ঢাকা: নানা পরিকল্পনা নিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না দ্বৈত ভোটার হওয়ার প্রবণতা। অনেকেই নানা পন্থায় দ্বিতীয়বার ভোটার হওয়ার ‘অপরাধ’ করছেন।
সূত্রগুলো জানিয়েছেন, বর্তমানে দ্বৈত ভোটার হওয়ার সংখ্যা ৯শ ৩৭ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৭ জন। ইতোমধ্যে মামলা দেওয়া হয়েছে ৫শ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে। আরও ২শ জনের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। গত ১০ বছরে প্রায় ১০ লাখ নাগরিক দ্বৈত ভোটার হওয়ার চেষ্টা করেছেন।
সূত্রগুলো বলছে, করোনা কেলেঙ্গারিতে জড়িত ডা. সাবরিনা ও শাহেদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতির পর নড়েচড়ে বসে ইসি। সে সময় নির্বাচন কমিশনকে বেশ বিব্রতকর অবস্থাতেও পড়তে হয়। তাই ভবিষ্যতে কেউ যেন কোনোভাবেই এনআইডি জালিয়াতি বা মিথ্যা দিয়ে একাধিকবার ভোটার হয়ে একাধিক এনআইডি নিতে না পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে চায় ইসি। তাই দ্বৈত ভোটার হওয়া যে ফৌজদারী অপরাধ, সে বিষয়টিও ব্যাপক প্রচারণায় আনতে চায় সংস্থাটি।
ইসির মাসিক সমন্বয় সভায় কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, দ্বৈত ভোটার হওয়া রোধে প্রচারণা নিয়ে পরিচালক (জনসংযোগে) এসএম আসাদুজ্জমানা বলেছেন, দ্বৈত ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে দণ্ডসমূহ ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারের বিষয়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ বিষয়টি সারা বছরব্যাপী চলবে নাকি বিশেষ সময়ে শুধু ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় চলবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে সভায় এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, এই প্রচারণা শুধু টিভি চ্যানেলে নয়, এর পাশাপাশি বিভিন্ন উপায়ে দণ্ড উল্লেখ করে লিফলেট, ব্যানারের মাধ্যমে প্রচারণা করতে হবে এবং জেলা ও উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভার আলোচ্য বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে ডিওলেটার দেওয়া যেতে পারে।
ইসির তৎকালীন সচিব মো. আলমগীরের গত ৩১ জানুয়ারি স্বাক্ষরিত কার্যবিবরণীতে এ নিয়ে সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে জেলা ও উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় দ্বৈত ভোটার হওয়ার শাস্তির বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে পত্রের মাধ্যমে নির্দেশনা পাঠানোর জন্য এনআইডি অণুবিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রচারণার বিষয়ে জাতীয় এবং স্থানীয় পর্যায়ে ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় এবং স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সম্পৃক্ত করে সারা বছর প্রচারণা কার্যক্রম চালানোর জন্য জনসংযোগ শাখাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচন অফিসসমূহ থেকে লিফলেট বিতরণ ও স্থায়ীভাবে ব্যানার স্থাপনের সিদ্ধান্তও হয়েছে।
ভোটার আইন-২০০৯ এর ১৮ ধারা অনুযায়ী-তথ্য গোপন ও তথ্য গোপন করে দুইবার ভোটার হওয়া ফৌজদার অপরাধ। আইনে এ অপরাধের জন্য ছয়মাসের কারাদণ্ড বা দুই হাজার টাকার জরিমান অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, অনেকেই না বুঝে দুইবার ভোটার হন। সরল বিশ্বাসে যারা এই অপরাধটি করেন, তাদের এতদিন ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভবিষ্যতে এ সুযোগ হয়তো থাকবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১
ইইউডি/এএটি