ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত তালিকাভুক্ত দুই মাদক বিক্রেতা নির্বাচনে লড়ছেন।
মাদক ব্যবসার পৃষ্ঠপোষক এই দুইজন হলেন- মো. আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া স্বপন ও মো. হান্নান মিয়া।
উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল ৭ ডিসেম্বর এই উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত সদস্য এবং সাধারণ সদস্য পদে ২৪৭ জন প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আখাউড়া উত্তর ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে মো. আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া স্বপন আনারস প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড থেকে মো. হান্নান মিয়া মেম্বার পদে ভ্যানগাড়ি প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২০১৮ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কয়েকজন অবৈধ মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারীদের পৃষ্ঠপোষক ও আশ্রয়-প্রশ্রয় দানকারীদের নামের তালিকা প্রকাশ করে। ওই তালিকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধির নাম উঠে আসে। এতে আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া স্বপন ও দক্ষিণ ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. হান্নান মিয়ার নাম ছিল। এই দুই জনপ্রতিনিধির নাম তালিকায় চলে আসার পর তাদের এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
এলাকাবাসী জানায়, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আজমপুর রেলস্টেশনের পাশে রেলওয়ের পাঁচ শতক পরিমাণ জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেন। এরপর থেকে সেই মার্কেটের দোকানঘরের ভাড়া তুলছেন তিনি। অবশ্য তার কবল থেকে রেলওয়ের এই জায়গাটি দখলমুক্ত করতে রেল মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসার আরেক পৃষ্ঠপোষক দক্ষিণ ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী নুরপুর গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মো. হান্নান মিয়ার নামে রয়েছে মাদক চোরাচালান ও প্রতারণার মামলা। গত ২০১৮ সালের ১১ মার্চ মাদক চোরাচালানের মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় হান্নান তার পরিবর্ততে পার্শ্ববর্তী ছোট-কুড়িপাইকা গ্রামের বাসিন্দা গরীব রিক্সাচালক সেলিম মিয়াকে অর্থের লোভ দেখিয়ে হান্নান সাজিয়ে আদালতে হাজিরা দিতে পাঠান। এরপর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া স্বপনের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে অনেকে অনেক রকম কথা বলতেছে। আমার জানামতে আমি মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান করছি, ২০০ লোক সারেন্ডার করাইছি। প্রশাসনের সবাই জানে আমি কি করি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলেন আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।
রেলের জায়গা দখল করে মার্কেটের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি যেহেতু চেয়ারম্যান আমার ভাই-বেরাদর পূর্ব থেকেই এখানে আছে। আজমপুর রেলের জায়গায় দুইটা দোকান ছাড়া প্রায় ৩০০ দোকান কাগজ ছাড়া। এগুলোকে বৈধ করতে আমরা এপ্লিকেশন দিছি, করোনার জন্য তা স্থগিত আছে। রেলমন্ত্রী যখন আসছিল, আমরা স্মারকলিপি দিয়ে বলছি, রেলের যখন প্রয়োজন হবে তখন এগুলো ছেড়ে দেয়া হবে।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী হান্নান মিয়ার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২১
এনটি