ঢাকা: আসন্ন ১৬১টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ পরিচালনার জন্য ৫৭ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটের আগে ও পরে পাঁচদিনের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন তারা।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়কে জুড়িসিয়াল সার্ভিস থেকে ৫৭ কর্মকর্তাকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
আগামী ২০ সেপ্টেম্বর দেশের ছয়টি জেলার ১৬১ ইউপিতে ভোটগ্রহণ হবে। এসব ইউপির ভোট প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনের (২১ জুন) সঙ্গে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সীমান্তবর্তী এসব জেলায় করোনা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের সুপারিশে নির্বাচন স্থগিত করে ইসি।
পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় গত ০২ সেপ্টেম্বর নতুন করে ভোটের তারিখ দেয় সংস্থাটি। যার পরিপ্রেক্ষিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগসহ বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদেরও নিয়োগ দিচ্ছে ইসি। ইতোমধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের মাঠে নিয়োগ করা হয়েছে। যারা নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করার দায়িত্ব পালন করছেন।
বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা ভোটের ফোজদারি অপরাধসহ বিভিন্ন অপরাধের সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ পরিচালনা করে থাকেন।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের কাছে সম্প্রতি বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের চিঠি পাঠিয়েছেন ইসির আইন শাখার উপ-সচিব আফরোজা শিউলি।
এতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ধারা ২০ এবং স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০-এর বিধি ১০ অনুসারে গত ০২ সেপ্টেম্বর স্থগিতকৃত ১ম ধাপের ৩৭১টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ১৬১টি ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য ও সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে নির্বাচনের উদ্দেশ্যে পুনঃতফসিল ঘোষণা করেছেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২০ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০-এর বিধি ৮৬ তে উল্লিখিত বিধি ৭২, বিধি ৭৪, বিধি ৭৫, বিধি ৭৬, বিধি ৭৭-এর উপবিধি(১) ও বিধি ৭৮-এর অধীন নির্বাচনি অপরাধসমূহ ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮ (অ্যাক্ট নম্বর পাঁচ)’ এর ১৯০ ধারার অধীনে আমলে নেওয়া ও তা সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচারের নিমিত্ত প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা সম্পন্ন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা আবশ্যক।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠান উপলক্ষে নির্বাচনকালীন সংঘটিত অপরাধসমূহ আমলে নেয়া ও সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচার সম্পন্নের নিমিত্তে ভোটগ্রহণের পূর্বের দু’দিন, ভোটগ্রহণের দিন ও ভোটগ্রহণের পরের দু’দিন অর্থাৎ ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট পাঁচ দিনের জন্য ৫৭ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গৃহীত হয়েছে।
ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫৭ জন জুডিসিয়াল সার্ভিসের কর্মকর্তাকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
ইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি তিন ইউপির জন্য একজন করে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। তবে কোনো কোনো উপজেলায় প্রতি চার ইউপির জন্যও একজন করে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। এসব কর্মকর্তার ভোটের দায়িত্বকে বিচারিক দায়িত্ব হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।
১৬১ ইউপির তালিকা দেখতে ক্লিক করুন
বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২১
ইইউডি/এমজেএফ