধন, ঠিকানা স্থানান্তর সংক্রান্ত সেবার বিনিময়েও আইন নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করতে হয় নাগরিকদের। এক্ষেত্রে সেবার ধরন অনুযায়ী ১শ’ থেকে ১ হাজার টাকা পরিশোধের বিধান রয়েছে। এসব সেবার বিপরীতে ব্যাংকের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন সচিবের অনুকূলে অর্থ পরিশোধ করতে হয়।

ইসির এনআইডি অনুবিভাগের কমিউনিকেশন শাখার অফিসার ইনচার্জ স্কোয়াড্রন লিডার কাজী আশিকুজ্জামান জানান, গত এক বছরে এনআইডি যাচাই, এককালীন, নবায়ন, সাব-ইউজার চার্জ ও এনআইডি ফি থেকে ইসির মোট আয় হয়েছে ৩২ কোটি ৪৮ লাখ ৭৫ হাজার ৫৩৩ টাকা। সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে এনআইডি যাচাই থেকে। এ খাত থেকে মোট আয় হয়েছে ১৯ কোটি ৯৫ লাখ ২৮ হাজার ৪৯২ টাক। এছাড়া এনআইডি সংশোধন, পুনর্ত্তোলন বাবদ আয় হয়েছে ১ কোটি ৬৫ লাখ ২৫ হাজার ৫৩৭ টাকা।

অন্যদিকে এনআইডি যাচাইয়ে ইসিকে সবচেয়ে বেশি আয় দিয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিকাশ। গ্রাহকের পরিচিতি যাচাইয়ে প্রতিষ্ঠানটি পরিশোধ করেছে ৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এরপরের অবস্থানে রয়েছে গ্রামীণ ফোন। এনআইডি যাচাই বাবদ এ মোবাইল অপারেটরটি ইসিকে পরিশোধ করেছে ৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এর বাইরে ৩ কোটি ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে রবি আজিয়াটা, বাংলালিংক পরিশোধ করেছে ২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান টেলিটক পরিশোধ করেছে ১ কোটি টাকা।

এদিকে ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এনআইডি যাচাই ও অর্থ পরিশোধ করেছে ডাচ বাংলা ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটি ইসিকে ৬২ লাখ টাকা দিয়েছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর মধ্যে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ ১১ লাখ ২৯ হাজার টাকা, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ২৫ হাজার টাকা, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ৭ হাজার টাকা ও এসআইবি এনআইডি যাচাইয়ের বিপরীতে ২৭ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে ইসিকে।

বর্তমানে ইসির সার্ভারে ১১ কোটি নাগরিকের তথ্য সংরক্ষিত আছে। এখান থেকে ব্যক্তির পরিচয় যাচাইয়ের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় আর্থিক জালিয়াতি, বয়স জালিয়াতি, ভূমি জালিয়াতিসহ নানা ধরনের অপরাধ কমে গিয়েছে। এছাড়া অপরাধী শনাক্তকরণও আগের চেয়ে সহজ হয়ে গেছে। সহজেই পরিচয় মিলছে বেওয়ারিশ অনেক মরদেহেরও।

২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বরের পর থেকে এনআইডি সংক্রান্ত সেবার বিপরীতে অর্থ পরিশোধের আইন কার্যকর করে ইসি। এক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠান সেবা নেওয়ার আগে ইসির সঙ্গে চুক্তি করতে হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২০ 
ইইউডি/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।