ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সংরক্ষিত প্রতীকগুলো থেকে তিনটি প্রতীক বাদ দিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফলে বর্তমানে প্রতীক সংখ্যা দাঁড়ালো ৬১টিতে।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান জানান, তিনটি দলের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায়, বিধিমালা সংশোধন করে ওই তিন দলের প্রতীক বাদ দেওয়া হয়েছে।
বাদ যাওয়া প্রতীক তিনটি হলো- কাজী জাফর আহমেদের দল ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলনের ‘চাবি’, শফিউল আলম প্রধানের দল জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার ‘হুক্কা’ ও ফেরদৌস আহমেদ কোরেশীর দল প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির ‘বাঘা’ মার্কা।
ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা থেকে জানা গেছে, ২০০৮ সালে নিবন্ধন পাওয়া দল ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১৮ সালের অক্টোবরে নিবন্ধন হারায়।
জাগপাও শর্ত পূরণ করতে না পারায় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিবন্ধন হারায়। অন্যদিকে এক এগারো সরকারের সময় বহুল আলোচিত দল প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি ২০২০ সালের ডিসেম্বরে একই কারণে নিবন্ধন হারায়।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন পাওয়ার পূর্ব শর্ত হচ্ছে- এক তৃতীয়াংশ জেলা, ১০০ উপজেলা অথবা থানা কমিটি ও অফিস থাকতে হবে। এছাড়া প্রতিটি কমিটিতে অন্তত ২০০ ভোটার সমর্থক থাকতে হবে। তিনটি দলই নিবন্ধন পাওয়ার পর এই শর্ত পূরণ করতে পারেনি।
২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের পূর্বে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় ১৪১টি প্রতীক সংরক্ষণ করে। এগুলোর মধ্যে নিবন্ধিত ৪০টি দলের জন্য ৪০টি, ১০০টি প্রতীক স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য এবং ১ টি ‘না’ ভোটের জন্য।
পরবর্তী সময়ে সেই বিধিমালা কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৭ সালে সংশোধন করে ৬৪টি প্রতীক সংরক্ষণ করে। সেই সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বাদ দেওয়া হয়। সেই তালিকা থেকেও বিধিমালা পুনরায় সংশোধন করে আরও তিনটি প্রতীক বাদ দেওয়া হলো।
বর্তমানে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৩৯টি। অর্থাৎ অন্য ২২টি প্রতীক থাকলো স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য। সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা অনুযায়ী, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা দলের প্রতীক ব্যতিত অন্য প্রতীক থেকে নিজের পছন্দেরটা চাইতে পারবেন। কোনো প্রতীক একাধিক প্রার্থী চাইলে লটারির মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্ধারণ করবেন। তবে ওই সংশ্লিষ্ট স্বতন্ত্র প্রার্থী আগেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কোনো প্রতীকে যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, অন্য কেউ আগেই সেটা না নিলে তিনি ওই প্রতীকই পাবেন। আবার সংরিক্ষত প্রতীকের তালিকায় উল্লিখিত ২২টি প্রতীকের চেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী বেশি হলে রিটার্নিং অফিসার তাৎক্ষণিক কোনো প্রতীক নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের বরাদ্দ করতে পারবেন।
ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার স্বাক্ষরিত বিধিমালার সর্বশেষ সংশোধন অনুযায়ী যে প্রতীকগুলো সংসদ নির্বাচনের জন্য সংরক্ষণ করা হলো সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- আপেল, বেলুন, মই, আম, উদীয়মান সূর্য, একতারা, চেয়ার, ছড়ি, ছাতা, ট্রাক, টেলিভিশন, মটরগাড়ি (কার), মশাল, মাছ, মাথাল, কলার ছড়ি, ডাব, কাঁঠাল, তবলা, তারা, কাস্তে, কুমির, কুলা, কুড়াল, কুঁড়ে ঘর, মিনার, মোমবাতি, রকেট, রিকশা, লাঙ্গল, কোদাল, খাট, খেজুর গাছ, গরুর গাড়ি, গাভী, গামছা, গোলাপ ফুল, ঘণ্টা, তরমুজ, দাবাবোর্ড, দালান, দেওয়াল ঘড়ি, ধানের শীষ, নোঙ্গর, নৌকা, ফুলকপি, ফুলের মালা, বটগাছ, বাই-সাইকেল, বাঁশি, বেঞ্চ, শঙ্খ, সিংহ, স্যুটকেস, হাত (পাঞ্জা), হাত ঘড়ি, হাত পাখা, হাতুড়ি, হারিকেন ও চাকা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২১
ইইউডি/এইচএডি/