ঢাকা: সদ্য অনুষ্ঠিত তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ১১৩ উপজেলার মধ্যে ৪৭টি উপজেলায় সুবিধা করতে পারেননি আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের চেয়ে ১৪০টি বেশি ইউপিতে জয় পেয়েছেন।
মাঠ পর্যায় থেকে পাঠানো ফলাফল একীভূত করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) যে প্রতিবেদন দিয়েছে তা বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ফলাফল একীভূত করেছেন ইসির উপ-সচিব মো. মিজানুর রহমান।
যেসব উপজেলায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা পিছিয়ে রয়েছেন, সেগুলো হলো- পঞ্চগড় সদর, দিনাজপুরের ফুলবাড়ী, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ, লালমনিরহাট সদর, কালিগঞ্জ, রংপুর সদর, তারাগঞ্জ, কুড়িগ্রামের নাগেরশ্বরী, কুড়িগ্রাম সদর, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, বগুড়ার ধুনট, বগুড়া সদর, নওগাঁর মান্দা, নাটোরের লালপুর, বাগাতিপারা, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর, মাগুরার মোহাম্মদপুর, নড়াইলের কালিয়া, সাতক্ষীরার দেবহাটা, কালিগঞ্জ, পিরোজপুরের কাওখালী, শেরপুরের নকলা, নালিতাবাড়ী, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা, নেত্রকোনার পূর্বধলা, কলমাকান্দা, কিশোরগঞ্জ সদর, মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী, গাজীপুরের কালিয়কৈর, নরসিংদীর রায়পুর, ফরিদপুরের ভাঙ্গা, চর ভদ্রাসন, সুনামগঞ্জ সদর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, সিলেটের জৈন্তাপুর, হবিগঞ্জের নবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল, নবীনগর, কুমিল্লার হোমনা, নোয়াখালীর সেনবাগ, কক্সবাজারের পেকুয়া, খাগড়ছড়ির দিঘিনালা ও মহালছড়ি।
এসব উপজেলায় মোট ৪০১টি ইউপিতে ভোট হয়েছে। এরমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ২৬০টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছেন। আর নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছেন ১২০টি ইউপিতে। ১২টি ইউপিতে জয় পেয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। তিনটি পেয়েছে অন্যান্য দলগুলো। আর ছয়টি ইউপির ফলাফল স্থগিত রয়েছে।
ইসির সমন্বিত ফলাফল থেকে আরও জানা যায়, ১৩টি উপজেলায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের সমান সংখ্যক চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। উপজেলাগুলো হলো- রংপুরের কাউনিয়া, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী, চাপাইনবাবগঞ্জের শীবগঞ্জ, মেহেরপুর সদর ও গাংনী, যশোরের শার্ষা, ময়মনসিংহের ত্রিশাল, টাঙ্গাইলের নাগরপুর, সিলেটের গোয়াইনঘাট, হবীগঞ্জ সদর, কুমিল্লার দাউদকান্দি, কক্সবাজারের চকরিয়া ও বান্দরবানের আলি কদম। এ ১৩ উপজেলায় মোট ১০৪টি ইউপিতে ভোট হয়েছে। এর মধ্যে ৫০টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ও ৫০টি ইউপিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছেন। দুটিতে জয় পেয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। আর দুটি ইউপির ফলাফল স্থগিত রয়েছে।
এদিকে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা, রাজশাহীর মোহনপুর, বরগুনার পাথরঘাটা, জামালপুরের মেলান্দহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার, ফেনীর পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার সবগুলো ইউপিতেই আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। অন্যদিকে ২০৩টি ইউপিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা দ্বিতীয় স্থানেও নেই।
তৃতীয় ধাপে গত ২৮ নভেম্বর দেশের ১ হাজার ৮টি ইউপিতে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও স্থগিত হয় ৭টি ইউপির নির্বাচন। ৯টি ইউপির বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত থাকায় ফল প্রকাশ হয়নি। ফলে ওইদিন নির্বাচন সম্পন্ন হয় ৯৯২টি ইউপিতে।
আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছে ৫২৫টি ইউপিতে, স্বতন্ত্র ৪৪৬টিতে ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা ১৭টিতে জয় পেয়েছেন।
এছাড়া ১টি করে ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৯৯ জন ও স্বতন্ত্র ১ জনসহ মোট ১০০ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তৃতীয় ধাপের ভোট পড়েছে ৭৪ দশমিক ২১ শতাংশ।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২১
ইইউডি/আরবি