নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপি ও দলের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত রয়েছেন। তবে, তারা এই নির্বাচনে অংশ নিতে চায় ঘরে ঘরে নেত্রীর মুক্তি ও সুচিকিৎসার আন্দোলনের বার্তা পৌঁছে দেবেন।
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা এ কথা জানান।
মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহেদ আহমেদ বলেন, আঞ্চলিক রাজনীতির অংশ হিসেবে যদি সিটি নির্বাচনে দল সুযোগ করে দেয় তাহলে নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনে মাঠে নামার নেতাকর্মীদের একটা সুযোগ হবে। যেহেতু নাসিক নির্বাচন ক্ষমতা পরিবর্তনের কোন নির্বাচন নয় এবং এই মুহূর্তে মাঠে থাকাটাই আমাদের নির্দেশনা তাই এই নির্বাচনকে ঘিরে আমরা আরও মানুষের কাছে যেতে পারবো এবং আমাদের সব বার্তা তাদের পৌঁছে দিতে পারবো। নেত্রীর মুক্তির আন্দোলন ত্বরান্বিত করতে এ নির্বাচন আমাদের একটি পথ হতে পারে।
তিনি বলেন, আমি চাই দল নির্বাচনে আসুক। সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য একজন প্রার্থীকে দিয়ে নির্বাচন করালে এবং ভোট যদি মানুষ দিতে পারে আমাদের জয় সুনিশ্চিত। এটি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনের শেষ নির্বাচন। তারা শেষ নির্বাচনেও যদি গণতন্ত্র হত্যার কফিনে আরেকটি প্যারেক ঠুকে দেয় মানুষকে ভোটের সুযোগ না দিতে। তবে, সেটিও নারায়ণগঞ্জবাসী দেখবে।
মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউসার আশা বলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল কিংবা অন্য কোন অঙ্গ সংগঠন এখন নির্বাচন নিয়ে ভাবছে না। আগে ম্যাডামের স্বাস্থ্য, তার সুচিকিৎসা, আমাদের চলমান আন্দোলন নিয়ে আমাদের ভাবনা। আমরা আমাদের দলীয় নির্দেশনা এখন মেনে চলছি আর এখন ম্যাডামের স্বাস্থ্যগত দিক, তার মুক্তি ও সুচিকিৎসায় চলমান আন্দোলনে সক্রিয় থাকতে আমাদের নির্দেশনা আছে। আমাদের এখন নিজেদের কাছে অসহায় মনে হয় কারণ আমরা ম্যাডামের স্বাস্থ্য নিয়ে কিছু করতে পারছি না, তার জন্য আমরা তেমন কিছু করতে পারিনি।
তিনি বলেন, দল যদি নির্বাচনে যায় তবে, অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, আবুল কালাম ও গিয়াসউদ্দিন এই তিনজনই হেভিওয়েট ক্যান্ডিডেট। জয়লাভ করার মত সক্ষমতা তাদের আছে। মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করলে ধানের শীষের বিজয় সব সময় সুনিশ্চিত।
মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল বলেন, নেত্রী এই মুহূর্তে মৃত্যুশয্যায় তাকে নিয়ে দল ও আমরা ব্যস্ত। তাকে নিয়ে চিন্তায় আছে সবাই। তবে দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এখন পর্যন্ত দল আমাদের কোন সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। দল যদি নির্বাচনে কৌশলগতভাবে অংশ নেয় তাহলে আমরা কাজ করবো।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিলে তার জন্য মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারসহ তার পক্ষে সবাই একযোগে কাজ করবেন বলেও প্রত্যাশা করেন। ইতোমধ্যে নাসিক নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল। তৈমুর আলম খন্দকার নিজেও নির্বাচনের ব্যাপারে ইচ্ছাপোষণ করেছেন। নির্বাচনে দল অংশ নিতে এটি অন্যরকম নির্বাচন হবে বলে প্রত্যাশা তার।
গত ৫ ডিসেম্বর মেয়র পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে দুই বিএনপি নেতা। তারা হলেন- নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল ও সিনিয়র সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে ভোটের মাত্র সাত ঘণ্টা আগে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার মেয়র পদ থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন।
আগামী ১৬ জানুয়ারি নাসিক নির্বাচনে ভোট গ্রহণ। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৫ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ২০ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ও প্রচারণা শুরু ২৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২১
এএটি