ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

‘একশ মানুষ একত্র হলে সহিংসতা হওয়া স্বাভাবিক’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২১
‘একশ মানুষ একত্র হলে সহিংসতা হওয়া স্বাভাবিক’ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার

ঢাকা: নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেছেন, একশ মানুষ একসঙ্গে হলে ধাক্কাধাক্কি হয়। সেখান থেকেই সহিংসতা হয়।

এটাই স্বাভাবিক। তৃতীয় ধাপের ভোটে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। তাই এটি মডেল নির্বাচন হয়েছে।

রোববার (২৮ নভেম্বর) তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও অষ্টম ধাপের পৌরসভা নির্বাচন শেষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ইসি সচিব বলেন, রোববার ৯৮৬টি ইউপিতে নির্বাচন হয়েছে। সামান্য কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রিজাইডিং কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ২১ কেন্দ্রের নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ৯ হাজার ৮৭৩টি। এর মধ্যে যদি ২১টি বন্ধ করা হয়, যদি আমরা পারসেন্টেজ করি, তাহলে সেটা হয় শূন্য দশমকি ২১ শতাংশ।

তিনি বলেন, ইভিএমের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৫৮ শতাংশ পৌরসভায় এবং ইউনিয়ন পরিষদে ৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। মোট ভোট কাস্ট হবে ৭০ শতাংশেরও বেশি।

তিনি আরও বলেন, সারাদেশ আমরা টিভির মাধ্যমে মনিটর করেছি। আমাদের যে মনিটরিং সেল আছে, জেলা পর্যায় থেকে যে তথ্য পেয়েছি, তাতে আমরা দেখেছি উৎসবমুখর পরিবেশে  ৯৮৬টি ইউপি ও ৯টি পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ইসি সচিব বলেন, পুরো ইউনিয়ন একটাও বন্ধ হয়নি। আহত হওয়ার বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে। আমরা দেখেছি যে, সেখানে কেন্দ্রের বাইরে ২৪ জন আহত হয়েছেন এবং নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।

লক্ষ্মীপুরে এক টিভি সাংবাদিকের ওপর হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে যখনই কোনো ঘটনা ঘটে যায়, হঠাৎ করেই হয়। এটি আমাদের জানানো হয়েছে। আমরা জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। তিনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন। ক্যামেরাটি উদ্ধারের জন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এছাড়া যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তথ্যের গড়মিল থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রামের রাউজানের ১৪ ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সব প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। তাই ৯৮৬টিতে নির্বাচন হয়েছে। অন্যগুলো করতে হয়নি।

ইসি সচিব বলেন, আইনগত জটিলতা ন্যূনতম থাকলেও সেটা বিবেচনায় নেওয়া হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া তালিকা এবং তরা কতটিতে ভোট করতে সক্ষম, এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ইউপির সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়।

সহিংস ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, একটা জিনিস মনে রাখতে হবে যে, ইউপি নির্বাচন একদম তৃণমূল পর্যায়ের নির্বাচন। এটি প্রতিটি ঘরেঘরে, প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় নির্বাচন হয়। আপনারা দেখবেন ১০ জন বা একশ মানুষ একসঙ্গে হলে, ধাক্কাধাক্কি হয়, তাই না? এটা খুবই স্বাভাবিক এবং সেখান থেকেই কিছু সহিংসতা ঘটে থাকে।

আপনারা দেখে থাকবেন টিভি রিপোর্টগুলো আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি, এবার ২৪ জন আহত হয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল। যদিও এগুলো কেন্দ্রের বাইরে ঘটেছে, কিন্তু ঘটেছে। কিন্তু এবার আমরা মনে করি একটি জীবনকেও হারাতে হয়নি। আমরা মনে করি ইসি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ভাল কাজ করেছেন। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা কিছুটা হলেও সহনশীল ছিলেন। এটি যদি সবাই থাকেন, আপনারা যে প্রত্যাশা করেছেন যে সহিংসতা মুক্ত নির্বাচন দেখবো কি-না, আমি তো মনে করি রোববার যে নির্বাচন হয়েছে, এটি মডেল হতে পারে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইসি প্রত্যাশা করে সহিংসতার একটি ঘটনাও যেন না হয়। আমরা এ লক্ষ্যে কাজ করছি।

ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল ইলেকশন করাই ইসির প্রত্যাশা। এটি করার জন্যই ইসি কাজ করে যান। যেটি আমি বলেছি- প্রার্থী ও তাদের অনুসারীরা যদি অতি আবেগী হয়ে না যান, যে কোনোভাবে বিজয় অর্জন করতেই হবে- এ ধরনের মনোভাব যদি তারা পোষণ না করেন, তাহলে সহিংসতার ঘটনা ঘটবে না। রোববার যে নির্বাচন হয়েছে এটি একটি মডেল।

ভোটার উপস্থিতি ধরে রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা গত ধাপেও দেখেছি ৭০ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। আমরা এবার এর নিচে প্রত্যাশা করছি না। সুতরাং আমরা বলতে পারি ভাল এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়েছে।

বাংলদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২১
ইইউডি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।