ঢাকা: আসন্ন ১৬১টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে কেন্দ্র প্রতি মোতায়েন থাকবে পুলিশ, আনসারের ২২ জনের ফোর্স। এদের মধ্যে ১৫ জনের সঙ্গে থাকবে লাঠি।
ভোটের আগে দু’দিন, ভোটের দিন ও পরের দিনসহ মোট চার দিনের জন্য তারা নিয়োজিত থাকবেন। একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ের এ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়েও তিনজন বেশি আইন-শৃঙ্খলা সদস্য নিয়োজিত রাখা হচ্ছে।
আগামী ২০ সেপ্টেম্বর দেশের ছয়টি জেলার বিভিন্ন ইউপিতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় প্রশাসনের চাহিদার ভিত্তিতে নোয়াখালী ও কক্সবাজারে পরিকল্পনা চেয়েও অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হচ্ছে।
ইসি নির্দেশিত ছক অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পরিপত্রে বলা হয়েছে, ভোটকেন্দ্র ছাড়াও নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ডের মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। এক্ষেত্রে প্রতি ইউপিতে পুলিশ, এপিবিএন, আনসারের সমন্বয়ে একটি ১৬১টি মোবাইল ফোর্স, তিনটি ইউপির জন্য একটি করে মোট ৫৩টি স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন থাকবে।
এদিকে প্রতি উপজেলায় র্যাবের দু’টি করে মোবাইল ও একটি করে স্ট্রাইকিং টিম, প্রতিটি উপজেলায় বিজিবির দুই প্লাটুন সদস্য মোবাইল টিম ও এক প্লাটুন থাকবে স্ট্রাইটিং টিম হিসেবে। আর কোস্টগার্ডও নিয়োজিত থাকবে বিজিবি মোতায়েনের ছক অনুযায়ী।
তবে ইসির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা থেকে জানা গেছে, নোয়াখালীর হাতিয়ার সাতটি ইউপিতে র্যাবের পাঁচটি টিম, ছয় প্লাটুন কোস্টগার্ড অতিরিক্ত মোতায়েন থাকবে। আবার সুবর্ণচরের ছয়টি ইউপিতে র্যাব ও বিজিবির অতিরিক্ত চারটি করে টিম মোতায়েন থাকবে।
এদিকে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউপিতে অতিরিক্ত দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। এছাড়া পুলিশের একটি স্ট্রাইকিং টিম, প্রতি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে পুলিশের একটি মোবাইল টিম ও র্যাবের স্ট্রাইকিং টিম অতিরিক্ত হিসেবে মোতায়েন থাকবে।
এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিযোগ
ইউনিয়ন পরিষদ সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পরদিন থেকে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি উপজেলায় একজন এবং ভোটগ্রহণের আগের দু’দিন, ভোটগ্রহণের দিন ও ভোটগ্রহণের পরের দিন অর্থাৎ মোট চার দিনের জন্য প্রতি ইউনিয়নে কমপক্ষে একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ থাকবে।
জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ২০১০ এর বিধি-৮৬ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী এলাকায় বিধি-৭২, ৭৪, ৭৫, ৭৬, বিধি-৭৭ এর উপ-বিধি (১) এবং বিধি-৭৮ এর অধীন নির্বাচনী অপরাধসমূহ সংক্ষিপ্ত বিচার সংক্রান্ত বিধানাবলী অনুযায়ী ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা-১৯০ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন বিচারার্থে আমলে নেওয়ার জন্য প্রতিটি উপজেলায় একজন করে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করতে হবে।
ভোটগ্রহণের আগের দু’দিন, ভোটগ্রহণের দিন ও ভোটগ্রহণের পরের দিন অর্থাৎ মোট চার দিন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করবেন।
নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ
নির্বাচন কেন্দ্রের নিরাপত্তা বিধানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগের দায়িত্বে থাকবেন রিটার্নিং অফিসার। তবে নির্বাচনী এলাকায় মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োগে সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার ও রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে এ সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবেন। পুলিশ সুপাররা নির্বাচনের তিন দিন আগে কর্মপরিকল্পনার একটি কপি জননিরাপত্তা বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনে ফ্যাক্স/ই-মেইল/ইন্টারনেট বা বিশেষ দূত মারফত পাঠাবেন।
মনিটরিং সেল
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবলোকনের জন্য নির্বাচনের পাঁচ দিন আগ থেকে মনিটরিং সেল স্থাপন করতে হবে, যা নির্বাচনের পরেও দু’দিন চালু থাকবে। এ সেল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে এবং প্রাপ্ত তথ্য/উপাত্ত রিটার্নিং অফিসারসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবে।
আইন-শৃঙ্খলাসহ সার্বিক সমন্বয় সাধন
সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সব রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধিরাসহ অন্যান্য সব কর্মকর্তাদের নিয়ে এক বা একাধিক বৈঠকের আয়োজন করবেন এবং নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনাপূর্বক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা স্ব স্ব পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ/ফোর্সের মধ্যে সমন্বয় সাধন করবেন।
গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত ২০৪টি ইউপি ভোটের সঙ্গে এ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার প্রকোপ বাড়ায় নির্বাচন স্থগিত রাখে ইসি। বর্তমানে পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় নতুন করে ভোটের তারিখ দিয়েছে সংস্থাটি।
১৬১ ইউপির তালিকা দেখতে ক্লিক করুন:
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১
ইইউডি/আরবি