মেহেরপুর: প্রশাসন, সাংবাদিক ও সাধারণ ভোটারদের দৃষ্টি ছিল কাথুলি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে আলোচিত লক্ষ্মীনারায়ণপুর ধলা (মাইলমারী-ধলা) গ্রামের সেই ভোট কেন্দ্রটিতে।
নির্বাচনকে ঘিরে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দুই মেম্বর প্রার্থী উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেম্বার আতিয়ার রহমান ও বর্তমান মেম্বার আজমাইন হোসেন টুটুলের মধ্যে সহিংসতায় দুই ভাই নিহত হওয়ার দু’দিন পরেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ ইউনিয়নের নির্বাচন।
নিহতরা হলেন- মেম্বার টুটুলের ভাই সাহাদুল ইসলাম ও জাহারুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) সকাল থেকেই লক্ষ্মীনারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে নারী ভোটারদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে, খণ্ড খণ্ড আকারে আসছে পুরুষ ভোটারও।
হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেওয়া সাবেক মেম্বর আতিয়ার রহমানকে পাওয়া যায়নি। তবে বর্তমান মেম্বার টুটুলকে ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে দেখা যায়।
ভোট কেন্দ্রে বসেই টুটুল বলেন, ‘ভোট কেন্দ্রে কেউ এলে তাকে জাহারুল সাহাদুলের মতই প্রাণ দিতে হবে। ’ বুধবার (১০ নভেম্বর) রাতে এমন একটি তথ্যে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় প্রশাসন রাত থেকেই ভোট কেন্দ্র এবং গ্রামে অবস্থান নেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নারী ভোটাররা আসতে থাকেন এবং বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষ ভোটাররাও এসে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
গত সোমবার (০৮ নভেম্বর) নির্বাচনী সহিংসতায় লক্ষ্মীনারায়ণপুর ধলা গ্রামে দুই ভাই নিহত হওয়ার পর থেকেই গ্রামটি ছিল পুরুষ শূন্য।
তবে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকেই ভোটার উপস্থিতি বাড়তে থাকে। লক্ষ্মীনারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৪২২ জন। পুরুষ ভোটার ৬৭৮ এবং নারী ৭৪৪ জন।
সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটাররা ভোট দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রটির প্রিজাইডিং অফিসার মহাসিন আলী।
জানা যায়, ৮ নভেম্বর রোববার সকালে কাথুলি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আজমাইন হোসেন টুটুল পশ্চিমপাড়া এলাকায় ভোট চাইতে যান। ফিরে আসার পথে প্রতিপক্ষ মেম্বার প্রার্থী আতিয়ার রহমানসহ তার ভাই মহব্বত আলীর নেতৃত্বে আরও কয়েকজন তাকে ধরে নিয়ে মাঠের মধ্যে নিয়ে আজমাইন হোসেন টুটুলকে কুপিয়ে আহত করেন।
খবর পেয়ে অপর ভাই সাহাদুল ও জাহারুল তাকে বাঁচাতে ছুটে যান। সেখানেই তাদের দুই ভাইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে প্রতিপক্ষের লোকজন। তাদের উদ্ধার করতে গেলে আরও ১৫-২০ জনকে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়।
আতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে নিহতদের অন্য ভাই এনামুল ইসলাম নইলুকে ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই মাইলমারী গ্রামের রাস্তার ওপর রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়া ২০০৯ সালে অপর ভাই সেন্টু হোসেনকে সালিশ বৈঠক চলাকালে কুপিয়ে হত্যা করে। মেম্বার প্রার্থী হলে আজমাইন হোসেন টুটুলকে ও হত্যা করার আগাম হুমকি দিয়েছিল আতিয়ার রহমান। সাহাদুল ও জাহারুল জোড়া খুনের ঘটনার মধ্যে দিয়ে সে হুমকি বাস্তবায়ন করা হয়।
গাংনীতে নির্বাচনী সহিংসতায় দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা
দুই ভাইকে হত্যা: পুরুষশূন্য পুরো গ্রাম
গাংনীর জোড়া খুনের ঘটনায় মামলা
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০২১
এসআরএস