সিলেট: আজ ভোট উৎসবে মাতবেন দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ নিয়ে গঠিত সিলেট-৩ আসনের বাসিন্দারা।
শনিবার (০৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
এরইমধ্যে ভোটের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটের সরঞ্জাম নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ কেন্দ্রে পৌঁছেছেন প্রিসাইডিং অফিসারসহ নির্বাচনী কর্মকর্তারা। নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হয়, সে জন্য প্রায় ২ সহস্রাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে নির্বাচনী এলাকায়।
নির্বাচনে ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন চার প্রার্থী। তারা হলেন-আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী হাবিবুর রহমান, জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান লাঙল প্রতীকে, বিএনপি থেকে বহিস্কৃত শফি আহমদ চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মোটর কার মার্কায় এবং কংগ্রেসের প্রার্থী জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া দলীয় প্রতীক ডাব মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নৌকার মাঝি হাবিবুর রহমানকে দিয়ে আওয়ামী লীগ আসনটিতে বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চায়। পক্ষান্তরে জাতীয় পার্টি আতিকুর রহমানের হাতে লাঙলের খুঁটি ধরিয়ে হারানো আসনটি পূণরুদ্ধার করতে চায়। অন্যদিকে, মোটর কার চালিয়ে আবারো সংসদ সদস্য হতে চান দলছুট (বিএনপি থেকে বহিস্কৃত) শফি আহমদ চৌধুরী। আর কংগ্রেস মনোনীত জুনায়েদ মোহাম্মদ আশাবাদি ভাল কিছু করার।
এরইমধ্যে নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে প্রচারণার সমাপ্তি টেনেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়া উদ্দিন বাবলু। প্রচারযুদ্ধের পর এবার ভোটের চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষণ তথা হিসাব-নিকাশের পালা। এ আসন থেকে বিজয়ী হয়ে কে যাচ্ছেন সংসদে? এমন কৌতুহল রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে আমজনতার দুয়ারেও।
নির্বাচনী এলাকার লোকজনের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, নির্বাচনী মাঠে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকবে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি প্রার্থী। তবে দলের প্রার্থী না বিএনপির সাপোর্টার ভোট ‘নিরব’ বিপ্লব ঘটাতে পারে।
দলীয়ভাবে বিএনপি অংশ না নিলেও সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচনকে ঘিরে শুরু থেকেই উত্তাপের কমতি ছিল না। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতাদের অংশগ্রহণ নির্বাচনী প্রচারণায় নতুন মাত্রা যোগ করেছিল।
হাবিবুর রহমান হাবিবের পক্ষে প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের প্রায় দুই ডজন নেতা ব্যাপক প্রচারণা চালান। বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত তারা নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেন।
অন্যদিকে, স্থানীয় নেতাদের উপর ভর করে প্রচারণা চালিয়ে যান জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক। শেষমেশ তার পক্ষে মাঠে নামেন কেন্দ্রীয় মহাসচিব জিয়া উদ্দিন বাবলু। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি সিলেট এসে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রচারণা চালিয়ে যান। সিলেটকে এরশাদের দ্বিতীয় বাড়ি উল্লেখ করে এ আসনে ভোটারদের কাছে লাঙল প্রতীকের সমর্থনে আবেগ জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। ফলে লাঙলের প্রার্থীর শক্ত অবস্থান তৈরি হয়েছে মনে করেন স্থানীয়রা। জাপার নেতাকর্মীর মতে, যদি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়, তাহলে লাঙলের বিজয় আটকানো যাবো না।
এদিকে, দল থেকে বহিস্কৃত শফি আহমেদ চৌধুরী বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সমর্থনে বিজয়ের আশা দেখছেন। যদিও বিএনপির নেতাকর্মীদের কেন্দ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে দল থেকে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ২ সদস্যবিশিষ্টি একটি ‘নির্বাচনী তদন্ত কমিটি’ গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন। আসনটির ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ৩ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ দিয়েছে ইসি। তাঁরা নির্বাচনের দিন ছাড়াও পরের দুইদিন পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন।
সিলেট-৩ আসনে রিটানিং কর্মকর্তার দফতর সূত্র জানায়, নির্বাচনে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ৩ জন বিচারিক ও ২৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনী মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১
এনইউ/কেএআর